নিউজ ডেস্ক: মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিয়েই রাজ্যে করোনা মোকাবেলিয়ায় জোর দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে আরও কড়া নির্দেশিকা জারি করেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিনই তৃতীয়বার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শপথ নেওয়ার পরই তিনি জানিয়ে দেন, করোনা মোকাবিলাকেই তিনি সর্বাধিক প্রাধান্য দেবেন। এরপরেই আর সময় নষ্ট না করে, নবান্নে জরুরি করোনা মোকাবিলা ও নিয়ন্ত্রণ ইস্যুতে বৈঠক ডাকেন মুখ্যমন্ত্রী। সাংবাদিক সম্মেলনে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা করেন তিনি। তার আগেই অবশ্য রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রীকে চিঠিও দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, যেখানে শয্যা বৃদ্ধি, ভ্যাকসিন, অক্সিজেন সংক্রান্ত একগুচ্ছ আবেদন জানান তিনি।
এক নজরে দেখে নেওয়া যাক কী কী নির্দেশ জারি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী:
১- বৃহস্পতিবার থেকে লোকাল ট্রেন চলাচল স্থগিত করা হয়েছে, রাজ্য পরিবহনে ৫০ শতাংশ যাত্রীদের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
২- স্থানীয় রাজনৈতিক এবং ধর্মীয় সমাবেশে নিষেধাজ্ঞা।
৩ – ৫০ শতাংশ ক্ষমতা সহ সরকারী এবং বেসরকারী অফিসে কাজ, বাকিগুলি বাড়ি থেকে কাজ করতে হবে।
৪- করোনার ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজে হকার, ট্রান্সপোর্টার এবং সাংবাদিকদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
৫- প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের হোম ডেলিভারি করা হবে।
৬- শপিং মল, সিনেমা, হল রেস্তোঁরা, বার, স্পোর্টস কমপ্লেক্স, জিম এবং সুইমিং পুল পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া অবধি বন্ধ থাকবে।
৭- মাস্ক বাধ্যতামূলক করা হয়েছে এবং সামাজিক দূরত্ব অনুসরণ করতে হবে। মাস্ক ব্যবহার না করলেই কড়া পক্ষেপ নেবে প্রশাসন।
৮- ৭ মে মধ্যরাত থেকে কলকাতা, অন্ডাল ও বাগডোগরা বিমানবন্দরে প্রবেশের জন্য ৭২ ঘন্টা আগের আরটি-পিসিআর নেগেটিভ রিপোর্টের প্রয়োজন হবে। রিপোর্ট না থাকলে
৯-বাজার খোলার সময় নির্দিষ্ট করা হয়েছে। বাজারগুলি সকাল ৭ টা থেকে সকাল ১০ টা এবং পরে বিকেল ৫ টা থেকে অবধি ৭ টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। জুয়েলারির দোকানগুলি ১২ টা থেকে ৩ টা পর্যন্ত খোলা থাকার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। ব্যাংকগুলি সকাল ১০ টা থেকে দুপুর ২ টা পর্যন্ত খোলা থাকার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
পাশাপাশি, আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্বভার গ্রহণ করার পরেই কোভিড পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিভিন্ন পদক্ষেপের আর্জি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। চিঠিতে ভ্যাকসিন , অক্সিজেন ও জরুরী ওষুধের জোগান বাড়াতে তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানিয়েছেন। এই মুহূর্তে রাজ্যে প্রতিদিন ১০ হাজার রেমিডিসিভির প্রয়োজন, তার জোগানের ব্যবস্থা করতে প্রধানমন্ত্রীকে মুখ্যমন্ত্রী আবেদন জানিয়েছেন। বর্তমানে টিকার যোগান পর্যাপ্ত না হওয়ায় ১৮ বছরের বেশি বয়সীদের সকলকে টিকা দেওয়ার বিষয়টি অবাস্তব হয়ে উঠছে বলে দাবী করে চিঠিতে পর্যাপ্ত প্রতিষেধক রাজ্যকে সরবরাহের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ জানানো হয়েছে। রাজ্যে অক্সিজেনের বিপুল চাহিদা থাকা সত্ত্বেও এরাজ্যে উৎপাদিত অক্সিজেন ভিন রাজ্যে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে চিঠিতে কিছুটা উষ্মা প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। এরপরই রাজ্যে করোনা রুখতে নতুন নির্দেশিকা জারি করেন মুখ্যমন্ত্রী।