নিজস্ব সংবাদদাতা :করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে এখনও অবধি প্রাণ হারিয়েছেন ৭১৯ জন চিকিৎসক যার মধ্যে সর্বাধিক বিহারের ১১১ জন চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে। এমনটাই জানিয়েছে দেশের চিকিৎসকদের সবচেয়ে বড় সংগঠন আইএমএ-এর (IMA)। বিহারের পরেই রয়েছে দিল্লি যেখানে প্রাণ গিয়েছে ১০৯ চিকিৎসকের। এরপরই তালিকায় রয়েছে উত্তরপ্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গ এবং রাজস্থান যেখানে করোনা তার মরন কামড় বসিয়েছে মারাত্মক ভাবে
আইএমএ-এর (IMA) তথ্য অনুযায়ী, করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের জেরে উত্তরপ্রদেশে মৃত্যু হয়েছে ৭৯ জন চিকিৎসকের। পশ্চিমবঙ্গে প্রাণ হারিয়েছেন ৬৩ জন চিকিৎসক। রাজস্থানেও চিকিৎসকদের মধ্যে বেশ প্রভাব ফেলেছে মারণ ভাইরাস। সেখানে ৪৩ জন চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে। সাধারণ চোখে সংখ্যাটা মাত্র ৭১৯ জন দেখালেও ভারতের মত দেশে এই সংখ্যাটা খুবই বিপজ্জনক এই কারনে যে ২০১৭ সালের হিসাব অনুযায়ী আমাদের দেশে প্রতি হাজার জনে দেড়জনও (১.৩৪জন) চিকিৎসক নেই । আর প্রয়াত চিকিৎসকদের অনেকেই বিভিন্ন বিষয়ে বিশেষজ্ঞ ছিলেন যার অনুপাত আমাদের দেশে আরও কম।
গত ৭ জুন ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্য়াসোসিয়েশনের তরফ থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে একটি চিঠি পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসক সহ চিকিৎসার সঙ্গে যুক্ত সমস্ত কর্মীদের সুরক্ষার জন্য তাঁর হস্তক্ষেপের আবেদন জানানো হয়। ওই চিঠিতে আইএমএ-র তরফ থেকে, কর্মক্ষেত্রে সুস্থ পরিবেশ নিশ্চিত করার আবেদনও জানান। এবং সেই পরিবেশে যাতে চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা নির্ভয়ে কাজ করতে পারে।
আইএমএ এও উল্লেখ করেছে যে, করোনার জেরে ২০২০ থেকে ভারতে ১ হাজার ৪০০ জনেরও বেশি চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে। এই তথ্য থেকেই স্পষ্ট যে করোনা মহামারি কতটা প্রভাব বিস্তার করেছে দেশে। যার চোখরাঙানি থেকে রেহাই পায়নি চিকিৎসকরাও। হাজারেরও বেশি চিকিৎসেকর মৃত্যু তারই প্রমাণ। মনে রাখতে হবে এই চিকিৎসকরা করোনার চিকিৎসা করছিলেন নতুন সৃষ্ট হওয়া একটা ভাইরাসের বিরুদ্ধে যা কিনা আজ কিংবা কাল কিংবা কয়েক বছর পর তার শক্তি হারাবে ।
ওই চিকিৎসকরা আদতে যে বিষয়ে বিশেষজ্ঞ ছিলেন কিংবা সাধারণ চিকিৎসক যাই হোন না কেন করোনা উত্তর জীবনে তাঁদের অভাব অনুভূত হবে প্রতি পদে পদে।শুধুই চিকিৎসক নয় এই সময়ের মধ্যে আমরা হাজারেরও বেশি প্রশিক্ষিত নার্স আর স্বাস্থ্যকর্মীদের হারিয়েছি। সব মিলিয়ে করোনা আমাদের ভবিষ্যতের চিকিৎসা দুনিয়ায় একটি স্থায়ী ক্ষত সৃষ্টি করে যাচ্ছে।