নিজস্ব সংবাদদাতা: করোনার দৈনিক সংক্রমনে শেষ অবধি ট্রিপল সেঞ্চুরি করে আরও বাড়তি ৩১ যুক্ত হল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার তালিকায়। ২৩ এপ্রিল আরটি/পিসিআর পরীক্ষায় ২১০ জনের পজিটিভ ফল এসেছে। অন্যদিকে আ্যন্টিজেন পরীক্ষায় ৮৬ এবং ট্রুন্যাট পরীক্ষায় ৩৫ জনের পজিটিভ আসায় সর্বকালের রেকর্ড ছাপিয়ে জেলার মোট দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৩১ জনে। জেলার যখন এমনই হাল তখন সংক্রমন বাড়তির হার বজায় রেখেছে খড়গপুর। আশেপাশের এলাকা ধরে খড়গপুর শহর একাই সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছে। অন্যদিকে মেদিনীপুর শহর হাফ সেঞ্চুরি পেরিয়ে এদিন ৫৫জন আক্রান্তকে নিয়ে।
খড়গপুর শহরের মোট আক্রান্তের ৩৪ জনই রেলকর্মী অথবা তাঁদের পরিজন। আইআইটি খড়গপুর সূত্রে আক্রান্ত হয়েছেন ১২জন। রেল বহির্ভূত শহর এলাকায় আক্রান্ত প্রায় ৪০জন। অন্যদিকে খড়গপুর শহর লাগোয়া গ্রামীন খড়গপুর অংশে আক্রান্ত হয়েছেন ১২ জন। খড়গপুর শহরের মালঞ্চ ও ভবানীপুর এলাকা থেকে সর্বোচ্চ সংক্রমনের খবর পাওয়া গেছে। এই এলাকা থেকে ৬ জন করে আক্রান্ত হয়েছেন। ইন্দা এলাকার ইন্দা, রামকৃষ্ণপল্লী, বিদ্যাসাগরপুর, বামুনপাড়া মিলিয়ে আক্রান্ত ৬ জন। দেবলপুরে একটি পারিবারিক সংক্রমন সহ আক্রান্ত ৫। রবীন্দ্রপল্লী এলাকায় আক্রান্ত হয়েছেন ৪ জন। একাধিক আক্রান্তের খবর এসেছে তালবাগিচা, গোলবাজার, খরিদা, ডিভিসি ও প্রেমবাজার থেকে। একজন করে আক্রান্তের খবর এসেছে ছোট আয়মা, কৌশল্যা, তলঝুলি, নিমপুরা থেকে। আক্রান্তদের ১০ জন আইআইটি ক্যাম্পাসের বাসিন্দা।
রেল এলাকার বাসিন্দারা ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছেন রেল সেটেলমেন্টের ট্রাফিক, নিমপুরা, নিউ আর ওল্ড সেটেলমেন্ট, ডেভলাপমেন্ট, মথুরাকাটি ছাড়াও শহরের বিভিন্ন অংশে। শহরের বাইরে গ্রামীন খড়গপুর অংশের মাদপুর, শ্যামরাইপুর, বেনাচালি, চিত্রিপুর, দিগড়া, শ্যামেশ্বরপুর, হরিয়াতাড়া এবং সতকুই বিডিও অফিস থেকে আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে। কলুয়াতে পারিবারিক সংক্রমনে চারজন আক্রান্ত হয়েছেন।
মেদিনীপুর শহর ও শহরতলিতে এদিন আক্রান্ত ৫৫ জন। এরমধ্যে শহরে বসবাসের নির্দিষ্ট ঠিকানা উল্লেখিত হয়নি এমন আক্রান্তের সংখ্যা ২৪ জন। বাকি আক্রান্তদের একাধিক জন রয়েছেন রবীন্দ্রনগর, মিত্রকম্পাউন্ড, বড়বাজার, হবিবপুর এলাকার। একজন করে আক্রান্ত মিলেছে বার্জটাউন, সিপাহীবাজার, কুইকোটা,তাঁতিগেড়িয়া, মির্জাবাজার, রাজারবাগান, নজরগঞ্জ,শরৎপল্লী, গোলকুয়াচক, পাটনাবাজার, নবীনাবাগ, কেরানিতলা, ক্ষুদিরামনগর এলাকা থেকে। মেদিনীপুর সদর ব্লকের ভুতগেড়িয়া থেকে এক আক্রান্তের সন্ধান পাওয়া গেছে।
মেদিনীপুর মহকুমার গড়বেতার তিনটি ব্লক, শালবনী ও কেশপুর মিলিয়ে প্রায় ২৮ জন আক্রান্ত। শালবনীর ভাদুতলা ও পড়াডিহা ছাড়াও ৩ আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে ট্যাঁকশাল কলোনি থেকে। কেশপুরের বিরবিরা ও আনন্দপুরের বুড়াপাটে একজন করে আক্রান্ত। গড়বেতা সদর ছাড়াও ওই থানার গুইয়াদহ, দুর্লভগঞ্জ, অপর্ণাপল্লী, দ্বারিগেড়িয়া, আমলাগোড়া, লাপুরিয়া, ঝাড়বনী, তালবেতা, পাথরথি, ভিখনগর, রঘুনাথবাড়ি থেকে আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে। গোয়ালতোড় থানার কাদাসোলে একই পরিবারের তিনজন ছাড়াও কদমডিহা, বাঘপিছলা, কেয়ামাচা, আমজোড়ে একজন করে আক্রান্ত হয়েছেন।
খড়গপুর মহকুমার ডেবরা এলাকায় ১২ জন আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে ভগবানবসান, গোস্বামীচক, ইয়ারপুর, হামিরপুর, রাধামোহনপুর, হরিহরপুর, কল্যাণপুর, দাবাদাড়ি, বালিচক, ধামতোড়, জালিমান্দা কালিকাদি, বৈতা,
ভগীরথপুর, এবং অর্জুনির সুলকুটিয়া থেকে।
বাগদা মোহনপুর এলাকার সাউটিয়া ও আশুরা গ্রামে ২জন করে আক্রান্ত, বোড়াই গ্রামে একই পরিবার সহ আক্রান্ত ৫ জন। একজন করে আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে শ্রীচন্দনপুর, সিঙ্গারুই, বাগদা, শ্যামবাগ, মাথারিবাড়, বেলাবারুনিয়া থেকে। বেলদা ও নারায়নগড় মিলিয়ে আক্রান্তের খবর পাওয়া গেছে ছোট চালতা, খালিনা, মহম্মদপুর, দেউলিয়াচক লোহাবরণ, দুরিয়া, তুতরাঙা, অভিরামপুর, বেঙ্গদা, নতুন বাজার এলাকা থেকে। দাঁতনের চাউলিয়ায় ২জন ও ভবানীপুরে ৩ জন ছাড়াও কৃষ্ণপুরে আক্রান্ত মিলেছে।
ঘাটাল মহকুমায় সব মিলিয়ে আক্রান্ত প্রায় ৭০ জন। এরমধ্যে ঘাটালেই আক্রান্তের সংখ্যা বেশি, প্রায় দু-ডজন মানুষ করোনাগ্রস্ত। কাতান নিমতলাতেই আক্রান্ত হয়েছেন ৫ জন। কুশপাতা এবং কুরানে ২জন করে আক্রান্ত। আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে গম্ভীরনগর, আলমগঞ্জ, কোন্নগর, মোহনপুর, নিশ্চিন্দিপুর, বেলেপুকুর, পান্না, অজবনগর, মনোহরপুর, বৈকুণ্ঠপুর ইত্যাদি এলাকায়।
চন্দ্রকোনা থানার বেলেডাঙ্গাতেই আক্রান্ত ৫ জন। বাকি আক্রান্তরা রয়েছেন ছোটমুঈদা, কদমতলা, সালঝাট, রামজীবনপুর, শ্রীনগর, সতিতেঁতুল, লালডাঙ্গা, আধারিয়া এলাকায়। দুই দাসপুর মিলিয়েও আক্রান্তের সংখ্যা দুডজনের কাছাকাছি। সেকেন্দারি থেকে ৪ আক্রান্তের খবর মিলেছে। এছাড়াও রাজনগর, কলোড়া, রাধকান্তপুর, খেপুত, পদমপুর, বালিতোড়, নন্দনপুর, বৈদ্যনাথপুর, সুরতপুর, বারান্দি, পাঁচগেছিয়া, সিংহচক, আলিপুর, বাসুদেবপুর, জগন্নাথপুর চেতুয়া, গোবিন্দনগর, সিতাপুর, কাশীনাথপুর, বয়লা, কালিজুবড়ি ইত্যাদি এলাকায় এক বা একাধিক ব্যক্তি আক্রান্ত হয়েছেন।