নিজস্ব সংবাদদাতা: ৪৮ ঘণ্টা পের হয়নি, পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুরে করোনা সংক্রান্ত ভিড় এড়ানোর নিষেধাজ্ঞা মানতে গিয়ে মার খেয়ে রক্তাক্ত হয়েছেন এক রাজস্ব আধিকারিক অথচ সেই দাসপুরেই দেখা গেল রীতিমত প্যান্ডেল টাঙিয়ে বড়সড় জমায়েত করে ফেললেন দাসপুরের বিধায়ক। আর সেই জমায়েতে অংশ নিলেন শাসক দলের ছোটবড় নেতা ঠেকে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ, তৃণমূলের ব্লক সভাপতিরা। সরকারি বিধি ও আইনভঙ্গের ঘটনায় তাজ্জব পুলিশ ও ব্লক প্রশাসন।
উল্লেখ্য দাসপুর ২ ব্লক এলাকায় চন্দ্রেশ্বর খাল ও সংলগ্ন রাস্তা সংস্কারের জন্য রাজ্য সরকার সম্প্রতি প্রায় ৩২কোটি টাকা বরাদ্দ করেছেন। কাজ শুরু করার নির্দেশও পেয়ে গেছেন সংশিষ্ট ঠিকাদার। এতবড় সাফল্য ঢাক পিটিয়ে নিজের কৃতিত্বে নেওয়ার চেষ্টা হাত ছাড়া করতে রাজী নন এলাকার বিধায়ক মমতা ভূঁইয়া। তাই করোনা সংক্রান্ত নির্দেশিকা আর সমস্ত রকম ভিড় এড়াতে সম্প্রতি চালু হওয়া মহামারী আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে দাসপুর থানার চাঁইপাট এলাকায় প্রকল্প জ্ঞাপন জনসভা আহ্বান করে ফেলেন। আর সেই সভায় উপস্থিত করা হয় কয়েক’শ মানুষকে।
সরকারি প্রকল্পের এত বড় কৃতিত্ব কার এটাই বোধহয় প্রমান করার দরকারটা করোনা সংক্রমনের চেয়ে এতটাই জরুরি ছিল যে বিধায়ক মমতা ভূঁইয়ার পাশাপাশি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের কৃষি ও সেচ কর্মাধ্যক্ষ রমাপ্রসাদ গিরি, অধ্যক্ষ তপন দত্ত, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি প্রতিমা দলুই , দাসপুর ২ব্লকের তৃণমূল সভাপতি আশিস হুদাইদ সহ একগুচ্ছ নেতা হাজির হয়ে যান নিজ নিজ অনুগামী সহ। কিভাবে সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে এই সভা করা হল ? এর উত্তরে মমতা ভূঁইয়া বলেন, ” তেমন বড় কোনও সভা করা হয়নি আর বেশি লোকও জমায়েত হয়নি।” যদিও স্থানীয় মানুষজনের বক্তব্য অন্তত: পাঁচশ মানুষ ছিলেন।
পুরো ঘটনায় অবশ্য এড়িয়ে যাওয়া হয় ব্লক ও পুলিশ প্রশাসনকে। কারন হিসাবে জানা গেছে ব্লক আধিকারিক ও পুলিশ এই বেআইনী জমায়েতে বাধা দেবেন জেনেই পরিকল্পনা মাফিক তাঁদের এড়িয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় দলীয় স্তরেই। ঘটনা জানার পর ক্ষুব্ধ ব্লক ও পুলিশ কর্তারা।
ব্লকের এক আধিকারিক ক্ষোভ ব্যক্ত করে জানান, সরকারি নির্দেশ মান্য করতে গিয়ে যেখানে আমাদের আধিকারিকরা মার খাচ্ছেন সেখানে শাসকদলের নেতাদের এই আচরন দুর্ভাগ্যজনক। ঘটনার খোঁজ নিচ্ছেন ঘাটাল মহকুমা পুলিশ শাসক অগ্নিশ্বর চৌধুরী। উল্লেখ্য এখানকারই এক রাজস্ব আধিকারিক সরকারি আদেশ মোতাবেক জনশুনানিতে অংশ না নেওয়ায় এক অধ্যাপকের হাতে প্রহৃত হন বুধবার। পুলিশ সেই ঘটনায় এফআইআর দায়ের করেছে ।