নিজস্ব সংবাদদাতা: বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় পর্যায়ের করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দৈনিক সংক্রমনের রেকর্ড ছুঁয়ে গেল। রাজ্য জুড়ে যখন কয়েকটি স্তরে ব্যাপক হারে টিকাকরন শুরু হয়ে গেছে তখনই আক্রান্তের সংখ্যা এক লাফে ৫০০ ছাড়িয়ে গেল যাকে দ্বিতীয় পর্বে দৈনিক সংক্রমনের নিরিখে
সর্বোচ্চ বলা হচ্ছে। আর পূর্বের মতই জেলাগত দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যায় শীর্ষ রয়েছে সেই কলকাতাই এবং ঠিক তার পরেই রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা। বুধবারের তুলনায় গত ২৪ ঘণ্টায় মৃতের সংখ্যা বেড়েছে। এদিন ৪জনের মৃত্যুর খবর মিলছে, ২ জন করে মারা গেছেন ওই দুই জেলাতেই।
প্রায় একই ঘটনা ঘটেছিল পশ্চিম মেদিনীপুরের ক্ষেত্রেও। সারা জেলা জুড়েই করোনার প্রকোপ কমতে কমতে শূন্যতে চলে এসেছিল এই জেলায়। বেশ কয়েকটি করোনা হাসপাতালগুলি পুরোপুরি বন্ধই করে দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে ৩ দিন আগে ২২শে মার্চ জেলায় ৪জন নতুন করোনা আক্রান্তের সন্ধান পাওয়া গেছিল আর তিনদিনের মাথায় সেটা তিন গুন হয়ে ১২ জনে পৌঁছে গেল। পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্য বিভাগের রিপোর্টে এমনটাই বলা হয়েছে।
জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে জানা গেছে নতুন পরিস্থিতি মোকাবিলায় সম্পূর্ণ প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। করোনা মোকাবিলায় ফের সক্রিয় করা হয়েছে ব্লক স্তর থেকে। হোম আইসোলেশন থেকে হাসপাতাল সবই প্রস্তুত। এবার আর অভিজ্ঞতার অভাবে প্রথমবারের মত জটিলতা হবেনা। তাছাড়া গোটা জেলা জুড়ে প্রায় ২৫হাজারের কাছাকাছি টিকাকরন হয়েছে যার বেশিরভাগই নিয়েছেন করোনা যোদ্ধা ও প্রথম সারির সৈনিকরা তাই নির্ভিক ভাবেই মোকাবিলা করতে পারবেন তাঁরা। জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের এক কর্তার কথায়, ‘জেলায় ভোট পর্ব চুকে যাচ্ছে ১ লা এপ্রিল তারপর ফের করোনা সংক্রান্ত বিশেষ কমিটির বৈঠক হবে। ইতিমধ্যেই ফের মাস্ক পরার ক্ষেত্রে কড়াকড়ি করা হচ্ছে। ১লা এপ্রিলের পরই কোভিড বিধি বলবৎ করতে রাস্তায় নামতে চলেছে পুলিশ ও প্রশাসন।
উল্লেখ্য ভারতের স্বাস্থ্যকর্তারা বলছেন যে ফেব্রুয়ারি মাস থেকেই এদেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আসতে শুরু করেছে কারন কিন্তু ফেব্রুয়ারি থেকে ভারতে কোভিড সংক্রমণের গ্রাফ ফের ঊর্ধবমুখী। তার আগে সারা দেশে দৈনিক সংক্রমনের সংখ্যা কমে গিয়ে ১০ হাজারে নেমে যায়। কিন্তু ফেব্রুয়ারি মাস থেকে ফের তা বেড়ে ৫০ হাজারের গণ্ডি পর্যন্ত ছাড়িয়ে গেছে। গিয়েছে। এরাজ্যেও ঠিক তাই দেখা গিয়েছিল। গত জানুয়ারি মাসে দৈনিক সংক্রমনের সর্বোচ্চ সংখ্যা দেখা গিয়েছিল ৫৬৫ জন। ১৭ই জানুয়ারির সেই দিনটির পর আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশ কমতে শুরু করেছিল। এরপর ফের ফেব্রুয়ারি থেকে উর্ধমুখী হতে থাকে সংক্রমন। ২১শে মার্চ থেকে এরাজ্যে প্রতিদিনই আক্রান্তের সংখ্যা ২ শতাংশ হারে বাড়ছিল যা বৃহস্পতিবার এক লাফে ৫১৬তে পৌঁছে গেল।
বৃহস্পতিবার রাজ্যে সর্বোচ্চ আক্রান্ত কলকাতায়, ১৬৭ জন। এর পরই রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা। সেখানে দৈনিক সংক্রমিতের সংখ্যা ১১৫। আক্রান্ত বাড়ছে কলকাতা লাগোয়া দক্ষিণ ২৪ পরগনা (৩৬) , হাওড়া (৩৩) এবং হুগলি (২৮)-তে। এ ছাড়া পশ্চিম বর্ধমান (২৬), নদিয়া (১৩), পুরুলিয়া (১২) পশ্চিম মেদিনীপুর (১২) এবং মালদহ (১৪) জেলায় দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা দুই অঙ্কে পৌঁছেছে। কালিম্পং এবং ঝাড়গ্রামে গত ২৪ ঘণ্টায় কোনও সংক্রমণ ধরা পড়েনি।