নিজস্ব সংবাদদাতা: বৃহস্পতিবার এক লাফে ৭জন করোনা পজিটিভ ধরা পড়ল পশ্চিম মেদিনীপুরে আর এর মধ্যে ৬ জনই খড়গপুর শহরের রেল সুরক্ষা বাহিনীর জওয়ান বা আরপিএফ। এরই সাথে উলুবেড়িয়া ও সাঁতরাগাছির দুই আরপিএফ জওয়ানও কোভিড পজিটিভ ধরা পড়ায় মোট আটজন করোনা আক্রান্ত হলেন। এরসঙ্গে এই দলেরই এক জওয়ান আগেই করোনা পজিটিভ হয়ে কটকের অশ্বিনী হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। সব মিলিয়ে দক্ষিন পুর্ব রেলের খড়গপুর ডিভিশনের মোট ৯ জন রেল সুরক্ষা বাহিনীর জওয়ান কোভিড-১৯ পজিটিভ হওয়ায় রীতিমত উদ্বেগে খড়গপুর রেলের আধিকারিক ও কর্মীরা কারন এই আর পি এফ জওয়ানরা আরও কার কার সঙ্গে মিশেছিলেন তা খুঁজতে কালঘাম ছুটছে তাঁদের। ইতিমধ্যেই আরও ১৯ জন কোয়ারেন্টাইনে ছিল আর এই ঘটনা সামনে আসায় আরও ৩৫ অর্থাৎ মোট ৫৪ জনকে কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে বলে রেল সূত্রে জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য মোট ২৭ জন জওয়ান ও আধিকারিক মিলে দিল্লি ও রাজস্থানে গিয়েছিলেন খড়গপুর আরপিএফের জোনাল ট্রেনিং সেন্টারের জন্য। ওই দল লকডাউনে আটকে পড়েন দিল্লিতে। এই জওয়ানরা আর পি এফের স্পেশাল ফোর্স নামে পরিচিত। লকডাউন চলাকালীন কেন্দ্র রেলের পন্য পরিবহন চালানোর সিদ্ধান্ত নিলে ওই দলটি রেলের আইজির অনুমতি স্বাপেক্ষে একটি পার্সেল ভ্যানে অস্ত্র সমেত ১৪ তারিখ ফিরে আসেন। আসার পরই তাদের কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয় নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে।
এরমধ্যে মঙ্গলবার বালেশ্বরে এক জওয়নের করোনা পজিটিভ ধরা পড়লে তাঁকে কটকের অশ্বিনী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মোট ১৮জন খড়গপুরে কোয়ারেন্টাইনে ছিলেন যার মধ্যে ৬ জনের পজিটিভ ধরা পড়ে বৃহস্পতিবারই। এই একই সময়ে সাঁতরাগাছি ও উলুবেড়িয়াতেও ১জন করে ২জনের পজিটিভ ধরা পড়ে। এদিকে ওঁদের আনা অস্ত্র ইতিমধ্যেই ব্যবহার করেন বেশকিছু জওয়ান। সেই সংখ্যাটি ৩৫জনের মত জানা গেছে যাঁদের প্রত্যককেই কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে ঘটনার পরই খড়গপুর শহরের জগন্নাথ মন্দির সংলগ্ন রাস্তা ও পুরানো বাজার সংলগ্ন আরপিএফ ব্যারাক রাস্তা স্যানেটাইজ করা হয়েছে পৌরসভা ও পুলিশ দমকলের উদ্যোগে। জগন্নাথ মন্দিরে সংলগ্ন রাস্তাটি রেলের টিবি হাসপাতাল সংলগ্ন যেখানে কোয়ারেন্টাইন করা হয়েছে জওয়ানদের সেই রাস্তা সহ আরও একটি রাস্তা পুরোপুরি সিল করে দিয়েছে সরকার। রেলের খড়গপুর ডিভিশনের জনসংযোগ আধিকারিক তথা ডিভিশনাল কমার্শিয়াল ম্যানেজার আদিত্য চৌধুরী জানিয়েছেন, ” রাজ্যের স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে কথা বলেই ওঁদের কোভিড হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আরও কারা ওই সংস্পর্শে এসেছেন তা খুঁজে দেখা হচ্ছে।” পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা মূখ্য স্বাস্থ্য অধিকারিক গিরিশ চন্দ্র বেরা বলেছেন, ” ওই ৬ আক্রান্তকে পুর্ব মেদিনীপুরের মেছোগ্রাম কোভিড হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে চিকিৎসার জন্য।”