- ✒️কলমে: মঙ্গলপ্রসাদ মাইতি
——————————
পাঠক! না-
সৌম্যনাথবাবু লেখালেখি করেন। একটুখানি নামডাকও হয়েছে। অনেকেই চিনেন তাঁকে এখন। পথ চলতি মানুষও যেচে এসে পরিচয় করে যান। লেখার প্রশংসা করেন তাঁরা। সৌম্যনাথবাবুর লেখা বই কিনে নিয়ে গিয়ে পড়েনও।
একদিন একটা চায়ের দোকানে পরিচয় হল বরেণবাবুর সঙ্গে। বরেণবাবু স্থানীয় একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। চায়ে চুমুক দিতে দিতে বরেণবাবু বললেন – ‘আপনি সৌম্যনাথবাবু না! লেখালেখি করেন। আমার বন্ধু-বান্ধবদের মুখে আপনার নাম অনেক শুনেছি। তাদের দু’একজনের হাতে আপনার লেখা বইও দেখেছি। তা নতুন কিছু বেরুচ্ছে নাকি?’
সৌম্যনাথবাবু শান্ত গলায় বললেন – ‘হ্যাঁ, কাজ চলছে। শীঘ্রই প্রকাশ পাবে।’
-‘আমাকে এক কপি দেবেন কিন্তু। না না, ভাববেন না-আমি পয়সা দিয়েই কিনে নেব।’
সৌম্যনাথবাবু বললেন – ‘ঠিক আছে। বইটা বের হোক আগে। আপনার কথা আমার মনে থাকবে।’
কিছুদিন পরে গল্প সংকলন বের হল সৌম্যনাথবাবুর। তারই একটা কপি নিয়ে একদিন তিনি বরেণবাবুর কাছে গেলেন।
-‘এই নিন বরেণবাবু, বইটা বেরিয়ে গেছে।’
বরেণবাবু বইটা নিয়ে উল্টেপাল্টে দেখলেন। একরাশ উচ্ছ্বাস ঝরে পড়ল তাঁর গলায়। ‘বা:, প্রচ্ছদটা তো খুব সুন্দর হয়েছে! অলঙ্করণ করেছেন কে? ও হ্যাঁ, এইতো প্রচ্ছদকারের নাম। দামটা কত যেন-হ্যাঁ, এই তো লেখা আছে। বই অনুযায়ী কম দাম তো। এত কমে কী করে দিচ্ছেন?’
-‘বেশি সংখ্যক পাঠকের কাছে যাতে বইটা যায় তার জন্যেই এই স্বল্পমূল্য রেখেছি।’ সৌম্যনাথবাবু উত্তর দিলেন।
আরও কিছুক্ষণ বইটা হাতে রেখে নিরীক্ষণ করলেন বরেণবাবু। তারপর সৌম্যনাথবাবুর দিকে বইটা বাড়িয়ে দিলেন।
-‘ফেরত্ দিচ্ছেন যে! এটা তো আপনার জন্যেই এনেছি।’
-‘বইটা তো বই দোকানে পাওয়া যাবে। পরে না হয় আমি সেখান থেকেই কিনে নেব। ওখানে কিনলে একটা কমিশনও পাব। ওই একটুখানি ছাড় আর কি।’
________