নিজস্ব সংবাদদাতা: প্রদীপ বা মোমবাতি জ্বালাতে হলে জ্বালান কিন্তু ঘরের আলো নিভিয়ে নয়। এমনটাই জানালেন মহারাষ্ট্রের বিদ্যুৎমন্ত্রী নীতিন রাওয়াত। তিন বলেন, “যদি সমস্ত লাইট একবারে বন্ধ করা হয় তবে এটি গ্রিডের ব্যর্থতা হতে পারে আমাদের সমস্ত জরুরি পরিষেবা স্তব্ধ হয়ে যেতে পারে যা পুনরুদ্ধার করতে এক সপ্তাহ সময় লাগতে পারে।”
তিনি আরও বলেন, “একই সাথে লাইট বন্ধ করলে হঠাৎ চাহিদা পড়ে যাবে আবার একসাথে সব আলো জ্বেলে দিলে হঠাৎই জোগান বেড়ে যাবে। চাহিদা ও সরবরাহে বিশাল পার্থক্য দেখা দিতে পারে। এমনিতেই লকডাউনের কারণে, ইতিমধ্যে চাহিদা ২৩হাজার মেগাওয়াট থেকে ১৩হাজার মেগাওয়াটে নেমে এসছে কারন কল কারখানা বন্ধ রয়েছে, বিদ্যুতের খরচ কেবল ঘরবাড়ি ও প্রয়োজনীয় পরিষেবাগুলি চলছে।”
উল্লেখ্য লডকডাউনে দেশবাসীর মনোবল বৃদ্ধির জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিআগামী রবিবার রাত ৯টায় ঘরের সমস্ত আলো নিভিয়ে নিজের বাড়ির বারান্দায় এসে প্রদীপ, মোমবাতি বা টর্চের আলো জ্বালাতে ও একযোগে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। অবশ্য শুধুই মহারাষ্ট্রের বিদ্যুৎ মন্ত্রী নয়, মোদির এই ঘোষণায় প্রমাদ গুনছেন দেশের পাওয়ার গ্রিডগুলির কর্তারা। তাঁদের আশঙ্কা, হঠাৎ দেশজুড়ে সবাই বাড়ির আলো নেভালে আচমকা জোরাল ধাক্কা খেতে পারে পাওয়ার গ্রিড। আবার ৯ মিনিট পর সবাই একসাথে আলো জ্বালিয়ে দেবেন, সেক্ষেত্রে আবার আগের মতোই বিদ্যুতের স্রোত প্রয়োজন হবে। চাহিদার এই টানাপড়েনে ঘটতে পারে বড়সড় বিপর্যয়। এই ঘটনার ফলে দেশে ব্ল্যাকআউট হয়ে যেতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন গ্রিড কর্তারা।
যেমন স্টেট লোড ডেসপ্যাচ সেন্টার বা এসএলডিসি মনে করছে, হঠাৎ একসাথে এই আলো নেভা-জ্বলা দেশে গ্রিড বিপর্যয় এনে দিতে পারে। সংস্থার কর্তারা বলছেন, ভারতের গ্রিডগুলির বিদ্যুৎ ধরে রাখার ক্ষমতা ৩৭০ গিগা ওয়াটের কাছাকাছি। সাধারণত ভারতে কমবেশি ১৫০ গিগা ওয়াটের চাহিদা থাকে। বিদ্যুতের চাহিদা কমে গেলে বেরা যাবে সাশ্রয়। যা গ্রিডগুলির ধারণ ক্ষমতার থেকে বেশি হয়ে গেলেই বিপদ। একই ধারণা নিউক্লিয়ার পাওয়ার কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া লিমিটেডের। সংস্থার এক কর্তা বলছেন, যদি প্রধানমন্ত্রীর কথামতো আলো নেভানোও হয়, অন্তত ফ্যান এবং এসি চালু রাখতে হবে। যাতে বিদ্যুতের সাশ্রয় অতিরিক্ত না হয়। এর ফলে গ্রিড বিপর্যয়ে দেশে ‘ব্ল্যাক আউট’ হয়ে যেতে পারে।
যদিও এই সব আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়েছে কেন্দ্র। বিতর্কের মুখে কেন্দ্রীয় শক্তি মন্ত্রকের তরফে এক বিবৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, “কিছু কিছু বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। কোথাও কোথাও বলা হচ্ছে, এর ফলে গ্রিড বিকল হতে পারে এবং ভোল্টেজের সমস্যা হতে পারে। এটা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং বিপথগামী।” কেন্দ্রীয় শক্তি মন্ত্রক জানিয়ে দিয়েছে, ওই সময় রাস্তার আলো বা বাড়ির বিদ্যুৎচালিত যন্ত্র বন্ধ হবে না। শুধু বাড়ির আলো বন্ধ হবে। তাছাড়া হাসপাতালের মতো প্রয়োজনীয় পরিষেবা চালু থাকবে। সব মিলিয়ে আগামী রবিবার কী হয় সেটাই দেখার জন্য অপেক্ষা করছেন সারা দেশ।