নিজস্ব সংবাদদাতা: গাত্রদাহটা খুব ভালো মতই বুঝিয়ে দিলেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি তথাগত রায়। বর্তমান রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে এইট পাশ আর ফিটার মিস্ত্রির সার্টিফিকেট প্রাপ্ত বলে দেগে দিলেন নিজস্ব ট্যুইটে। বাংলায় বিজেপির পরাজয়ের পর দিলীপ ঘোষ সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে ২০০২-২০০৬ সালের রাজ্য সভাপতি কটাক্ষ করে বলেছেন, ‘একজন নিম্ন মানের নেতা যার কোনও আকাঙ্খা তৈরি করার ক্ষমতা নেই, রাজনৈতিক দর্শীতা নেই,বিশ্লেষণের ক্ষমতা নেই, বাংলার মানুষের আবেগ আর ভাবনা নিয়ে কোনও ধারণা নেই সেই রকম একজন এইট পাশ ফিটার মিস্ত্রির সার্টিফিকেটধারী মানুষের কাছ থেকে এর চেয়ে বেশি কী আশা করা যায়?”
আইআইটির সিভিল ইঞ্জিনিয়ার প্রাক্তনি এবং আইনের ডিগ্রি প্রাপ্ত যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক তথাগত রায় পাশাপাশি ব্যাপক চটেছেন দিল্লি থেকে আসা নেতাদের বিরুদ্ধেও। কলকাতার আগরওয়াল ভবন যা কিনা হেস্টিংসয়ে বিজেপির মূল নির্বাচনী কার্যালয় তার ওপর তলায় বসে থাকা এবং ৭ তারা হোটেলের বাসিন্দা কৈলাস, দিলীপ ঘোষ, শিবপ্রকাশ এবং অরবিন্দ মেননকে ‘কেডিএসএ’ বলে উল্লেখ করে বৃহস্পতিবার তথাগতবাবু টুইটে মন্তব্য করেছেন, এঁরাই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহদের নাম পাঁকে টেনে এনেছেন এবং এঁদের জন্যই পৃথিবীর বৃহত্তম দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে। বাংলায় দলের বিধায়ক তিন থেকে ৭৭ হওয়ার ঘটনাকে ‘ইতিবাচক’ বলেই দেখতে চাইছেন বিজেপি নেতারা।
অনেকে অবশ্য বলছেন বাংলায় বিজেপি আসার সম্ভাবনা তৈরি হওয়ার পরই মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার ধারণা নিজের অন্তরে পোষন করেছিলেন তথাগত রায়। যে কারনে ত্রিপুরা আর মেঘালয়ের রাজ্যপাল পদ থেকে সরে এসে ফের বাংলার রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে ওঠেন তিনি কিন্ত তাঁকে প্রার্থীই করেনি দল। তার পেছনে এই চারজনের কলকাঠি ছিল বলে মনে করেই এই বিদ্বেষ উগরে দিয়েছেন তিনি। রায় তাঁর ট্যুইটে প্রার্থী নির্বাচন নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেছেন,”সাত তারা হোটেলে বসে যাঁরা তৃনমূলের আবর্জনাদের প্রার্থী করেছিল তারা এখন দলীয় কর্মীদের গালিগালাজ খেয়ে সেই ঘরে নিজেদের বন্দি করে রেখেছেন। ভাবছেন ঝড় তাঁদের ওপর দিয়ে চলে যাবে।” যদিও প্রার্থী নিয়ে রায়ের ক্ষোভ নতুন কিছু নয়। এর আগে শ্রাবন্তী আদি নায়িকা প্রার্থীদের নগরের নটি বলে কটাক্ষ করেছেন। সবমিলিয়ে দিল্লিতে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব তাঁকে জরুরি তলব করেছেন বলে জানা গেছে।
তৃণমূল থেকে বাছ-বিচার না করে যে ভাবে লোকজনকে দলে টেনে তাঁদের পিছনে টাকা যে খরচ করা হয়েছে তার ভবিষ্যৎ সম্পর্কে তথাগতর রায়ের বক্তব্য, ‘‘তৃণমূলের জঞ্জালগুলো প্রথমেই দল ছেড়ে যাবে। তার পরে বিজেপির আদি কর্মীরা বেরিয়ে যেতে পারেন বলে আমার আশঙ্কা। দলের মধ্যে সংস্কারের লক্ষণ দেখা না গেলে তাঁরাও চলে যেতে পারেন এবং বাংলায় তখনই পার্টিটা শেষ হয়ে যাবে!’’
এখন দলীয় কর্মীরা তৃনমূলের আক্রমনের মুখে জানিয়েও দলের ওই সব নেতার বিরুদ্ধে বিষোদগার করেছেন বিজেপির এই প্রবীণ নেতা। যদিও বিষয়টি নিয়ে সরাসরি মুখ না খুলে বিজেপির বর্তমান রাজ্য সভাপতির বক্তব্য , ‘‘পালিয়ে যাওয়ার রাজনীতি আমি কখনও করিনি। এখনও কর্মী-সমর্থকদের পাশেই আছি। কল্পনার জগতে বসে কেউ কিছু ভেবে নিলে কিছু বলার নেই!’’