নিউজ ডেস্ক: মাসখানেক যেতে না যেতেই কলকাতার স্ট্র্যান্ড রোডে আবারও অগ্নিকাণ্ড। বুধবার সকাল পৌনে ৮টা নাগাদ এন সি দত্ত রোডে পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের চারতলায় আগুন লাগে। দ্রুত আগুনের গ্রাসে চলে যায় গোটা চারতলা। ঘটনাস্থলে দমকলের প্রায় ১০ থেকে ১২ টি ইঞ্জিন এসে আগুন নেভানোর কাজে হাত লাগিয়েছেন অতি সক্রিয়তার সঙ্গে। তবে তার আগেই পাশের বহুতল থেকে ইট ছুঁড়ে জানলার কাঁচ ভেঙে আগুন নেভানোর কাজে হাত লাগান স্থানীয় বাসিন্দারা। হেয়ার স্ট্রিট থানার আধকারিকেরাও ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন। হতাহতের কোনও খবর পাওয়া যায়নি।
এদিন কয়লাঘাট ভবন থেকে কিছুটা দূরেই অবস্থিত পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের বহুতল এই আগুন লাগে। গঙ্গার একেবারে পাশে অবস্থিত হওয়ায় হাওয়ার জেরে দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়তে থাকে। আগুনের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে, দমকল কর্মীদের ভেততে ঢুকতে বেশ বেগ পেতে হয়। এছাড়াও কিছুটা ঘিঞ্জি এলাকা হওয়ায় দমকল প্রবেশের ক্ষেত্রেও বাধাপ্রাপ্ত হয়। এরপর আশেপাশের ভবনের মানুষরে অতি বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়ে ইত-পাথর ছুঁড়ে ক্ষতিগ্রস্থ ভবনের জানালার কাজ ভেঙে ফেলেন। এতে দমকল বাহিনী ভেতরে প্রবেশ করতে কিছুটা সুবিধা হয়। তারা অতি দ্রুততার সঙ্গে আগুন নেভানোর কাজে হাত লাগান, আপাতত আগুন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। তবে আগুন নেভানোর ক্ষেত্রে সমস্ত রকম সাবধানতা অবলম্বন করা হয়, করা হয়েছে ল্যাডারের ব্যবস্থাও।
আগুন লাগার সঠিক কারণ এখনও জানা যায়নি। প্রাথমিক অনুমান, শক সার্কিট থেকেই এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা। তবে স্থানীয়দের দাবী, চারতলায় ক্যান্টিন ও কয়েকটি দফতর রয়েছে। সেখান থেকেই আগুন লাগে বলে প্রাথমিক অনুমান। যেহেতু এটি অফিস ভবন, তাই এখানে কোনও লোকের বসবাস ছিল না, সেজন্য হতাহতের কোনও ঘটনা ঘটেনি বলেই খবর।
কিছুদিন আগেই কলকাতার স্ট্র্যান্ড রোডে কয়লাঘাট ভবনে বিধংসী আগুন লাগে। ভবনের ১৩ তলায় রেলের দফতরে আগুন লাগে। ৪ জন দমকল কর্মীসহ ঝলসে যায় ৯ টি তরতাজা প্রাণ। সেদিন উদ্ধার কাজ করতে গিয়ে দমকল কর্মীরা দুটি ভাগে ভাগ হয়ে যান; একদল সিঁড়ি দিয়ে ওঠার চেষ্টা করেন, আর এক দল তাড়াহুড়োয় বেছে নেন লিফট। আর তাতেই বিপত্তি ঘটে। লিফটে আটকে ঝলসে সেখানেই মৃত্যু হয় তাদের। একটি লিফটে ৭ জনের দেহ মেলে এবং অপর লিফটে ২ জনের। কিন্তু কীভাবে ঘটল এই দুর্ঘটনা? জানা যায়নি প্রকৃত কারণ।
নিউ কয়লাঘাট রেলভবনে অগ্নিকাণ্ডে গাফিলতি কার, সে নিয়েও অনেক জল ঘোলা হয়। হেয়ার স্ট্রিট থানা এই নিয়ে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা দায়ের করে। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৪এ (গাফিলতি) এবং দমকল আইনের ১১জে ও ১১ এল ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। গোটা ঘটনায় রেলের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অসহযোগিতার অভিযোগ উড়িয়ে রেলের পদস্থ কর্তারা ঘটনাস্থলে ছিলেন বলে ট্যুইট করেন পীযূষ গোয়েল। এই ঘটনায় উচ্চ পর্যায়ের ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলেও রেলমন্ত্রী তাঁর ট্যুইটে জানিয়েছেন।