নিউজ ডেস্ক: করোনায় চারদিন আগে প্রাণ গিয়েছিল স্বামীর। সেই করোনার বলি হলেন শিলিগুড়ির বিশিষ্ট বাচিক শিল্পী মিতালী বিশ্বাস। স্বামী দেবাশিসের মৃত্যুর কথা জানতেই পারেননি কারন নিজেই করোনায় আচ্ছন্ন ছিলেন।কিন্ত তাঁকেও যে সেই করোনার বলি হয়ে সেই না ফেরার দেশে চলে চলে যেতে হবে কে ভেবেছিল? শেষ অবধি সেই করোনা কেড়ে নিল শিলিগুড়ির অত্যন্ত প্রিয়জন, আদরের মিতালি বিশ্বাসকে। আবৃত্তিকার, সঞ্চালিকা, আকাশবাণী শিলিগুড়ির ঘোষিকা এবং শ্রুতিনাটকে শুধু শিলিগুড়ি নয় সারা উত্তরবঙ্গের পরিচিতি ছিল তাঁর। অগণিত শিল্পী আর সহকর্মী, বন্ধুদের নিয়ে সদালাপী, সদাহাস্যময়ী মানুষটি নেই ভাবতেই পারছেনা শিলিগুড়ি। হাহাকার ছড়িয়ে পড়েছে তাই প্রিয়জনদের মধ্যে। কয়েকদিন আগে করোনা আক্রান্ত হয়ে উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজের রিকু ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। শুক্রবার ভোরে তার মৃত্যু হয়।
এদিকে ক্রমশই করোনার থাবা জাঁকিয়ে বসছে শিলিগুড়ি সহ সারা উত্তরবঙ্গে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে বিপর্যস্ত জনজীবন। শুধু শুক্রবারই মোট ৭৬ জন রোগী করোনা আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে; তারমধ্যে কোভিড ব্লকে রয়েছেন ৬২ জন, রিকু ওয়ার্ডে ৫ জন, আইডি ১ এ তে ৩ জন, মহিলা ও প্রসূতি আইসোলেশনে ৬ জন। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, রিকু ওয়ার্ডের ৩ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
জলপাইগুড়ি শহরেও করোনা পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করেছে। বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন পুরসভার আধিকারিকরা। গত চারদিনে জলপাইগুড়ি শহরে করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৪ জনের। ইতিমধ্যে জলপাইগুড়ি শহর ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় শতাধিক মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে পুরসভার পক্ষ থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি নেওয়ার প্রকৃয়া শুরু করেছে জলপাইগুড়ি পুর কর্তৃপক্ষ। জলপাইগুড়ি পুরসভার প্রশাসনিক বোর্ডের সদস্য সৈকত চ্যাটার্জির নেতৃত্বে প্রত্যেক করোনা আক্রান্ত এলাকায় স্যানিটাইজেশনের কাজ করছেন পুরকর্মীরা। সৈকত চ্যাটার্জি জানান, কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য স্যানিটাইজার স্প্রে মেশিন বাড়ানো হচ্ছে।
এছাড়া করোনা আক্রান্তদের জন্য একটি অ্যাম্বুলেন্স ও শববাহী গাড়ির ব্যবস্থা করা হয়েছে। শহরে চালু করা হচ্ছে সেফহোম। জানান, করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে এখন পর্যন্ত শহরে মৃতের সংখ্যা চারজন। সৈকত চ্যাটার্জি বলেন, প্রতিদিন করোনা সংক্রমণ যে হারে বাড়ছে তা খুবই চিন্তার ব্যাপার। সাধারণ মানুষ অনেকেই শহরজুড়ে অসচেতনভাবে চলাচল করছেন। অনেকেই মাস্কও পড়ছেন না। এজন্য সকলকেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে ও মাস্ক পড়ে চলার অনুরোধ জানান তিনি।