বিশ্বজিৎ দাস: ফের শো-কজ করা হল রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এবার কেন্দ্রীয় বাহিনী (CRPF)কে ঘেরাও কথার বলে নির্বাচন কমিশনের বিরাগভাজন হলেন তৃনমূল নেত্রী। গত ৩ এপ্রিল তারকেশ্বরের জনসভা থেকে মমতার করা একটি মন্তব্যের জেরে তাঁকে নোটিস পাঠায় নির্বাচন কমিশন। তারকেশ্বরে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে বলতে শোনা যায়, ‘শয়তানদের কথা শুনে সংখ্যালঘু ভোট ভাগ হতে দেবেন না’। অভিযোগ তোলেন, ‘বাংলাকে বিজেপি ধর্মের নামে ভাগ করে দিতে চাইছে। বাংলার সংস্কৃতি নষ্ট করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে।’’
মমতার এই মন্তব্যের বিরুদ্ধে কমিশনের দ্বারস্থ হন বিজেপি নেতা তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মুখতার আব্বাস নকভি। তাঁর দাবি ছিল, সংখ্যালঘুদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার বার্তা দিয়ে মমতা নির্বাচনী আচরণ বিধি ভঙ্গ করেছেন মমতা। এবার ‘CRPF ঘেরাও’ মন্তব্য এ মমতাকে দ্বিতীয়বার নোটিস কমিশনের।গত ২৮ মার্চ এবং ৭ এপ্রিল কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী যে মন্তব্য করেছিলেন, তার প্রেক্ষিতে কারণ দর্শানোর নোটিস দিয়েছে কমিশন।
ওই নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে, বাহিনী নিয়ে মমতার মন্তব্য ‘দুর্ভাগ্যজনক’। কেন তিনি এই ধরনের মন্তব্য করলেন? তা ব্যাখ্যা করতে হবে তৃণমূলনেত্রীকে। এবং এই ব্যাখ্যা দিতে হবে ১০ এপ্রিলের মধ্যে। অর্থাৎ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মুখ্যমন্ত্রীকে কমিশনের নোটিসের জবাব দিতে হবে।
প্রসঙ্গত, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে শুরু থেকেই সরব। তাঁর অভিযোগ, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের চাপে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা বাংলার নির্বাচনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে।তৃণমূল ভোটারদের ভয় দেখানো হচ্ছে। বিশেষ একটি রাজনৈতিক দলকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে বাহিনী।
গত ৭ এপ্রিল কোচবিহার উত্তরের সভায় তৃণমূল নেত্রী কেন্দ্রীয় বাহিনী ভোট প্রভাবিত করতে এলে তার পালটা দেওয়ার পরামর্শ দেন মহিলা ভোটারদের। তাঁকে বলতে শোনা যায়, “কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা অশান্তি করতে এলে একদল ওদের ঘিরে ফেলুন। আরেক দল ভোট দিতে যান। কারা এই কাজ করছে, তাদের নাম লিখে রাখুন।” যদিও প্রথম নোটিশ প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য ছিল, তাঁকে ১০টা নোটিশ পাঠিয়েও রুখতে পারবেনা কমিশন।
এদিকে কমিশনের কেস খেয়েছেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীও।
আদর্শ আচরণবিধি ভঙ্গের কমিশন নোটিশ পাঠিয়েছেন তাঁকে। এই অভিযোগ এনেছিলেন সিপিআই-এমএল নেত্রী কবিতা কৃষ্ণণ। নন্দীগ্রামের বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারী ভোট প্রচারে একাধিকবার সাম্প্রদায়িক মন্তব্য করেছেন।
তিনি জনসভায় বলেছিলেন বিরোধী দলকে ভোট দেওয়ার অর্থ ‘মিনি পাকিস্তান’ -এর পক্ষে ভোট দেওয়া। এই ধরণের সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষমূলক মন্তব্য করে আদর্শ আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন শুভেন্দু। জানা গেছে সম্প্রতি এই মর্মে নির্বাচন কমিশন নোটিশ পাঠিয়েছে শুভেন্দু অধিকারীকে।