নিজস্ব সংবাদদাতা: বিধানসভা উপনির্বাচনে জয় এসেছে অনায়াস কিন্তু সেই জয় একান্তই প্রদীপ সরকারের, তৃনমূল কংগ্রেসের নয়। পুরসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে দলকে তাই আরও শক্তিশালী করার জন্য ‘সব্বাই’ কে ঘরে ফেরানোর উদ্যোগ নিল খড়গপুর শহর তৃনমূল কংগ্রেস। শহর কংগ্রেসের নিজস্ব অনুধাবন, বিজেপির হাত থেকে খড়গপুর সদর বিধানসভা ছিনিয়ে নেওয়ার পেছনে কাজ করেছে পুরসভা চেয়ারম্যান তথা সদ্য নির্বাচিত বিধায়ক প্রদীপ সরকারের নিজস্ব ‘টিম’ যা দলের ভেতরে ও বাইরের লোকেদের দ্বারা সংগঠিত হয়েছিল এর সঙ্গে দলীয় সংগঠন হিসাবে শহর কংগ্রেসের কোনও কৃতিত্ব নেই।
দলের আরও উপলব্ধি যে, সদ্য হয়ে যাওয়া উপনির্বাচনেও দল যে ঐক্যবদ্ধ ভাবে লড়াইটা লড়তে পারেনি তার অজস্র প্রমান মিলেছে। বিধানসভায় জয় সহজ হয়েছে পাঁচবেড়িয়া সংলগ্ন তিনটি আসনে প্রায় ১৪হাজারের ‘সন্দেহজনক’ লীডে । আর এসবই টিম প্রদীপ সরকারের নিজস্ব কৃতিত্ব। পুরসভা নির্বাচনে এই অঙ্ক কাজ করবেনা ধরে নিয়েই তাই ফের একবার ‘সব্বাই’কে ঘরে ফেরানোর উদ্যোগ শহর তৃনমূল কংগ্রেসের।
রবিবার খড়গপুর সদর বিধানসভার “বাংলার গর্ব মমতা”কর্মসূচী তৃতীয় পর্ব “স্বীকৃতি সম্মেলন” আক্ষরিক অর্থেই সেই কাজ শুরু করে দিল। বিধানসভা স্তর থেকে শুরু করে বুথ স্তর পর্যন্ত তৃণমূলের পুরনো দলীয় কর্মীদের আহ্বান জানানো হয়েছিল এই কর্মসূচীতে। পাশাপাশি এদিন বেশ কয়েকজন কর্মীকে সংবর্ধনার জানানোর মধ্যে দিয়ে দলের বাকি অংশকে উৎসাহিত করাই ছিল এই ‘স্বীকৃতি’ প্রদান। সব মিলিয়ে ৪৪ জন দলীয় কর্মীকে এই সংবর্ধনা তথা স্বীকৃতি প্রদান করা হয়।
বিধায়ক প্রদীপ সরকার জানিয়েছেন,” সংকট সময়ে দলের সঙ্গে ছিলেন, দল গঠনের গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছেন এমন ৪৪জনকে আমরা বেছে নিয়েছি যার মধ্যে ৩৫জন উপস্থিত হয়েছিলেন। বাকিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁদের সম্মাননা দেওয়া হবে। আমরা এঁদের আবেদন করেছি আপনারা আবারও উদ্যোগী ভূমিকা নিন, দল আপনাদের পরামর্শ চাইছে।” খড়গপুর শহর সভাপতি রবিশংকর পান্ডে জানিয়েছেন ১০ই মে ‘বাংলার গর্ব মমতা’র পরবর্তী কর্মসুচী গ্রহন করা হবে।”
যদিও এই স্বীকৃতি নিয়ে দলের একটি স্তরে আড়ালে উষ্মাও প্রকাশ করা হয়েছে। যে ৪৪জনকে স্বীকৃতি প্রদান করা হল তার মধ্যে খড়গপুর শহরের যুব তৃণমূল সভাপতি গৌতম চৌবে খুনে অভিযুক্ত মনু সিং ও কৌশিক চক্রবর্ত্তী ছিলেন। কৌশিক অবশ্য আদালতে সসম্মানে আভিযোগ মুক্ত হলেও মনু সিং হাইকোর্টের রায়েও সাজা প্রাপ্ত হন এবং বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টের আদেশে জামিনে রয়েছেন। গৌতম অনুগামীদের যে অংশ এখনও তৃণমূলে রয়ে গেছে তাঁরা এই সম্মান প্রদান মেনে নিতে পারছেনা। অবশ্য তাঁদের কটাক্ষ গৌতম হত্যাকান্ডে মূল অভিযুক্ত রামবাবুই যেখানে তৃণমূল হয়ে গেছেন এবং শহর নেতাদের একাংশের সমর্থন পেয়েছেন তখন ‘মনু’তে মান করে লাভ কি? দল তো এখন ‘সব্বাই’য়ের।