নিজস্ব সংবাদদাতা: অবশেষে মঙ্গলবার থেকে রাজ্যের সমস্ত স্কুল বন্ধ করে দিল সরকার। আপাতত অনির্দিষ্টকালের জন্য এই ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে বলেই জানানো হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না আসা অবধি এই নির্দেশ কার্যকরী থাকবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তিনি আরও জানিয়েছেন, শিক্ষাদপ্তরের সঙ্গে কথা হয়েছে। সেইমত এগিয়ে আনা হচ্ছে গরমের ছুটি। শিক্ষাদপ্তর এ বিষয়ে শীঘ্রই একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করতে চলেছে। খবর আসার পর স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে অভিভাবক ও শিক্ষক শিক্ষিকারা। সরকারের তরফে বোর্ড এবং কাউন্সিলের পরীক্ষা মাথায় রেখেই শুধুমাত্র নবম দশম এবং একাদশ দ্বাদশ শ্রেণীর জন্য স্কুল খুলেছিল সরকার কিন্তু পরিস্থিতি যে দিকে যাচ্ছে তাতে ওই দুটি পরীক্ষা নিয়ে ঘোর অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। ইতিমধ্যেই অনির্দিষ্টকালের জন্য সিবিএসসি পরীক্ষা স্থগিত রাখা হয়েছে
মনে করা হচ্ছে সেই পথে হাঁটতে হতে পারে রাজ্যের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার ভবিষ্যত।
করোনা কালের যাবতীয় রেকর্ড ভেঙে রবিবার, ছুটির দিনেই রাজ্যে আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় সাড়ে ৮ হাজার মানুষ। শুধু কলকাতায় আক্রান্তের সংখ্যা ২হাজার ছড়িয়েছে। সংলক্রমনের এই গতিই বলে দিচ্ছে আগামী দিনে আরও ভয়াবহ রূপ পেতে চলেছে দ্বিতীয় পর্যায়ের এই করোনা ঢেউ। খবর পাওয়া যাচ্ছিল স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকা এমন কী ছাত্রছাত্রীরাও আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছিল। শিক্ষক শিক্ষিকারা দাবি জানাচ্ছিলেন ছুটির। কিন্তু শিক্ষা দপ্তর তাকিয়ে ছিল সরকারের দিকে। এদিকে কেয়ার টেকার সরকার সিদ্ধান্ত নিতে দ্বিধা করছিল। কিন্তু শেষ অবধি জরুরি ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্তেই এল রাজ্য।
মনে করা হচ্ছে দফায় দফায় নির্বাচন ও তাকে ঘিরে প্রচার, মিছিল, মিটিং সমাবেশ বেলাগাম করে দিয়েছে সংক্রমনের গতি। আর তারফলেই প্রতিদিন হাজার-হাজার মানুষ নতুন করে করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন এরাজ্যে। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যু। সংক্রমণ মোকাবিলায় দিশেহারা রাজ্য সরকার। ঘোর উদ্বেগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরিস্থিতি মোকাবিলায় কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে সাহায্যের আবেদন মুখ্যমন্ত্রীর। রাজ্যে পর্যাপ্ত ওষুধ ও ভ্যাকসিন পাঠাতে আবেদন মুখ্যমন্ত্রীর। করোনা আবহে কয়েকমাস আগে অন্য একাধিক রাজ্যের পাশাপাশি এরাজ্যে খুলে যায় স্কুল। তবে কেবলমাত্র নবম, দশম ও একাদশ, দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের নিয়েই চলছিল স্কুলগুলি। করোনার সংক্রমণ এড়াতে কোভিড প্রোটোকল মেনেই এতদিন স্কুল চলছিল রাজ্যে। তবে বর্তমানে পের রাজ্যে চোখ রাঙাচ্ছে করোনা। হু হু করে ছড়াচ্ছে সংক্রমণ। এই পরিস্থিতিতে স্কুল চালু রেখে বিপদ বাড়াতে চায় না সরকার। সেই কারণেই তড়িঘড়ি স্কুল বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নবান্নের।
রাজ্যের তরফে জানানো হয়েছে মঙ্গলবার থেকে বন্ধ থাকবে রাজ্যের সমস্ত স্কুল। করোনা সংক্রমণ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্যের শিক্ষা দফতর। আপাতত গরমের ছুটি এগিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যত দিন পর্যন্ত এই পরিস্থিতি ঠিক না হয়, ততদিন রাজ্যের স্কুলগুলি বন্ধ রাখা হবে বলে জানানো হয়েছে সরকারের তরফে। নির্দেশিকায় স্কুলে আসতে হবে না শিক্ষিকাদেরও। সব সরকারি ও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুল বন্ধ রাখার কথা ঘোষণা হয়েছে। সেই সঙ্গে সব বেসরকারি স্কুলের কাছেও একই আবেদন জানিয়েছে রাজ্য সরকার। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বর্তমান পরিস্থিতির পর্যালোচনা করে গরমের ছুটি এগিয়ে আনার কথা বলা হয়েছে। শিক্ষা দফতরের সঙ্গে মুখ্য সচিবের কথা চলছে। পরবর্তী ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত স্কুল বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।’’