নিউজ ডেস্ক: গতবছর করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কন্টেনমেন্ট জোন কিংবা বাফার জোন শব্দগুলো শোনা গিয়েছিল। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের পূর্বে এই শব্দগুলো যেন হারিয়ে গেছিল। প্রথম ঢেউয়ের শেষের দিকে সেই আলগা হয়ে যাওয়া রাশের ফাঁক দিয়েই আছড়ে পড়েছিল করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। এবার বোধহয় সেই অভিজ্ঞতা মাথায় রেখে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের পড়তি বেলায় সতর্ক হতে চলেছে রাজ্য। ফের ফিরিয়ে আনা হচ্ছে কন্টেনমেন্ট বা মাইক্রো কন্টেনমেন্ট জোন।
রাজ্যে করোনা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতির মুখে এবছর চলতি তৃতীয় দফার লকডাউনে কিছুটা ছাড় দিয়েছে রাজ্য।সরকারি গাইডলাইন মেনে রেঁস্তোরা,শপিং মল খুলছে।বাজার ও অন্যান্য দোকান খোলার সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে।এক্ষেত্রে সংক্রমণ বেড়ে যাবার সম্ভাবনা বেশি থেকে যায়।এবিষয়গুলি নজরে রেখে করোনাকে রুখতে এবার কড়া পদক্ষেপ নিতে চলেছে রাজ্য। কনটেনমেন্ট জোন, প্রয়োজনে মাইক্রো কনটেনমেন্ট জোন করে কড়া হাতে করোনা মোকাবিলায় জোর দিতে চাইছে রাজ্য সরকার।
এই বিষয়ে মঙ্গলবার রাজ্যের সব জেলাশাসক ও কলকাতা পুরনিগমের কমিশনারকে চিঠি দিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। মুখ্যসচিব তাঁর চিঠিতে স্পষ্ট জানিয়েছেন, স্থানীয়ভাবে কোথায় কোথায় হটস্পট হচ্ছে, তা খুঁজে বের করতে হবে।কনটেনমেন্ট জোন বা মাইক্রো কনটেনমেন্ট জোন করে নজরদারি চালাতে হবে। সেই সঙ্গে ওই সব সন্দেহজনক এলাকায় করোনা পরীক্ষা, ট্রেসিংয়ের কাজও খুব তাড়াতাড়ি করতে হবে। তবে রাজ্যে করোনা সংক্রমণ কমিয়ে আনা সম্ভব।
মুখ্যসচিব তাঁর চিঠিতে লিখেছেন, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে সংক্রমণ কম হলেও সতর্ক থাকা প্রয়োজন। সমস্ত জেলাগুলিকে কনটেনমেন্ট জোন খুঁজে বের করতে হবে।আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত রাজ্যে কড়া বিধিনিষেধ চলবেই। তবে ১৬ জুন থেকে আরও কিছুটা ছাড় দেও্য়া হলেও এখনও রাজ্যের তরফে ট্রেন, বাস চালু রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। আগের মতো স্টাফ স্পেশাল ট্রেন চালু থাকবে। সেইসঙ্গে খুচরো বাজার ও অন্যান্য দোকান খুলে রাখার ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে রাজ্য সরকার। পাশাপাশি নির্দিষ্ট সময়সীমা মেনে রেস্তোরাঁ ও পানশালা খুলে রাখার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
তবে শুধু কড়া বিধি নিষেধ জারি করলেই যে রাজ্যে করোনা সংক্রমণের হার কমবে না, সেকথা বিলক্ষণ জানে রাজ্য সরকার। তাই রাজ্যে যাতে করোনার তৃতীয় ঢেউ থাবা বসাতে না পারে, সেজন্য আগাম সতর্কতা নেওয়ার ওপর জোর দিল নবান্ন। ইতিমধ্যেই করোনার তৃতীয় ঢেউ সম্পর্কে বিশ্বের সমস্ত দেশকেই সতর্ক করা হয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে। ভারতেও বিভিন্ন রাজ্য নিজের মত করে প্রস্তুতি নিচ্ছে তৃতীয় ঢেউয়ের বিরুদ্ধে। সেই ঢেউকে আছড়ে পড়া থেকে যত প্ৰৱলম্বিত করা যাবে ততই সুবিধা। সেই লক্ষ্যেই এই সাবধানতা বলে জানা যাচ্ছে।