বিশ্বজিৎ দাস: আবারও রক্তাক্ত মায়ানমার, সেনার গুলিতে শিশু-সহ নিহত ৬৪, সশস্ত্র গোষ্ঠীর প্রত্যাঘাতে হত ১০ সেনা। এই বিক্ষোভের আগুনে জ্বলছে মায়ানমার। মায়ানমারের মাটি এর ফলে সেনাশাসন বিরোধীদের রক্তে ফের রক্তাক্ত হল। শনিবার সেখানে আন্দোলনকারীদের উপর সেনা নির্বিচারে গুলি চালিয়েছে বলে অভিযোগ। তাতে কমপক্ষে ৬৪ জন প্রাণ হারিয়েছেন। সেনার গুলিতে ১ বালকেরও মৃত্যুর খবর মিলেছে। এ ছাড়াও মৃতদের মধ্যে বেশ কয়েক জন শিশু রয়েছে বলে খবর।
গত ১ ফেব্রুয়ারি রাজনীতিকদের বন্দি করে সেনা দেশের দখল নেওয়ার পর, গত দু’মাসে সেনার গুলিতে প্রায় ৪০০ জন প্রাণ হারিয়েছেন মায়ানমারে। শনিবারই সবচেয়ে রক্তাক্ত দিন হিসেবে চিহ্নিত হয়ে রইল ইতিহাসে। শুধুমাত্র মান্দালয়ের রাস্তাতেই কমপক্ষে ১৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। সেনার গুলিতে ৫ বছরের এক বালকেরও প্রাণ গিয়েছে সেখানে। ইয়াঙ্গনে অনূর্ধ্ব ২১ এক ফুটবল খেলোয়াড়ের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার দুপুর আড়াইটে পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী, সকাল থেকে কমপক্ষে ৬৪ জন প্রাণ হারিয়েছেন সেখানে। শান প্রদেশের উত্তরে স্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল পড়ুয়ার উপরও সেনা গুলি চালায় বলে জানা গিয়েছে। তাঁদের মধ্যে ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।
মায়ানমার সেনাশাসনের বিরুদ্ধে গত দু’মাস ধরেই বিক্ষোভে উত্তপ্ত। শনিবার সশস্ত্র বাহিনীর সাফল্য উদ্যাপনে যখন ব্যস্ত সেনা, সেই সময় ইয়াঙ্গন, মান্দালয় এবং আরও বেশ কিছু শহরে পথে নামেন হাজার হাজার মানুষ। পরবর্তীকালে,পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে দেখে আন্দোলনকারীদের হুঁশিয়ারি দেয় সেনা। ঘোষণা করা হয়, পিছু না হটলে মাথায় অথবা পিছন থেকে গুলি করে মারা হবে তাঁদের। কিন্তু সেনার হুঙ্কারেও পিছু হটেননি আন্দোলনকারীরা। তাতেই নির্বিচারে গুলি চালাতে শুরু করে সেনা।
যদিও এতবড় ঘটনার পরেও রোখা যাচ্ছেনা সেনা শাসনের বিরোধী গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার দাবিতে আন্দোলনরত জনতাকে। হাতে অস্ত্র না থাকলেও হাতের সামনে যা পাওয়া যাচ্ছে তাই নিয়ে চলছে প্রতিরোধ। তারই প্রমাণ মিলেছে জনতার প্রত্যাঘাতে ১০সেনার মৃত্যুর ঘটনায়। ইট, পাথর, কাঠের আঘাতেই ওই সেনাদের বেশির ভাগের মৃত্যু হয়েছে বলেই জানা গেছে। সেনা শাসনের বিরুদ্ধে দিকে দিকে জনতা সংগঠিত হচ্ছে বলেও খবর পাওয়া যাচ্ছে। স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসেও সংগঠিত হচ্ছেন পড়ুয়ারা। আগামী দিনে বড়সড় প্রতিরোধের মুখেই পড়তে হতে চলেছে সেনাবাহিনীকে।