নিজস্ব সংবাদদাতা: করোনার তৃতীয় ঢেউ সব চেয়ে নাকি আঘাত হানবে শিশুদের ওপর! বলা হচ্ছে প্রথম ঢেউয়ে সর্বাধিক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখিন হয়েছিলেন প্রৌঢ় ও বৃদ্ধরা। দ্বিতীয় ঢেউ কেড়ে নিয়েছে অধিক পরিমান যুবক-যুবতীদের প্রাণ, এবার শৈশব ও কৈশোরের পালা। কারন হিসাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছিল, প্রথম ঢেউয়ের অভিঘাত সম্পর্কে কিছু বুঝে ওঠার আগেই তা ঝাঁপিয়ে পড়ে। সেই ঢেউয়ের ধাক্কা সামাল দিতে পারেননি প্রৌঢ় ও বৃদ্ধরা। করোনার টিকা আসার পর প্রথমেই তার প্রয়োগ শুরু হয়েছিল ৫০ বছর ও তার ঊর্ধ্বের মানুষদের দিয়ে। ফলে বয়স্কদের কিছু অংশের মধ্যে প্রতিরোধ তৈরি হয়।
তাছাড়া প্রথম ঢেউ থেকে শিক্ষা নিয়ে প্রৌঢ় ও বয়স্করা সাবধান হয়, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নিজেদের ঘরবন্দি করে ফেলেন তাঁরা। পরিবর্তে জীবন জীবিকার তাগিদে, সংসার চালাতে সামনে সারিতে আসতে হয় যুব সম্প্রদায়কে অথচ তখনও ১৮ থেকে ৪৫ অবধি টিকাকরন শুরু হয়নি। সম্প্রতি দেশে ১৮-৪৫ টিকাকরনের কাজ শুরু হয়েছে। অগ্রাধিকার পাচ্ছেন সুপার স্প্রেডার বা বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত ব্যক্তিরা। ফলে বৃহত্তর যুব সমাজ যাঁরা পেশার তাগিদে, পঠন-পাঠনের তাগিদে বাড়ির বাইরে তাঁরা প্রতিষেধকের আওতায় চলে আসছেন। বাকি থেকে যাচ্ছে শিশু কিশোররা। তৃতীয় ঢেউয়ে তাই এঁদেরই আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা বেশি।
এই শৈশব আর কৈশোরকেই এবার টিকাকরনের আওতায় আনার কাজ শুরু করে দিলেন দেশের বিজ্ঞানী ও বিশেষজ্ঞরা। শুরু হয়েছে ২-১৮বছর বয়সীদের ভ্যাকসিন ট্রায়ালের কাজ। ড্রাগস কন্ট্রোলার জেনারেল অব ইন্ডিয়ার(DCGI) সবুজ সংকেত পেতেই ট্রায়ালের কাজ শুরু করল দিল্লি এইমস। কাজটা অবশ্য ৭দিন আগেই শুরু করেছিল পাটনা এইমস (AIMS)। গত ১ জুন ২-১৮ বছর বয়সিদের উপর কোভ্যাক্সিনের ট্রায়াল শুরু করেছিল পাটনা এইমস। এবার, দিল্লি এইমস-এও শুরু হচ্ছে অল্পবয়সিদের মধ্যে কোভ্যাক্সিনের ট্রায়াল।
এএনআই সূত্রে খবর, সোমবার থেকেই এই ট্রায়ালের জন্য ২-১৮ বছর বয়সি শিশুদের বেছে নেওয়ার কাজ শুরু করেছে দিল্লি এইমস। ড্রাগস কন্ট্রোলার জেনারেল অব ইন্ডিয়ার(DCGI) সবুজ সংকেত পেতেই ট্রায়ালের কাজ শুরু করল দিল্লি এইমস। গত মাসে ২-১৮ বছর বয়সিদের উপর কোভ্যাক্সিনের ট্রায়ালের রেকমেন্ডেশন দেয় একটি সাবজেক্ট এক্সপার্ট কমিটি। কয়েকটি পর্যায়ে ট্রায়াল ভ্যাকসিনেশনের পর নিবিড় পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষণ নির্রীক্ষনের পর সফলতার গুণমান বিচার ও শুন্য পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নিশ্চিত করার পরই শুরু হবে টিকাকরনের কাজ যাতে কয়েক মাস লেগে যাবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
জানা গেছে এবছরই ১২ মে তাতে সায় দেয় DCGI করোনার দ্বিতীয় ঢেউ চলাকালীনই নজরে পড়ে যে আগের তুলনায় শিশুদের মধ্যে সংক্রমণের আশঙ্কা বাড়ছে। তাই, ঝুঁকি না নিয়ে দ্রুত শিশুদের টিকাকরণের প্রস্তুতির পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। প্রসঙ্গত, বিশ্বে এই কাজটি ৫দিন আগেই শুরু করে দিয়েছে ফ্রান্স। গত ২ জুন ১২-১৮ বছর বয়সীদের টিকাকরণ শুরু করেছে ওই দেশ। সে দেশে প্রথমে ১২ থেকে ১৮ এবং পরে ৬ থেকে ১২ এই ভাবে এগুতে চাইছে তারা। ফ্রান্সের ঘোষণা নো ভ্যাকসিন, নো স্কুল অর্থাৎ প্রতিষেধক ছাড়া স্কুলে যাওয়া যাবেনা। তাই সে দেশের সমস্ত স্কুল পড়ুয়াকেই পর্যায় ক্রমে আনা হচ্ছে টিকাকরনের আওতায়। ছবি-নেট দুনিয়া