নিজস্ব সংবাদদাতা: ওড়িশার হাসপাতালে করোনা পজিটিভ অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ৭০ বছরের বৃদ্ধের মৃত্যু হয়নি বলে জানালেন দাঁতনের বিধায়ক বিক্রম প্রধান। বিক্রম বাবু জানান, ”ওনার মৃত্যু হয়েছে এমন একটি খবর আমরাও পেয়েছিলাম বৃহস্পতিবার রাতে। খবর পাওয়ার পর আমরাও দুশ্চিন্তায় পড়ে যাই যে কী করে ওই বৃদ্ধের সৎকার করা হবে। শুক্রবার সকাল অবধিও তেমনই খবর ছিল কিন্তু বেলার দিকে আমরা ওড়িশাতে খবরা খবর নিয়ে জানতে পারি খবরটি সঠিক নয়, বেঁচে আছেন উনি।” বৃহস্পতিবার রাতে এই মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছিলেন খড়গপুর মহকুমার দায়িত্বে থাকা পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশের এক শীর্ষ আধিকারিকও। তিনিও জানান, ” খুবই অসুস্থ ছিলেন বৃদ্ধ, মাত্র কয়েকদিন ব্রেন টিউমার অপারেশন হয় তাঁর। ভুবনেশ্বরের কলিঙ্গ ইনস্টিটিউ অফ মেডিক্যাল সায়েন্স হাসপাতালে সন্ধ্যায় মৃত্যু হয়েছে তাঁর।”
যদিও শুক্রবার ওই অধিকারিরকও জানান, ”আমরা তেমনটাই খবর পেয়েছিলাম কিন্তু এখন জানা যাচ্ছে খবরটি সঠিক নয়। উনি এখনও চিকিৎসারত।” অন্য দু’একটি সংবাদমাধ্যমের মত এই সুত্র নির্ভর করেই ‘দ্য খড়গপুর পোষ্ট’ য়েও এই খবর প্রকাশিত হয়। আমরা আন্তরিক দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী পরিবার ও সংশ্লিষ্ট সবার কাছেই। সংবাদ মাধ্যমের নির্ভর যোগ্য সুত্রই হল পুলিশ এবং প্রশাসন। এই দুটি ক্ষেত্রেই নিশ্চিত হওয়ার পরই আমরা ওই সংবাদ পরিবেশন করেছিলাম।
এদিকে ওই বৃদ্ধের করোনা পজিটিভ খবরটিও নিশ্চিত করা হয়নি স্বাস্থ্য দপ্তরের সুত্রে। তবে ওড়িশা সরকার জানিয়েছে যে বৃদ্ধ করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। আর এই খবরের ওপর ভিত্তি করেই বেলদার ওই গ্রাম শুক্রবার থেকেই পুরোপুরি সীল করে দেওয়া হয়েছে ওই গ্রামটি। গ্রামের প্রায় ৭টি রাস্তা ড্রাম আর বাঁশ দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়েছে। কড়া পুলিশ প্রহরা বসানোর তোড়জোড় চলছে রাস্তার মোড়ে মোড়ে। উপযুক্ত কারন ছাড়া গ্রামে ঢোকা ও বেরুনো বারণ গ্রামবাসীদের। দমকল ও বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরের কর্মীরা ক্লোরিনের দিয়ে পাম্পের সাহায্যে স্যানিটাইজ করছেন পুরো গ্রামটি।
কোয়ারেন্টাইন ঘোষনা করা হয়েছে পুরো গ্রামটিকে । গ্রামের প্রতিটি পরিবারের সদস্যকেই ঘরবন্দি থাকতে বলা হয়েছে। পরিবারের খাদ্য সামগ্রী সহ যাবতীয় প্রয়োজনীয় সামগ্রী সরবরাহ করছে পুলিশ। বৃদ্ধের সঙ্গে সরাসরি সংস্পর্শে ছিলেন এমন দু’ডজন ব্যক্তিকে সরিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে। অন্যদিকে মেদিনীপুর শহরের যে দুটি বেসরকারি হাসপাতালে বৃদ্ধের চিকিৎসা হয়েছিল সেখানকার ৪০জন চিকিৎসাকর্মীকেও কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বৃদ্ধের চিকিৎসা ও অপারেশন করেছিলেন এমন তিনজন সরকারি চিকিৎসককে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়েছে স্বাস্থ্যদপ্তর সুত্রে। এরই পাশাপাশি বৃদ্ধের দুই মেয়ে যে দুটি গ্রামের বাসিন্দা পশ্চিম ও পূর্ব মেদিনীপুরের সেই দুটি গ্রামকেও কড়া নজরদারিতে রাখা হয়েছে বলেই জানা গিয়েছে।