নিজস্ব সংবাদদাতা: সম্মান রক্ষা হল কলকাতার তথা পশ্চিম বঙ্গের। অন্ততঃ শাসকদলের কয়েকজন নেতা মন্ত্রীর তো বটেই। এবার আর এক তরফা জাল টিকার দায় বইতে হবেনা বাংলাকে। করোনা (Covid 19) ভ্যাকসিনের জাল টিকা শিবিরের পাইওনিয়ার বাংলার পরে আবার যুক্ত হল বাংলার নামও করোনা আবহে কলকাতার ভুয়ো টিকাকরণ কাণ্ডকে ঘিরে এখনও চাঞ্চল্য গোটা রাজ্যে। এর মধ্যেই মুম্বইয়ে ঘটে গেল আরেক কাণ্ড। সেখানেও টিকাকরণের নামে চলছিল ভুয়ো কারবার। প্রায় ২ হাজারেরও বেশি মানুষ মুম্বইয়ের ওই ভুয়ো টিকাকেন্দ্র থেকে ভ্য়াকসিন নেয় বলে জানা গিয়েছে। এই ঘটনায় জড়িত এক মহিলা সহ ১০ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
জানা গিয়েছে, বেশ কয়েকটি জায়গায় ভ্যাকসিনের (Corona Vaccine)নামে প্রায় ২হাজার মানুষকে নুন জল ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়েছে। এই সব ক্ষেত্রে টিকা গ্রাহকদের আশ্বাসও দেওয়া হয়েছিল যে কো-উইন (Co-WIN) অ্যাপের মাধ্যমে তারা নাকি সার্টিফিকেটও পেয়ে যাবে। এমনভাবেই মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে লক্ষাধিক টাকা আদায় করা এই ভুয়ো কারবারীরা। এবিষয়ে জয়েন্ট কমিশনার অফ পুলিশ (আইন-শৃঙ্খলা) বিশ্বাস নাঙ্গরে পাটিল জানান যে, প্রতারকদের কাছ থেকে ১২ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। যা কিনা বাড়ির সামনেই লাইনের ঝামেলা ছাড়াই টিকা পেতে মানুষ নিয়েছিলেন। সিল করা হয়েছে মূল অভিযুক্ত মণীশ ত্রিপাঠী ও মহেন্দ্র সিংয়ের নামের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট। পাটিল আরও জানিয়েছেন, “এই জালিয়াত সিন্ডিকেট চক্র অন্ততঃ আরও আটটি ক্যাম্প সম্পন্ন করেছিল বলে জানা গিয়েছে। যার মূলে ছিল এই দুই পান্ডাই।
মুম্বই পুলিশ সূত্রে আরও যে মারাত্মক খবর পাওয়া গেছে তা’হল, প্রাথমিক তদন্তে মনে করা হচ্ছে যে টিকার ভায়ালগুলিতে স্যালাইন অথবা নুন জল ছিল। তবে ওই ভায়ালগুলির মধ্যে ঠিক কী ছিল, তা নিয়ে এখনও তদন্ত জারি রয়েছে। এই নিয়ে কোভিশিল্ড প্রস্তুতকারক সংস্থা সেরাম ইনস্টিটিউটের (serum institute of india) সঙ্গেও কথা হয়েছে। এখানে স্মরণে রাখার যে কলকাতায় দেবাঞ্জন দেবের ভুয়ো টিকা করনের ক্যাম্পে বিসিজি কিংবা হামের টিকা দেওয়া হয়েছিল বলে কলকাতা পুর-সভার ডেপুটি সিএমওএইচ জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, মুম্বাইয়ের ক্ষেত্রে ফিল্ম প্রযোজক রমেশ তৌরানি ভুয়ো টিকাকরণ নিয়ে মুখ খুলেছিলেন। রমেশ নিজের উদ্যোগে সুপার স্প্রেডারের অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে জন ফিল্মের সঙ্গে জড়িত কর্মীদের টিকা দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছিলেন তিনি। লক-ডাউনে বন্ধ হয়ে যাওয়া শ্যুটিংয়ে দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে কাজ করা টেকনিশিয়ান থেকে নানা ধরনের প্রায় ৩৬৫জন কর্মী এই টিকা নিয়েছিলেন। অভিযোগ এই ব্যক্তিরা সেখানেও ভুয়ো টিকা দিয়েছিল। ৩০মে ও ৩০জুন মোট দু’দফায় এই ক্যাম্প দুটি হয়েছিল।
এদিকে কলকাতার পর মুম্বইয়ে ভুয়ো টিকাকরণের খবর সামনে আসতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে দেশজুড়ে। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। টিকার নামে এই জালিয়াতি কি কেবল মুম্বই বা কলকাতায় সীমাবদ্ধ? নাকি ছড়িয়ে পড়েছে দেশের অন্যান্য প্রান্তেও? এই প্রশ্নই এখন ঘুরে বেড়াচ্ছে সাধারণ মানুষের। তার সঙ্গে বাড়ছে আতঙ্কও। কলকাতায় একাধিক ভুয়ো টিকা শিবিরের আয়োজক জালিয়াত দেবাঞ্জন কী এই জালিয়াতির কনসেপ্ট কী তাহলে দেশের অন্য জায়গা থেকেই নিয়েছিলেন?