নিজস্ব সংবাদদাতা: একটি দুটি বিচ্ছিন্ন ভাবে নতুন সংক্রমন দেখা দিচ্ছিল কিন্তু এবার খড়গপুর শহরের বড়সড় ধাক্কা দিল করোনার ঢেউ! গত ৪৮ ঘন্টায় শহরে ৭জনের আক্রান্ত হওয়ার সংবাদ মিলেছে, অমীমাংসিত রয়েছে প্রায় দেড় ডজন। ফলে সংক্রমিতের সংখ্যা আরও বাড়ার সম্ভবনা থেকেই যাচ্ছে। ৪ঠা এপ্রিল খড়গপুর শহরে সবচেয়ে বড় সংক্রমনের হদিস মিলেছে আইআইটি খড়গপুর (IIT-KHARAGPUR) ক্যাম্পাসে। এখানে আক্রান্ত হয়েছেন মা ও মেয়ে সহ ৩জন। জানা গেছে ৫৩ এবং ২৫বছরের মেয়ে ছাড়াও ক্যাম্পাসের মধ্যে ৪৮ বছরের এক ব্যক্তিও আক্রান্ত হয়েছেন। এঁদের সবারই সামান্য অসুস্থতা ছিল। সন্দেহ হওয়ায় আরটি/পিসিআর পরীক্ষা করা হয় তাঁদের এবং তারপরই তাঁদের দেহে করোনার অস্তিত্ব পাওয়া যায়।
লক্ষণীয় যে অসুস্থতার লক্ষণ থাকায় ওইদিন মোট ৫জনের আরটি/পিসিআর পরীক্ষা করা হয়েছিল যার মধ্যে চারজনেরই করোনা পজিটিভ পাওয়া গেছে। আরও একজন ৫৩ বছর বয়সী ব্যক্তি যার নমুনা সংগ্রহ করেছিল আইআইটি তাঁরও পজিটিভ এসেছে। যদিও তিনি আইআইটি (IIT) ক্যাম্পাসের মধ্যে থাকেননা। তিনি থাকেন ক্যাম্পাস সংলগ্ন ডিভিসি (DVC) মার্কেট লাগোয়া ব্যারাকে। অনুমান করা হচ্ছে ওই ব্যক্তি এনসিসি(NCC) ব্যারাকে থাকেন। ৫জনের মাত্র ১জনের করোনা নেগেটিভ রেজাল্ট আসে। ৪৯বছরের ওই ব্যক্তি তালবাগিচা সুকান্ত নগরের বাসিন্দা বলে জানা গেছে।
খড়গপুর শহরের রেল ওয়ার্কশপে কর্মরত এক যুবকের দেহেও এই দিন করোনার অস্তিত্ব মিলেছে। রেলের ইলেক্টরিক্যাল সেকশন ইঞ্জিনিয়ার ৩০বছরের ওই যুবকের বাড়ি তলঝুলিতে। একই দিনে ৩০বছরের এক গৃহবধূ আক্রান্ত হয়েছেন মালঞ্চ এলাকার একটি আবাসনে। এঁদের সবাইকেই আপাততঃ হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে বলা হয়েছে। সব মিলিয়ে একইদিনে ৬জনের আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা খড়গপুর শহরে দ্বিতীয় পর্যায়ের করোনা ঢেউয়ের ক্ষেত্রে নতুন ঘটনা যা ভালো লক্ষণ নয়। দ্বিতীয় পর্যায়ে আরও অন্ততঃ চারজন এর আগে এই শহরে আক্রান্ত হয়েছেন যার মধ্যে একজন মহিলা ভগবানপুর এলাকার বাসিন্দা বলেই জানা গেছে।
শুধু করোনা পজিটিভ নয়। এদিনই আরটি/পিসিআর পরীক্ষায় ১৭ জনের ফলাফল অমীমাংসিত এসেছে। এরা সব্বাই পৌর এলাকার বাসিন্দা। যার অর্থ আরও কয়েকজন পজিটিভ হবেন। সেই ফলাফল এখনও অবধি আমাদের হাতে এসে পৌঁছায়নি। বিভিন্ন কারনে সব সময় সমস্ত তথ্য পাওয়া সম্ভব হচ্ছেনা। নির্দিষ্ট তথ্য ছাড়া দ্য খড়গপুর পোষ্ট যেহেতু খবর করেনা তাই অনেক সময়েই পাঠকদের কাছে খবর পৌঁছাতে বিলম্ব হচ্ছে। যদিও সতর্কতা ও সচেতনতার কোনও বিকল্প নেই। প্রশাসন সতর্ক থাকালেও তার সীমাবদ্ধতা রয়েছে।
খড়গপুরবাসীর কাছে একান্ত অনুরোধ শহরের করোনা মানচিত্র ফের দ্রুত বাড়ছে। নিজেদের যেমন মাস্ক পরতে হবে তেমনই অন্যদের মাস্ক পরতে বলুন।পথে ঘাটে বাজারে ফের বেপরোয়া মাস্ক হীন জীবন যাত্রা শুরু হয়েছে। যত প্রিয়জনই হোকনা কেন বাড়ির বাইরে মাস্কহীন মানুষের সঙ্গে কথা বলা বন্ধ করুন, মাস্কহীন দোকান বাজারের বিক্রেতাকে এড়িয়ে চলুন এবং মাস্কহীন ক্রেতাকে দ্রব্য বিক্রি করা বন্ধ করুন। এই শহরকে শহরবাসীর সচেতনতাই রক্ষা করতে পারে। মনে রাখতে করোনার প্রথম দফায় প্রচুর অমূল্য প্রাণ হারিয়েছে শহর যাঁর মধ্যে ৩জন চিকিৎসক ছিলেন।