নিজস্ব সংবাদদাতা: হেভিওয়েট লড়াইয়ের কেন্দ্র এখন নন্দীগ্রাম। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে লড়াইয়ে তাঁরই একদা মন্ত্রী বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী যিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অর্ধলক্ষ ভোটে হারাবেন অথবা রাজনৈতিক সন্ন্যাস নেওয়ার ভীষ্মের প্রতিজ্ঞা করেছেন। ২০২১ তাই নন্দীগ্রামে ‘মর্যাদার লড়াই। আর সেই লড়াইকে জমিয়ে দিতে বুধবার কাঁথির সভা থেকে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করলেন বাংলার আগামীদিনের বিজেপি পরিচালিত সরকারের মুখ্যমন্ত্রী হবে বাংলারই ভূমিপুত্র। প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণা কার্যত উদীপ্ত করল নন্দীগ্রাম সহ সমগ্র বিজেপি কর্মীদেরই কারন এই অঞ্চলে শুভেন্দু অধিকারীকেই ভূমিপুত্র হিসাবে প্রচার করে থাকেন শুভেন্দু অনুগামীরা।
বাংলায় শুভেন্দুই একমাত্র ভূমিপুত্র এমনটা অবশ্যই নয়। বিজেপি ক্ষমতায় এলে কে মুখ্যমন্ত্রী হতে পারেন এমন সম্ভাব্য ভূমিপুত্র হয়ত অনেকেই আছেন কিন্তু পূর্বমেদিনীপুরের কাঁথি যা কিনা অধিকারী গড় হিসাবেই পরিচিত সেখান থেকেই প্রধানমন্ত্রীর এই ভূমিপুত্রের ঘোষণা নিশ্চিতভাবেই পূর্ব মেদিনীপুরের বিজেপি কর্মীদের মনোবলকে চাঙ্গা করে দিল বিশেষ করে নন্দীগ্রামের বিজেপি কর্মীদের যাঁরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মত হাইভোল্টেজ প্রার্থীর বিরুদ্ধে লড়াইটা করছেন।
ভূমিপুত্র বা শুভেন্দু অধিকারী এই শব্দটাকে জুড়ে দিতে মোদি তাৎপর্যপূর্ণ ভাবেই বারবার নন্দীগ্রামকে তুলে এনেছেন তাঁর বক্তব্যে। যেহেতু শুভেন্দু ওখান থেকেই লড়াইটা করছেন তাই ভাবি মুখ্যমন্ত্রী পদে তাকে নিয়ে জল্পনাটা মাথা চাড়া দিয়েছে।মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে হেভিওয়েট লড়াইতে শুভেন্দুর পাশে দাঁড়িয়ে কাঁথি থেকেই তোপ দেগে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, নন্দীগ্রামের মানুষকে বদনাম করছেন মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ”দিদি নন্দীগ্রামের মানুষকে বদনাম করার চেষ্টা করছে। তাঁদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করছেন। এর জবাব ভোট বাক্সে পাবেন।”
নিশ্চিতভাবেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আহত হওয়ার পেছনে নন্দীগ্রামের বিজেপির হাতের তত্ত্বকেই খন্ডন করেছেন মোদি। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন,, “আপনারা দেখেছেন, নন্দীগ্রামকে কীভাবে বদনাম করা হচ্ছে। দিদি, এখানকার মানুষ আপনাকে মান-সম্মান দিয়েছে। আর এখানকার মানুষকে আপনি অপমান করছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে আপনি মিথ্যা অভিযোগ করছেন।” এর পরই প্রধানমন্ত্রীর দাবি, নন্দীগ্রামের আত্মমর্যাদাসম্পন্ন মানুষ এই অপমানের জবাব দেবে। ”
শুধু তাই নয়, আমফান বিধ্বস্ত নন্দীগ্রামে কি ভাবে ক্ষতিপূরণের টাকা লুট করেছে তৃনমূল সেই অভিযোগও তুলে এনেছেন প্রধানমন্ত্রী। সব মিলিয়ে কাঁথিতে দাঁড়িয়ে বুধবার যেন নন্দীগ্রামের বিধানসভা প্রচারই করে গেলেন মোদি আর তারসঙ্গে জুড়ে দিলেন ভূমিপুত্রেরই মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার প্রতিশ্রুতি। অনেকেই বলে থাকেন তৃনমূল ছেড়ে বিজেপি যোগদানের প্রাক শর্ত হিসাবে মুখ্যমন্ত্রী পদের দাবি রেখেছেন শুভেন্দু। যদিও শুভেন্দু নিজে কখনও এমন কথা বলেননি। তিনি বলেছেন দল পোষ্টার লাগাতে বলে লাগবো। যদিও তিনি যে পোষ্টার লাগানোর স্তর অনেক আগেই পেরিয়ে এসেছেন সেটা সবাই জানেন। এখন লাখ টাকার প্রশ্ন এটাই প্রধানমন্ত্রীর সেই ভূমিপুত্রটি কে এবং তালিকায় শুভেন্দু আছেন কীনা?