অশ্লেষা চৌধুরী: “যাঁরা বাইরে থেকে আসতে চাইবেন, তাঁদের RT-PCR টেস্ট করার পর বাংলায় পা রাখার অনুমতি দেওয়া হবে,” নির্বাচনী প্রচারে বহিরাগত প্রবেশ রুখতে মমতার বড় পদক্ষেপ। তৃণমূল সুপ্রিমোর দাবী, অন্তত ১০ হাজার মানুষ অন্য জায়গা থেকে এ রাজ্যে এসেছেন। যাঁদের মধ্যে বেশিরভাগই সংক্রমিত। আর এঁদের কারণেই বাংলায় হু হু করে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। তাই ‘বহিরাগত’দের নিয়ে আর কোনও ঝুঁকি নিতে রাজি নন মমতা। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, “এরপর বড় কোনও অঘটন ঘটলে তার জন্য নির্বাচন কমিশনই দায়ী থাকবে।”
গত বেশ কয়েকদিন ধরে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে বাংলার ক্রমবর্ধমান করোনা সংক্রমণ। লাফিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। এমন পরিস্থিতিতে কমিশন ভোট প্রচারে লাগাম টানলেও করোনা রুখতে তা বিরাট কোনও ভূমিকা পালন করতে পারবে কি না, সে নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ সকলের মনেই। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের বাকি চার দফার ভোট একসঙ্গে করানোর দাবিও তুলেছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। কিন্তু কমিশন জানিয়ে দিয়েছে, পূর্ব নির্ধারিত সূচিতেই হবে নির্বাচন। ফলে আগের মতোই চলবে জনসভা, রোড শো। আর সেই কারণেই বাড়ছে চিন্তা।
এদিকে রাজ্যে শেষ ২৪ ঘণ্টায় আরও বেড়েছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। স্বাস্থ্য দপ্তরের রবিবারের দেওয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, ২৪ ঘণ্টায় বাংলায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৮৪১৯ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় মৃত্যু ২৮ জনের। সবমিলিয়ে রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ৬,৫৯,৯২৭।
করোনা মোকাবেলায় ইতিমধ্যেই সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে বেড বাড়ানোর জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে স্বাস্থ্য দপ্তর। উপসর্গ তীব্র হলে তবেই হাসপাতালে, মৃদু উপসর্গ থাকলে প্রয়োজনে সেফ হোমে পাঠানো হবে কোভিড রোগীদের। এছাড়া বেসরকারি হাসপাতালে বেড বাড়ানোর জন্য চার সদস্যের একটি টাস্ক ফোর্স গঠন করেছে রাজ্য প্রশাসন।
এককথায়, করোনা নিয়ে কোনও রকম আর ঝুঁকি নিতে চাইছেন না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তাই স্বাস্থ্য ব্যবস্থার দিকে নজর দেওয়ার পাশাপাশি বাংলায় বহিরাগত প্রবেশের ক্ষেত্রে RT-PCR টেস্ট বাধ্যতামূলক করলেন তিনি। তবে এক্ষেত্রে একটা বিষয় উঠে আসছে, ভোটের মরশুমে বহিরাগতরা এসে বাংলায় রোগ ছড়াচ্ছে। আর সেই কারণেই রাজ্যে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। একাধিক জনসভায় এমন দাবী করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, এর জন্য মোদিকে বিঁধেও অনেক কিছু বলেছেন মমতা। তবে কী শুধুই করোনা রুখতে, না কী বিজেপিকে টাইট দিতে এটিও তাঁর একটি রাজনৈতিক দানের অংশ!