নিজস্ব সংবাদদাতা: ইয়ু ব্লাডি বাস্ট….! অনলাইন ভার্চুয়াল ক্লাশে এক অধ্যাপিকা ছাত্রছাত্রীদের এমনই কদর্য গালাগালি করার ভিডিও ফুটেজ ছড়িয়ে পড়েছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়। আইআইটি খড়গপুরের (IIT Kharagpur) মত সনামধন্য প্রতিষ্ঠানের এক অধ্যাপিকার এ হেন আচরণে গর্জে উঠেছিলেন পড়ুয়ারা। এমনকি আইআইটির প্রাক্তনীরাও প্রতিবাদ করেছিলেন। পড়ুয়া মহল ছাড়াও বিভিন্ন মহল থেকে দাবি উঠেছিল ওই অধ্যাপিকাকে বরখাস্ত করার। পুরোপুরি সেই দাবি এখুনি মানা না হলেও আপাতত সাময়িক ভাবে বরখাস্ত করা হল সেই অধ্যাপিকা সীমা সিংকে। আইনি পদক্ষেপ শুরু হলে গ্রেপ্তারও হতে পারেন ওই অধ্যাপিকা।
আইআইটি খড়গপুরের (IIT Kharagpur) একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, গত এপ্রিলের শেষে অনলাইন ক্লাস চলাকালীন তফসিলি জাতি এবং উপজাতির শিক্ষার্থীদের সম্পর্কে ওই অধ্যাপিকা যে অবমাননাকর মন্তব্য করেছিলেন তারই পরিপ্রেক্ষিতে ওই অধ্যাপিকার বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা পড়েছিল। সেই অভিযোগের সত্যতা যাচাই করার জন্য একটি তদন্তকারী দল গঠন করা হয়। সেই তদন্তকারী দলের প্রাথমিক রিপোর্ট জমা পড়ার পরেই ওই অধ্যাপিকাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। আইআইটির নিয়ম অনুসারে এই সাময়িক বরখাস্ত করার পর সীমা সিংয়ের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত শুরু হবে এবং সেখানে দোষি প্রমাণিত হলে পুরোপুরি বরখাস্ত করা হবে।
উল্লেখ্য এই ভিডিওটি প্রথম প্রকাশিত হতে দেখা গিয়েছে ফেসবুকের ‘আইআইটি কেজিপি কনফেশন’ (IIT KGP confessions) পেজে। তারপরই তা ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায়। যা কিনা শেষ অবধি আইআইটি খড়গপুর (IIT-Kharagpur) প্রাক্তনীদের মধ্যেও প্রকাশিত হয়। ওই ভিডিওতে দেখা গেছিল কলা এবং সমাজবিজ্ঞান (humanities and social sciences) বিভাগের অধ্যাপিকা সীমা সিং একটি প্রস্তুতি ক্লাশ নেওয়ার সময় ওই ‘ব্লাডি বা…’ য়ের মত জঘন্য একটি শব্দ ব্যবহার করছেন। পরে এই ভিডিওটি ভাইরাল হয়ে পড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায়। হৈচৈ পড়ে যায় সারা দেশেই।
এই প্রস্তুতি পাঠ (Preparatory class) দেওয়া হয় সমাজের অনগ্রসর শ্রেণী বলে বর্ণিত তফসিলি জাতি এবং উপজাতি অংশের সেই ছাত্রছাত্রীদের জন্য যাঁরা প্রবেশিকা পরীক্ষায়( JEE Advanced)উর্ত্তীণ হয়ে সরাসরি আইআইটিতে ভর্তি হতে পারেননি। এই প্রস্তুতি পরীক্ষার মাধ্যমে তাঁদের পাঠ দেওয়া হয় যাতে পরের বছর তাঁরা পরীক্ষায় উর্ত্তীণ হতে পারেন।
স্বাভাবিকভাবে বিষয়টি ওই শ্রেণীর বিরুদ্ধে ঘৃণা পোষন বা জাতিবিদ্বেষ বলেও পরিগণিত হতে পারে যা ভারতীয় সংবিধান অনুযায়ী মারাত্মক অপরাধ। ঘটনার খবর জানাজানি হওয়ার পর ওই অধ্যাপিকার বিরুদ্ধে জাতিবিদ্বেষ পোষনের অভিযোগ দায়ের করা হয়। এই ঘটনায় ভারতীয় অপরাধ আইনে গ্রেপ্তার হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে বলে আইনজীবীরা জানিয়েছেন।