নিউজ ডেস্ক: আগেই জানিয়েছিলেন বীরভূমের ১০টি আসনের দ্বায়িত্ব তিনি নেবেন, একটি বাদে। কারণ, ওখানকার প্রার্থী তাঁর পছন্দের নয়। সেদিনেই কেমন যেন বিদ্রোহের সুর শোনা গিয়েছিল মমতা ব্যানার্জীর একান্ত অনুগত কেষ্টর গলায়। জানা যায়, বীরভূমে ঘোষিত ১০টি আসনের জন্য অনুব্রত মন্ডল যে তালিকা পাঠিয়েছিলেন তারমধ্যে ১টি নাম কেটে দিয়েছেন পি.কে। আর সেই আসন জেতানোর দ্বায়িত্ব অনুব্রত নেবেন না বলেই জানিয়ে দিয়েছিলেন। ঘটনায় রীতিমত চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে তৃনমূলের অন্দরে। এছাড়াও প্রার্থী নিয়ে রাজ্যের অন্যান্য প্রান্ত থেকেও ক্ষোভ বিক্ষোভ প্রকাশের পাশাপাশি দল ছাড়ার হিড়িক দেখা যায়। অবশেষে বিজেপি চূড়ান্ত পাঁচ দফার জন্য ১৫৭ প্রার্থীর একটি তালিকা প্রকাশের একদিন পরই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চার আসনে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী বদলের সিদ্ধান্ত নিলেন।
তৃণমূল কংগ্রেসের নদিয়া জেলার কল্যাণী বিধানসভা, উত্তর ২৪ পরগনা জেলার অশোকনগর বিধানসভা কেন্দ্র, আমডাঙ্গা বিধানসভা কেন্দ্র আর বীরভূমের দুবরাজপুর বিধানসভা কেন্দ্রে নিজেদের প্রার্থী বদল করেছে। তৃণমূলের তরফ থেকে জারি বয়ানে বলা হয়েছে যে, কল্যাণী আসন থেকে অনিরুদ্ধ বিশ্বাস, উত্তর ২৪ পরগনা জেলা থেকে নারায়ণ গোস্বামী আর আমডাঙ্গা বিধানসভা আসনে রফীকুর রহমানকে প্রার্থী করা হয়েছে। এবং বীরভূমের দুবরাজপুর আসন থেকে দেবব্রত সাহাকে প্রার্থী করা হয়েছে। উল্লেখ্য, এর আগে কল্যাণী থেকে রমেন্দ্র নাথ বিশ্বাস, আমডাঙ্গা থেকে মুস্তাক মোরতাজা, অশোকনগর থেকে ধিমান রায় এবং দুবরাজপুর থেকে প্রার্থী করা হয়েছিল অসীমা ধীবরকে।
উল্লেখ্য, রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের জন্য তৃণমূল কংগ্রেস ২৯১টি আসনে নিজেদের প্রার্থী ঘোষণা করেছে। অনেক তারকাকেও টিকিট দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও অনেক মহিলাদেরও প্রার্থী করা হয়েছে। তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন যে, এবার আমরা যুব সম্প্রদায় এবং মহিলা প্রার্থীদের নিয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। তৃণমূলের প্রার্থী তালিকায় ৫০ জন মহিলা, ৪২ জন মুসলিম, ৭৯ জন তফসিলি, ১৭ জন তফসিলি জনজাতিদের প্রার্থী করা হয়েছে।
তবে রাজ্যের অন্যান্য প্রান্তে বিক্ষোভের পাশাপাশি প্রার্থী নিয়ে ক্ষোভ জন্মেছিল মমতার অনুগত কেষ্টর মনেও। অনুব্রতর পাঠানো তালিকায় দুবরাজপুর বিধানসভার বিধায়ক নরেশ চন্দ্র বাউড়ির নাম থাকলেও তাঁকে প্রার্থী করেনি দল। তাঁর বদলে খয়রাশোলের বাসিন্দা গৃহবধূ অসীমা ধীবরকে প্রার্থী বলে ঘোষনা করা হয়। সেদিন কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি অনুব্রত মন্ডলের। দুবরাজপুরের প্রকাশ্য সভায় বিধায়ক ও বর্তমান প্রার্থী দুজনকে পাশে বসিয়ে জনসভায় দলীয় প্রার্থীকে জেতানোর আহ্বানও জানাতেও দেখা গিয়েছিল তাঁকে। যদিও ওই সভাতেই প্রার্থী হতে না পারার দুঃখে চোখের জল মুছতে দেখা গিয়েছিল বিধায়ককে। শুধু বিধায়ক নন, এলাকার তৃণমূল কর্মীদেরও একাংশের মধ্যে যে ক্ষোভ রয়েছে সেটাও বিলক্ষণ বুঝেছেন জেলা তৃণমূল সভাপতি। তাঁর কাছেও প্রার্থী বদলের জন্য আবেদন করা হয়েছে। তারপরই অনুব্রতের ঘোষণা বীরভূমের ১০টি আসনের দ্বায়িত্ব তিনি নেবেন, একটি বাদে। কারণ, ওখানকার প্রার্থী তাঁর পছন্দের নয়।