নিউজ ডেস্ক: ‘বিজেপির বাংলায় দাঙ্গা বাজেরা চাঁদে পালালেও রেহাই নেই,’ প্রচারে এসে এভাবেই নাম না করে শাসক দলকে হুঁশিয়ারি দিলেন মহাগুরু মিঠুন চক্রবর্তী। পাশাপাশি মমতার সরকারকে কটাক্ষ করে তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের গ্রামে যদি কেউ বিরোধিতা করেন তবে আমরা তাঁকে একঘরে করে রাখি। আর যেই রাজ্য ৪৪ বছর ধরে কেন্দ্রের বিরোধিতা করে গেল সেই রাজ্যের ভালো হবে কী করে।’
মিঠুন চক্রবর্তী সোমবার বেলার দিকে রাহুত বাগান এলাকায় জলপাইগুড়ি সদর বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী সৌজিত সিংহর সমর্থনে প্রচারে আসেন। এদিন তাঁর জনসভায় উপচে পড়ে ভিড়। তিনি তাঁর বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, ‘আমাদের রাজ্যে এর আগে ৩৪ বছর বাম সরকার ছিল। যারা সারাক্ষণ কেন্দ্রের বিরোধিতা করত। আর তারপর ১০ বছর তৃণমূল সরকার যারা বামেদের দেখানো একই পথে চললেন। অর্থাৎ ৪৪ বছর ধরে আমরা ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ালাম। আর ভোটের সময় এসে ললিপপ দেখাচ্ছে। গত ৩ বছর ধরে এই তৃণমূল সরকার প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া কৃষক ভাতা পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গের চাষীভাইদের নিতে দিলেন না। বিজেপি ক্ষমতায় এলে মন্ত্রিসভা গঠনের আগে একসঙ্গে ১৮,০০০ টাকা অ্যাকাউন্টে দেবে।
তিনি আরও বলেন, ‘আজ বড় দুঃখের দিন। শীতলকুচিতে যে পাঁচ জন মারা গেলেন তাঁদের আত্মার প্রতি আমি শ্রদ্ধা জানাই। পাঁচ জন মায়ের কোল খালি হয়ে গেল।’
মমতা ব্যানার্জীর নাম না করে তাঁকে শীতলকুচির ঘটনার জন্য দায়ী করেন এবং তোপ দেগে বলেন, ‘কিসের জন্য হিংসা করছেন। সিংহাসনকে ধরে রাখার জন্য! ওই পাঁচ জন মায়ের কোল কে ভরবে? আমি কথা দিয়ে যাচ্ছি বিজেপি এলে কোনও ঝামেলা হবে না। যদি কেউ দাঙ্গা করে তবে সে পালিয়ে পার পাবে না। চাঁদে লুকিয়ে থাকলে সেখান থেকে টেনে আনব। আমার খেলা এখনও শুরু হয়নি।’
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত শনিবার ভোট শুরু হতেই শীতলকুচির পাঠানটুলিতে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় ১৮ বছরের এক যুবকের। বেলা গড়াতেই ফের উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা। এরপর উত্তেজনা ছড়ায় জোরপাটকি এলাকায়। ১২৬ নম্বর বুথের বাইরে এলোপাথারি গুলি চলার অভিযোগ ওঠে। ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় আরও চারজনের। নির্বাচন কমিশন জানায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের গুলিতে মৃত্যু হয়েছে তাঁদের। গোটা ঘটনায় রিপোর্ট তলব করেছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। কোচবিহারে শীতলকুচিতে গুলিকাণ্ডের পর কড়া পদক্ষেপ করল নির্বাচন কমিশন। আগামী ৭২ ঘণ্টার জন্য কোচবিহার জেলায় কোনও রাজনৈতিক দলের নেতা প্রবেশ করতে পারবেন না। এমন নিষেধাজ্ঞাই জারি করল কমিশন। নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, রাজ্য বা দেশের কোনও রাজনৈতিক নেতা ওই জেলায় আগামী তিন দিন ঢুকতে পারবেন না।