নিজস্ব সংবাদদাতা: তৃনমূলের নির্বাচনী প্রচারের সময় মাইকের তার খুলে নেওয়া, বাইকের জোরালো আওয়াজ করা এমনকি তৃনমূলের পতাকা খুলে মাটিতে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠল বিজেপির বিরুদ্ধে। অভিযোগ আরও যে গোটা ঘটনাই ঘটেছে খড়গপুর সদর বিধানসভার অন্তর্গত তালবাগিচা বাজারে। ঘটনার পরই ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়েছে এলাকায়। খবর পেয়ে পুলিশের এক বিশাল বাহিনী এলাকায় ছুটে গেছে। অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারের দাবিতে মধ্য রাত অবধি তালবাগিচা বাজারে অবস্থান করছেন তৃনমুল কর্মীরা। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে এলাকায় মোতায়েন রয়েছে পুলিশ বাহিনী।
খড়গপুর শহর যুব তৃনমুল কংগ্রেসের সভাপতি অসিত পাল(ছোটকা) অভিযোগ করেছেন,” বৃহস্পতিবার তালবাগিচা বাজারে খড়গপুরের বর্তমান বিধায়ক তথা এবারের প্রার্থী প্রদীপ সরকারের সমর্থনে একটি সভার আয়োজন করা হয়েছিল যুব তৃনমূলের পক্ষ থেকে। যেখানে বক্তব্য রাখার জন্য স্বয়ং প্রার্থী ছিলেন। এই সভা চলাকালীন তিন তিনবার আমাদের কয়েকটি চোঙার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয় স্থানীয় বিজেপি নেতা বাপ্পা ঘোষ। সেই সংযোগ পুনরায় যুক্ত করে সভার কাজ শুরু করা হলে ওই ব্যক্তি ফের তার বাইক নিয়ে এসে সভাস্থলে বাইক চালিয়ে রেখে বিকট আওয়াজ করতে থাকে। বাইকের কালো ধোঁয়ায় চারদিক ছেয়ে যায়। এই ঘটনা চলে থাকে বিধায়কের বক্তব্য রাখার সময়। কিছুক্ষণ চলার পর আমাদের প্রতিবাদে ওই ব্যক্তি চলে যায়।”
অসিত জানান, “এরপর ফের ওই ব্যক্তি আসে এবং বাজারের বিভিন্ন অংশে লাগানো আমাদের দলীয় পতাকা টেনে টেনে খুলে মাটিতে ফেলে দেয়। অথচ এই সভা নির্বাচন কমিশনের নিয়ম মেনে পুলিশের অনুমতি স্বাপেক্ষেই হচ্ছিল। গোটা ঘটনাই ওই বিজেপি নেতা মদ্যপ অবস্থায় ঘটিয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা করছি। তালবাগিচার মত শান্ত জায়গাকে অশান্ত করার চেষ্টা হচ্ছে। আমরা অবিলম্বে ওই বাপ্পা ঘোষের গ্রেপ্তারি দাবি করছি। ”
এদিকে গোটা ঘটনায় প্রথম দিকে রীতিমতো আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েন স্থানীয় তৃনমূল কর্মীরা। রীতিমত ত্রস্ত এবং হতভম্ব হয়ে থাকতে দেখা যায় তাঁদের। বারবার সভার কাছে বাধা এবং পতাকা ফেলে দেওয়ার মত ঘটনা তাও আবার তালবাগিচার মত জায়গা যেখানে তৃনমূলের যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে! তাছাড়া এই ৩৫নম্বর ওয়ার্ড শেষ পৌর নির্বাচনেও তাদের দখলে ছিল। সাম্প্রতিক সমস্ত নির্বাচনের ফলাফলে এই এলাকায় এগিয়ে তৃনমূল। সেই জায়গায় বিজেপির একজন স্থানীয় নেতার দুঃসাহস তৃনমূল কর্মীদের বিপাকে ফেলে দেয়। যদিও ঘটনার খবর পেয়ে অন্যান্য জায়গা থেকে বেশ কিছু তৃনমূল কর্মীকে সভাস্থলে চলে এসে পৌঁছান। তৃনমূল কর্মীদের একটা বড় অংশ বাজার এলাকা জুড়ে এরপর মিছিল করতে শুরু করে।
ঘটনার খবর পেয়ে চলে আসে খড়গপুর পুলিশের বাহিনী। গন্ডগোলের আশঙ্কায় মোতায়েন করা হয় মহিলা পুলিশকেও। তৃনমূল কর্মী বাহিনীকে ঘিরে পুলিশের একটি বলয় তৈরি করা হয় যাতে উত্তেজনা থেকে কোনও অপ্রীতিকর পরিবেশ তৈরি না হয়। অনেক রাত অবধি কর্মীরা বাজারেই দাঁড়িয়ে অভিযুক্ত কে গ্রেপ্তারের দাবিতে শ্লোগান সাউটিং চালিয়ে যায়। পরে পুলিশ তাঁদের বাড়ি পাঠিয়ে দেয় বুঝিয়ে। তবে এলাকায় উত্তেজনা রয়ে গেছে। শুক্রবার ঘটনার রেশ ছড়ায় কীনা সেটাই দেখার।