নিজস্ব সংবাদদাতা: লকডাউন না মানায় অবাধ্য জনতাকে লাঠি পেটা করার ছবি ভিডিও প্রথম দিকে বেশ ভালই নিচ্ছিল মানুষ। পুলিশের উদ্দেশ্যে ‘সাবাস সাবাস’ ধ্বনিও উঠছিল বেশ। কিন্তু ৪৮ ঘন্টার মধ্যেই বদলে গেল ছবিটা। লকডাউন রক্ষার নামে পুলিশ নির্মম তাণ্ডব চালাচ্ছে এমনই খবর ছড়াতে শুরু করল এবার। কোনও রকম জিজ্ঞাসাবাদ ও প্রয়োজন অপ্রয়োজন বিচার না করেই ‘হাতের সুখ’ মেটাচ্ছে পুলিশ এমন আভিযোগও উঠে আসল সোশ্যাল মিডিয়ায়। আর এতেই চাপে প্রশাসন। বুধবার তাই পুলিশের উদ্দেশ্যে মূখ্যমন্ত্রী সরাসরি হুঁশিয়ারি দিয়ে বললেন, লকডাউনের নামে তাণ্ডব ছড়াবেননা।
মূখ্যমন্ত্রীর এই হুঁশিয়ারি মুহূর্তের মধ্যেই ভাইরাল করে ছড়িয়ে দেয় তৃণমূলের সোশ্যাল মিডিয়া। কারন চাপে সব চেয়ে বেশি তারাই। কারনে অকারনে পুলিশ লাঠি পেটা করছে এমনই ক্ষোভে স্থানীয় নেতাদের কাছে ফেটে পড়ছিল এলাকার মানুষজন। বুধবার পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়গপুরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের কাছে ব্যবসায়ীরা আভিযোগ করেন পুলিশ তাঁদের হেনস্থা করছে দোকান খোলার জন্য রাস্তায় নামলে। খড়গপুর আইআইটির ছাত্রাবাসের কর্মীরা জানিয়েছেন কাজে গিয়ে পুলিশের মার খেয়েছেন তাঁরা। সব মিলিয়ে চাপে শাসকদল আর তাই মূখ্যমন্ত্রীর পুলিশকে সংযত হওয়ার নির্দেশ মুহূর্তে ভাইরাল করে দেওয়া হয়, বোঝানোর চেষ্টা করা হয়, মূখ্যমন্ত্রী বা দল এসব চাইছেনা, এসব পুলিশ নিজে থেকেই করছে।
পুলিশের তরফে জানা গেছে, পুলিশ কর্মীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে। আগে জিজ্ঞাসাবাদ করা হোক তারপর পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যবস্থা। তেমনটাই ব্যবসায়ীদের আশ্বাস দিয়েছেন খড়গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজি সামসুদ্দিন আহমেদ। বলেছেন তেমন কোনও ঘটনা ঘটলে আমাদের ফোন করুন। পুলিশের কর্তাদের মতে কেউ কেউ অতি উৎসাহভরে লাঠি চালিয়ে দিচ্ছে। বাদ যায়নি গরীব রিকশাওয়ালাও। মানুষ আহত হচ্ছেন এমনকি হাওড়ায় পুলিশের লাঠিতে মৃত্যুর আভিযোগ উঠেছে।
কারও কারও মতে মানুষকে সঠিকভাবে বোঝাতে না পেরেই মনস্তাত্ত্বিক চাপে পুলিশ।
আবার কেউ কেউ বলছেন, স্থানীয় এলাকায় বিভিন্ন কারনে যে সব পুলিশ কর্মীদের ওপর মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তাঁদেরই বেশি বেশি করে সক্রিয় হতে দেখা গেছে নির্বিচার লাঠি চালাতে। আবার অনেকেরই মতে পুলিশ ঠিকই করেছে। পুলিশ কড়া হয়েছিল বলেই জনতাকে বাড়ির ভেতরে ঢুকিয়ে দেওয়া সম্ভব হয়েছে। এসব বিতর্কের মধ্যেই মূখ্যমন্ত্রী সংযত হওয়ার নির্দেশ দিলেন পুলিশকে ।