নিজস্ব সংবাদদাতা: সময়ের ডাকে সাড়া দিয়েই নতুন ভাবে নববর্ষ উদযাপন করল খড়গপুর শহরের বিভিন্ন সংগঠন গুলি। উৎসবের আতিশয্যে যেন অতিমারীর মধ্যেও সতর্কতা শিথিল না হয়ে যায় তারই বার্তা দিল খড়্গপুরের বিভিন্ন সংগঠন গুলি। খড়গপুর-খরিদার যতীন মিত্র স্মৃতি রক্ষা কমিটির উদ্যোগে বাংলা নববর্ষ ১৪২৮ উপলক্ষ্যে বৃহস্পতিবার, পয়লা বৈশাখে একটি বর্ণাঢ্য সুসজ্জিত শোভাযাত্রা শহর পরিক্রমা করে। খরিদা মেন রোড থেকে শুরু করে সুভাষপল্লী ঘুরে এসে মিলন মন্দির ক্লাবের সামনে শেষ হয় সেই যাত্রা। অংশ নিয়েছিলেন শ্রমজীবী পাঠশালার ছাত্রছাত্রীরা এবং এলাকার অন্যান্য শিল্পীরা। গান, আবৃত্তি, নৃত্য ও কবিতার মধ্যে দিয়ে নিজ নিজ নিবেদনের মধ্যে দিয়ে চলে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান।
অনুষ্ঠানের অন্যতম উদ্যোক্তা শ্যামল ঘোষ জানান, “গত বছর লকডাউন পরিস্থিতিতে আর্থিক দিক দিয়ে পিছিয়ে পড়া পরিবারের পড়ুয়াদের পড়াশুনার ধারাবাহিকতা বজায় রাখার উদ্দেশ্য নিয়েই শুরু করা হয়েছিল শ্রমজীবী পাঠশালা। কিন্ত কালের আহ্বান জানিয়েছে শুধু পড়াশুনাই এদের জন্য যথেষ্ট নয়। দরকার মানবিক গুনের বিকাশ। সেই লক্ষ্যে কিছু সাংস্কৃতিক কার্যক্রম শুরু করেছি আমরা। নববর্ষে তেমনই একটি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। যেখানে অংশ নিয়েছিলেন শ্রমজীবী পাঠশালার ছাত্রছাত্রী, তাদের অভিভাবক এবং স্থানীয় নাগরিকদের একটি অংশ। এই শোভাযাত্রায় উপস্থিত ছিল। পুরো শোভাযাত্রাটি করোনার নিয়ম বিধি মেনে পালন হয়।”
এই শোভাযাত্রা থেকে সাধারণ মানুষের উদ্দেশ্যে করোনার সচেতনতা এবং নিয়ম বিধি মেনে চলতে আবেদন জানানো হয়। ১লা বৈশাখের সকালে এই শোভাযাত্রা নতুন অনুভূতি এনে দিয়েছিল সংলগ্ন অধিবাসীদের। রাস্তার দুপাশের গৃহস্থ কিংবা পথচারীরা উপভোগ করেছেন এই শোভাযাত্রা। শোভাযাত্রার পাশাপাশি করোনা সচেতনার বার্তা দেওয়া হয় সাধারণ মানুষদের উদ্দেশ্যে। সংগঠকদের মধ্যে ছিলেন কমিটির সম্পাদক কল্যাণ দে,সমাজসেবী অনিল দাস, নূপুর রায় অধ্যাপক-তপন পাল ও সংগঠনের অন্যান্য সদস্যরা।
এদিন বাঙালি নববর্ষের সাংস্কৃতিক আভিজাত্য উপস্থাপন করেছিলেন খড়গপুর শহরের শিল্পী সাহিত্যিকরা। খড়গপুর শহরের সংস্কৃতির পীঠস্থান গোলবাজার দুর্গামন্দিরের এই অনুষ্ঠানে আঞ্চলিক কবিতা পরিবেশন করেন স্বপ্না মজুমদার , অরূপ গোস্বামী। কবিতায় বর্ষবরণের ছন্দে সুজিত কানুনগোর আবৃত্তি আলাদা মাত্রা যোগ করে। নববর্ষের উপল্যক্ষ ব্যক্ত করেন অধ্যাপক অঞ্জন চাকী , কামারুজ্জামান ও কবি সুনীল মাজি। এদিনের অনুষ্ঠানের চমক ছিল ৭বছরের শ্রীহরন মাল বেহালা। তাকে তবলায় সহযোগিতা করেন ডাঃ বারীন্দ্র নন্দ। দেবাশিস মজুমদার। বিভু কানুনগোর সম্পাদনায় সংলাপ নামে দেওয়াল পত্রিকার উদ্বোধন করেন কবি সুনীল মাজি । শিক্ষিকা অনুরাধা সেনের বর্ষবরণের উপলব্ধি মুগ্ধ করে শ্রোতাদের।