নিউজ ডেস্ক: মালদায় মিঠুনের রোড শো-তে উপচে পড়ল ভিড়, নেই মাস্ক, বালাই নেই সামাজিক দুরত্ব বিধি মানার। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশিকা উপেক্ষা করেই এমন অনিয়মের কারণে উদ্যোক্তাদের বিরুদ্ধে এফ আই আর-এর নির্দেশ জেলা প্রশাসনের। ৫০০-র বেশি লোকের জমায়েত হয়েছে; নির্বাচন ও কোভিড বিধি ভঙ্গ হয়েছে, মিথুন ও বিজেপির বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী, জানানো হবে, প্রতিক্রিয়া সৌগত রায়ের।
কোভিড পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে রাজ্যে শেষ দু’দফা ভোটের আগে নতুন করে কয়েকটি নির্দেশিকা জারি করে নির্বাচন কমিশন। তারা জানিয়েছে, আর রোড শো, পদযাত্রা করা যাবে না। সাইকেল, বাইক, গাড়ি নিয়ে কোনও র্যালিরও অনুমতি দেওয়া হবে না। সাইকেল, বাইক কিংবা গাড়ির র্যালির জন্য আগাম অনুমতি নেওয়া হয়ে থাকলে, তা বাতিল করা হবে। জনসভার জন্য নেওয়া আগাম অনুমতিও বাতিল। পর্যাপ্ত জায়গা থাকলে এবং সোশাল ডিস্ট্যান্সিং-সহ যাবতীয় কোভিড বিধি মানা সম্ভব হলে, তবেই সর্বোচ্চ ৫০০ জনকে নিয়ে সভার অনুমতি দেওয়া হবে। শুক্রবার নির্বাচন কমিশনের এই হলফনামা গ্রহণ করেছে কলকাতা হাইকোর্ট।
শুক্রবারের পর শনিবারই মালদার বৈষ্ণবনগরে মিঠুনের সভায় উপচে পড়ল ভিড়। কমিশনের নির্দেশিকার পরেও এই ঘটনা; দূরত্ববিধি না মানার অভিযোগ। এই বিষয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। তিনি বলেন, নির্বাচনী বিধি ও কোভিড-বিধি ভঙ্গের জন্য মিঠুন ও বিজেপির বিরুদ্ধে ব্যবস্থাগ্রহণের আর্জি জানানো হবে। যদিও ইতিমধ্যেই উদ্যোক্তাদের বিরুদ্ধে এফআইআর করার নির্দেশ দিয়েছেন জেলাশাসক।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার কলকাতা হাই কোর্টে তীব্র ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয় নির্বাচন কমিশনকে। করোনা আবহে নির্বাচনী প্রচার বন্ধের মামলায় কমিশনের ভূমিকায় চুড়ান্ত অসন্তোষ প্রকাশ করে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি বলেন, “সার্কুলার নয় আমরা কমিশনের কাছে পদক্ষেপ চাইছি। আমরা অর্ডার দিতে পারছি না কারণ রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি কোর্টে নেই। প্রয়োজনে আমরা টি এন শেসনের কাজ করব।” এরপরই ঘুম ভাঙে কমিশনের, জারি করা হয় একাধিক নির্দেশিকা। তবে এরপরেই শুক্রবার বিকেলে রাজ্য নির্বাচন আধিকারিক এবং জেলা প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে জরুরি বৈঠক ডাকে কমিশনের ফুল বেঞ্চ। সূ্ত্রের খবর, ভিডিও বৈঠকে প্রথমেই জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের কাছে কমিশনের কর্তারা জানতে চান, পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচন শুরু হওয়ার আগে অতিমারী আইন কঠোরভাবে লাগু করার জন্য যে নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছিল, তা কেন লাগু করা হয়নি? সেই কারণেই আদালতে কমিশনকে ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয়েছে বলেও মন্তব্য তাদের।
মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুশীল চন্দ্র বলেন, “যারা যারা নির্বাচনী প্রচারে কোভিড বিধি মানছেন না তাদের বিরুদ্ধে এফএইআর করুন। সেই সমস্ত অভিযোগের রিপোর্ট আমাদের পাঠান। আপনারা নিজে কেন কোনও পদক্ষেপ নিচ্ছেন না?” এদিকে মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের তোপের মুখে পড়ে জেগে উঠেছে জেলা প্রশাসনও। সূত্রের খবর, কোভিড বিধি পালন না করার জন্য ইতিমধ্যেই মালদার ৮ জন প্রার্থীকে শোকজ নোটিশ ধরিয়েছে জেলা প্রশাসন। এই একই কারণে বীরভূমের ৬ জন প্রার্থীর বিরুদ্ধে এফআইআর করেছে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসন।