নিজস্ব সংবাদদাতা: দুপুরে নন্দীগ্রামের পর সন্ধ্যায় নন্দকুমারে লকডাউন বলবৎ করতে গিয়ে স্থানীয় কিছু যুবকের হাতে বেধড়ক মার খেলেন পুলিশকর্মীরা। বুধবারই মূখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী পুলিশকে সতর্ক করে বলেছিলেন, লকডাউনের নামে তাণ্ডব চালাবেননা। বলেছিলেন, বাড়াবাড়ি করা হচ্ছে কোথাও কোথাও। বুধবারই হাওড়াতে পুলিশের লাঠি চার্জে এক যুবকের মৃত্যুর আভিযোগও ওঠে। সোশ্যাল মিডিয়ায় সমালোচনার ঢেউ ওঠে। বাস্তবিকই এই ঘটনার পরই বোধহয় একটু শিথিল হয়ে গেছিল পুলিশের লাঠি। বৃহস্পতিবার বোধহয় তারই সু্যোগ নিল পূর্ব মেদিনীপুর। এদিন দুপুরে নন্দীগ্রামের পর সন্ধ্যায় নন্দকুমার থানা এলাকায় আক্রান্ত হল পুলিশ। নন্দীগ্রামের মতই এদিন নন্দকুমারের পুলিশের গাড়ি ভাঙচুরের পাশপাশি দুই পুলিশকর্মীকে এতই মারা হয় যে তাঁদের নিকটবর্তী হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা করাতে হয়।
জানা গেছে নন্দকুমার থানা এলাকার বাসুদেবপুরের লোহজং গ্রামের ঠেকে জমিয়ে আড্ডা দিচ্ছিল কিছু মানুষ। পুলিশ তাঁদের সরে যেতে বললে তাঁরা সরে যেতে রাজি হয়নি। উল্টে পুলিশের সঙ্গে বচসা শুরু করে দেয় তাঁরা। পুলিশ জোর করে তাঁদের ঘরে পাঠাতে শুরু করে আর তখনই পুলিশের ওপর ইটপাটকেল মারতে শুরু করে। শুরু হয় গাড়ি ভাঙচুর। ঘটনার খবর পেয়েই ছুটে আসে বিশাল পুলিশ বাহিনী। আক্রান্ত পুলিশ কর্মীদের উদ্ধার করেন ওই বাহিনীর সদস্যরা।
উল্লেখ্য এদিন দুপুরেই নন্দীগ্রাম ২ব্লকের রেয়াপাড়া এলাকার জইনপুর আমড়াতলা গ্রামের থেকে খবর আসে যে ওই দুটি গ্রামের সংলগ্ন একটি মাঠে কিছু ছেলে ফুটবল এবং ক্রিকেট খেলছে।
খবর পেয়েই নন্দীগ্রাম থানার অন্তর্গত রেয়াপাড়া ফাঁড়ির পুলিশ কর্মীরা একটি গাড়িতে করে ওই খেলা বন্ধ করতে যায়। কারন নিয়ম অনুযায়ী লকডাউন চলাকালীন ঘরের বাইরে যাওয়া এবং গনজমায়েত করা নিষিদ্ধ। পুলিশ কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে খেলা বন্ধ করে ওই যুবকদের নিজ নিজ ঘরে ফিরে যেতে বললে যুবকরা ফিরতে চায়নি উল্টে কেন পুলিশ তাদের খেলা বন্ধ করতে চাইছে এই নিয়ে দোষারোপ করতে থাকে। যুবকদের ভাল ভাবে বোঝানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হলে পুলিশ আধিকারিকরা তাদের আইনভাঙার দায়ে লক আপে ভরা হবে জানালে উত্তেজিত হয়ে ওঠে বেশ কয়েকজন যুবক। তারা পুলিশ কর্মীদের ঠেলাঠেলি করতে শুরু করে এবং ঘিরে ফেলে।
সংখ্যায় কম থাকায় এবং মূল রাস্তা থেকে অনেকটাই ভেতরে হওয়ায় পুলিশ কর্মীরা দিশেহারা হয়ে পড়ে। উত্তেজিত যুবকের দল পুলিশ কর্মীদের বেশ কিছুটা দুরে সরিয়ে দিয়ে ইট দিয়ে পুলিশের ভ্যানটি ভাঙচুর চালায়।
বারংবার এই আক্রমনে পুলিশের মনোবলে চিড় ধরতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন আর সেকারনে পুলিশ শিথিল হয়ে পড়লে লকডাউন বলবৎ করতে অসুবিধা হয়ে যাবে বলে অনেকে মনে করছেন। সেক্ষেত্রে আবার বিপদ বাড়বে সাধারন মানু্ষেরই।