নিজস্ব সংবাদদাতা: লকডাউনে বিপর্যস্ত গরীব মানু্ষের দিন গুজরান। কাজকর্ম হীন মানু্ষের একমাত্র ভরসা সরকারের দেওয়া রেশন আর সেই রেশনে ‘ডাকা ডালা’র কাজও যথারীতি শুরু হয়ে গেছে। কোথাও রেশন সরবরাহের লরি থেকেই সরানো হচ্ছে চাল গমের বস্তা তো কোথাও চলছে রেশন কম দেওয়ার আভিযোগ। দ্য খড়গপুর পোষ্ট এরকম অন্ততঃ একডজন খবর প্রকাশ করেছে। দিন তিনেক আগেই পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশপুরের এক রেশন দোকানদার গ্রামবাসীদের কাছে স্বীকার করে নিয়েছেন যে গত তিনবছর ধরেই সে বেমালুম রেশন চুরি করে আসছে। আভিযোগ একটা উঠছিল যে, বহু জায়গাতেই এই রেশন দোকানদের চুরিতে সাহায্য করছে স্থানীয় শাসকদলের নেতারা।
এবার সরাসরি এক তৃনমূল নেতার বিরুদ্ধেই আভিযোগ উঠল রেশনের চাল আটা চুরি করার। আভিযোগ ত্রাণের জন্য বরাদ্দ রেশন চুরি করে সেই চাল ও গম একটি স্থানীয় মুদির দোকানে বিক্রি করেছেন তিনি। জনতা সেরকমই কিছু চাল ও আটার বস্তা একটি মুদি দোকান থেকে উদ্ধার করে । এরপরই মঙ্গলবার সকালে আসানসোল পৌর নিগমের ১১নম্বর ওয়ার্ডের বেবী খাতুনের বাড়ি উত্তেজিত জনতা ঘেরাও করে রাখে। পরে ভাঙচুর চালানো হয় বাড়ির জানলা দরজা ও অ্যাসবেসটস চালেও।
যে মুদির দোকানে ওই রেশন দ্রব্য বিক্রি করা হয়েছিল বলে জনতার দাবি জামুরিয়া থানা এলাকার শ্রীপুর বাজারের সেই মুদি দোকানের মালিক অজয় গুপ্তা স্বীকার করে নেন যে গত চার পাঁচ বছর ধরেই বেবী খাতুন তাঁকে এভাবেই মাল সরবরাহ করে আসছে এবং সোমবার চাল আর আটা মিলিয়ে প্রায় ১কুইন্টাল রেশনদ্রব্য সরবরাহ করেছিল সে।
ঘটনার খবর জানাজানি হওয়ার পরই দলে দলে মহিলা ও পুরুষ সেখানেও হাজির হয়ে যান। তাঁরা দাবি করতে থাকেন দিনের পর দিন তাঁদের প্রাপ্য রেশন থেকে বঞ্চিত করে এভাবেই চুরির দ্রব্য বাইরে পাচার করে দেয় বেবি ও তার পরিবার। উত্তেজিত জনতা সকাল থেকে ঘেরাও করে রাখে কাউন্সিলরের বাড়ি এবং সন্ধ্যার পর কয়েকজন ভাঙচুর শুরু করে বেবীর বাড়িতে। খবর পেয়ে জামুরিয়া থানার পুলিশ এসে পৌঁছায় ঘটনাস্থলে। বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেয় পুলিশ এবং লকডাউনের সময় এই জমায়েত বৈধ নয় এই পরামর্শ দিয়ে জনতাকে ফেরৎ পাঠায় পুলিশ।
যদিও জনতার আভিযোগ সম্পূর্ন অস্বীকার করে বেবী জানিয়েছেন, তিনি কার্যত দলের গ্রুপবাজির শিকার হয়েছেন। লকডাউনের সময় রিলিফ হিসাবে তাঁর কাছে মেয়রের তরফ থেকে ২৫০কেজি চাল আসে যা তিনি ৫০ জনকে ৫কেজি করে দিয়েছেন। কিন্তু তাঁর ১১নম্বর ওয়ার্ডে হাজার হাজার মানুষ থাকেন তিনি কাকে সন্তুষ্ট করবেন? দ্বিতীয়ত তাঁর এলাকায় মোট ৯টি রেশন দোকান রয়েছে। ত্রাণের দ্রব্য সরবরাহের সময় প্রথমে রেশন কার্ড এবং পরে যাঁদের কার্ড নেই তাঁদের কুপন দিয়ে মাল দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি দোকানে রেশন সরবরাহের সময় তাঁর তরফে ২জন করে লোক ছিল। এরপরও মাল কিভাবে সরানো হয়েছে তিনি জানেননা। তবে বেবীর আভিযোগ তাঁর কাজ যাঁদের পছন্দ নয় দলের মধ্যে থাকা তাঁরাই এই কাজ করেছেন। জনতাকে ক্ষেপিয়ে এই তাণ্ডব চালিয়েছে। যদিও তাঁরা কারা তার নাম বলেননি বেবী।