নিজস্ব সংবাদদাতা: লকডাউনের নবম দিনের খড়গপুর শহর যেন হাট খোলা ময়দান। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পুলিশ আর প্রশাসন রাস্তায় নেমে দেখল খড়গপুর শহরের খরিদা বাজারে রাস্তার ওপর দিব্যি জাঁকিয়ে বসেছে বাজার। রাস্তার ওপর সবজি বাজার, দোকানে বিক্রি হচ্ছে চিপস চানাচুর, কোলড্রিংকস আর রাস্তার ওপর অলিগলি বেয়ে মানুষের ঢল নেমেছে। ঠিক এমনই দৃশ্য দেখা গেল ঝাপেটাপুর, কৌশল্যা, ইন্দা, পুরিগেট। গোটা খড়গপুর যেন গুমোট আবহাওয়ায় হাওয়া খেতে বেরিয়েছে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬ টা নাগাদ খড়গপুর শহরের লকডাউন কেমন চলছে দেখতে গিয়ে এমনই অভিজ্ঞতা হল খড়গপুরের মহকুমা শাসক বৈভব চৌধুরী অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী শামসুদ্দিন আহমেদ, খড়গপুর মহকুমা পুলিশ শাসক সুকোমল দাস, খড়গপুর শহর থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক রাজা মুখার্জী আর খড়গপুর সদরের বিধায়ক তথা চেয়ারম্যান প্রদীপ সরকারের। বৃহস্পতিবারই মূখ্যমন্ত্রী সংবাদিক সম্মেলন করে উদ্বেগ প্রকাশ করে জানিয়েছেন যে করোনার প্রাদুর্ভাব বেড়েছে রীতিমত আশংকা জাগিয়েছে আর একই সঙ্গে তিনি চূড়ান্ত আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন যে রাজ্য জুড়ে লকডাউনে যথেষ্ট শিথিলতা দেখা দিয়েছে। সম্ভবত: মূখ্যমন্ত্রীর এই বার্তা পেয়েই রাস্তায় নামেন খড়গপুর মহকুমা পুলিশ আর প্রশাসন আর নেমেই চক্ষু চড়কগাছ ! কেউ বাইকে করে নিয়ে যাচ্ছে চিপস কোল্ড ড্রিংকস আর বাহারি চাট, যেন পাক্কা আসরের আয়োজন। কোথাও আবার দুই ভাই বাইকে করে ‘থোড়া ইঁহুই….’ হাওয়া খেতে বেরিয়েছে।
ইন্দা এলাকায় কয়েকজন যুবককে দেখা গেল বন্ধ চায়ের দোকানের সামনে জমাটি আড্ডায়। পুলিশ দেখেই লম্বা ছুটে কেউ ঢুকে পড়ল অন্যের বাড়ির ভেতরে তো কেউ অন্যের বাথরুমে। শুধুই এই জায়গাগুলো নয়, একই ছবি ফুটে উঠেছে ভবানীপুর, গোলাবাজার, পাঁচবেড়িয়া, সিএমই গেটেও।
পুলিশকে দেখা গেল এদিন ঠান্ডা গরমে পরিস্থিতি সামাল দিতে। কারও গলায় গাঁদা ফুলের মালা আবার কারও হাতে গোলাপ ফুল গুঁজে দিতে। কয়েকজনকে আবার কষিয়ে ডান্ডা পেটাও করতে দেখা গেল পুলিশকে। যদিও সব মিলিয়ে খড়গপুরের নাগরিকদের একটা অংশের চূড়ান্ত দায়িত্বজ্ঞানহীনতাই ধরা পড়ল এদিন। বারংবার যখন বলা হচ্ছে এই সপ্তাহটা জাতির কাছে ভয়ংকর তখন এরকম একটা দৃশ্য রীতিমত প্রশ্ন তুলে দিল যে সত্যি সত্যি এই মহামারী রুখতে কতটা দায়িত্বহীন এই শহর।শহর যেন ভুলেই গেছে যে ২৪ঘন্টা আগেই দিল্লির নিজামউদ্দিন মসজিদে তাবলিগী জামাতে অংশ নেওয়া ৭ইন্দোনেশীয় মৌলবী এই শহরে কাটিয়ে গেছে!