নিউজ ডেস্ক: বিজেপি কর্মীরা প্রার্থী বদলের দাবিতে তুমুল আন্দোলন চালাচ্ছেন। বিক্ষোভের তীব্রতা যেন ক্রমশ চরম আকার নিচ্ছে বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে। কিছুদিন আগে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার অধিকাংশ কেন্দ্রে প্রার্থী ঘোষণা হওয়ার পরই অসন্তোষ শুরু হয়ে যায়। কিন্তু তারপর সেই আঁচ গিয়ে পড়েছে একেবারে বিজেপির সদর দপ্তরে। জেলা জুড়ে বিক্ষোভ আন্দোলনের পাশাপাশি দল থেকে পদত্যাগ করার হিড়িকও দেখা গিয়েছে। কোথাও আবার দলের ঘোষিত প্রার্থীর বিরুদ্ধে অনশনে বসারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দলীয় কর্মীরা। সব মিলিয়ে যথেষ্ট অস্বস্তিতে পড়েছে বিজেপির জেলা নেতৃত্ব।
গত লোকসভা ভোটে নদীয়া জেলায় বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছিল বিজেপি। এবার সেই নদিয়া জেলাতেই প্রার্থী বিক্ষোভের জেরে একদিনে ১৭ জন বিজেপি কর্মী পদত্যাগপত্র জমা দিলেন নদিয়া দক্ষিণের সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অশোক ভট্টাচার্যের কাছে। সূত্রের খবর, নদীয়া জেলার রানাঘাট উত্তর পশ্চিম, রানাঘাট উত্তর পূর্ব ,শান্তিপুর চাকদা ,কল্যাণী তে বিক্ষোভ দেখা গিয়েছে।
প্রসঙ্গত, অনেকদিন ধরে আদি এবং নব্য বিজেপির দ্বন্দ্ব ছিল। এবার প্রার্থী তালিকা প্রকাশ হতেই দলীয় কোন্দল আরও প্রকাশ্যে চলে এল বিজেপির। কয়েকটি আসন বাদে সব কেন্দ্রের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে দেওয়া হয়েছে। তাতে স্থান পেয়েছে বেশকিছু তৃণমূল ত্যাগী হেভিওয়েট নাম। এই তালিকা প্রকাশের প্রথম থেকে বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে একটা চাপা অসন্তোষ ছিলই, এবার ক্রমশ তা বেড়েছে। গত কয়েকদিন ধরে জেলাজুড়ে বিক্ষোভ হয়েছে। হেস্টিংসে বিজেপির দফতরও বিক্ষোভের হাত থেকে রক্ষা পায়নি।
এরপর শেষ দফায় প্রার্থী তালিকা প্রকাশ পেতেই বেশি করে বিক্ষোভের আঁচ ছড়িয়ে পড়তে থাকে। নদিয়ার শান্তিপুরেও ব্যাপক বিক্ষোভ দেখান বিজেপি কর্মী সমর্থকেরা। শুক্রবার সন্ধ্যায় নদিয়ার শান্তিপুরের ঘোড়ালিয়া ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে শান্তিপুর বিধানসভার প্রার্থী জগন্নাথ সরকারের প্রার্থী পদ প্রত্যাহারের দাবীতে জাতীয় সড়ক অবরোধ ও রাস্তার ওপরেই টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা। তার আগে বৃহস্পতিবার বিজেপির শান্তিপুর বিধানসভা কেন্দ্রে প্রার্থী জগন্নাথ সরকারকে পছন্দ নয়, তাই একেবারে দল ছেড়ে নির্দল প্রার্থী হয়ে লড়াই করার সিদ্ধান্ত নেন বিজেপি নেতা তথা প্রাক্তন জেলা সম্পাদক সুফল সরকার। তিনি বলেন, জগন্নাথ সরকার সাংসদ হওয়ার পর কখনও মানুষের সাহায্যে আসেনি। তাই সাধারণ মানুষ এই প্রার্থীকে মেনে নিচ্ছেন না বলে দাবী করেন সুফল বাবু। এরপর শনিবার ফের একসঙ্গে পদত্যাগ করলেন ১৭ জন, যার ফলে গেরুয়া শিবিরের অস্বস্তি যে আরও বাড়ল সেটাই মনে করছেন সকলে।