নিজস্ব সংবাদদাতা: কথায় আছে কারও পৌষ মাস তো কারও সর্বনাশ। করোনা ভাইরাসের আতঙ্কে সর্বনাশ সাধারন মানু্ষের। কল কারখানা ক্ষেত খামার বন্ধ। কাজকর্ম নেই। দিন আনি দিন খাই মানুষের ভরসা এখন সরকারের বরাদ্দ রেশন। আগামী ৬ মাস সরকার মানুষকে বিনা পয়সায় রেশন দেওয়ার কথা ঘোষনা করেছিলেন। সেই মত ১লা এপ্রিল থেকে শুরু হয়েছে রেশন দেওয়া। এত মানু্ষের হাতে রেশন তুলে দিতে রেশন ডিলারদের হাতে ঢালাও খাদ্যশষ্য তুলে দিয়েছেন সরকার আর তাতেই পৌষ মাস রেশন ডিলারদের! অবাধে লুট চলছে মানু্ষের অন্ন।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এরকমই ২লরি ভর্তি খাদ্যশষ্য পাচার করছিল এমনই সন্দেহে লরি দুটি আটক করল খড়গপুর পুলিশ। গিয়ে খড়গপুর খড়গপুর লোকাল থানার অন্তর্গত জিনসহরে পুলিশ মঙ্গলবার সন্ধ্যার মুখে হানা দিয়ে এফসিআইয়ের গোডাউন থেকে বেরিয়ে পাচার করার উদ্দেশ্যে বস্তা বস্তা রেশনের গম আটক করে। আটক হওয়া খাদ্যশষ্যের পরিমান কয়েক টন বলেই জানিয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে নির্ধারিত রুটের পরিবর্তে ওই লরি দুটি কেন অন্য রুটে যাচ্ছিল তা নিয়ে সন্দেহ হয় পুলিশের। অন্য কোথাও যাওয়ার উদ্দেশ্য নিয়েই মেদিনীপুর কাঁসাই সেতু সংলগ্ন রাস্তা দিয়ে রূপনারায়নপুরের দিকে যাওয়ার পথে একটি পেট্রোল পাম্পে তেল ভরতে ঢুকে ছিল লরি দুটি। খবর পেয়েই পুলিশ পৌঁছে যায় ঘটনাস্থলে। লরি সহ দুজন চালককে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করা হয়েছে।
উল্লেখ্য রেশন দ্রব্যের অসম বন্টন নিয়ে ২৪ ঘন্টা আগেই রণক্ষেত্রে পরিনত হয়েছিল খড়গপুর লোকাল থানারই কেশুরিয়া গ্রাম। রেশনে সরকার নির্ধারিত পরিমানের চাইতে কম দ্রব্য দেওয়া হচ্ছে এই ক্রোধে ভাঙচুর চালানো হয় এম.আর.দোকান। শুধুই কেশুরিয়া নয় বা খড়গপুর নয় পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্তেই এ নিয়ে শুরু হয়েছে বিক্ষোভ। দিন কয়েক আগেই ঝাড়গ্রামের পুকুরিয়াতে গ্রামবাসীরা খাদ্যশষ্য বোঝাই লরি থেকে পিক আপ ভ্যানে চালের বস্তা পাচারের সময় ধরে। পরে পুলিশ লরি আটক করে। মঙ্গলবার খড়গপুরের আটক লরি দুটি কোন ডিস্ট্রিবিউটারের, খড়গপুরের কোনও ডিস্ট্রিবিউটার নাকি অন্য কোথাকার খোঁজ নিচ্ছে পুলিশ।
মঙ্গলবারই প্রেস কনফারেন্সে মমতা ব্যানার্জী সতর্ক করেছিলেন রেশন দোকানগুলিকে। তিনি এও বলেছিলেন কোনও কোনও নেতা রেশন ডিলারদের কাছ থেকে খাদ্যশষ্য নিয়ে যাচ্ছেন বিলি করবেন বলে। এটা করা যাবেনা। রেশনের দ্রব্য রেশন দোকান থেকেই দিতে হবে। এদিনই বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছেন, রেশনের দ্রব্য লুট হচ্ছে এবং লুট করছে তৃণমূলের নেতারাই। রাজ্যের একটি জায়গায় রেশন দোকানের পাশাপাশি ভাঙচুর করা হয় স্থানীয় তৃণমূল নেতার বাড়িতেও। জনতার দাবি ওই নেতাই তাঁদের রেশনে ভাগ বসান। সব মিলিয়ে যখন রেশন নিয়ে মানু্ষের এত ক্ষোভ তার মাঝেই বারংবার পাচারকারীর দল ধরা পড়ায় মানুষ আরও নিশ্চিত হয়ে যাচ্ছে যে তাঁদের প্রাপ্য জিনিস লুট হচ্ছে ।