নিজস্ব সংবাদদাতা: বিশেষ বদলি বা স্পেশাল ট্রান্সফার নিয়ে পছন্দের স্কুলে গিয়েও বিপত্তি। চলতি মাসের অর্ধেক দিন পেরিয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত মেলেনি বেতন। এমনকি কবে মিলবে বেতন, তাও জানা নেই বলেই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দাবী। শুধু কী তাই-এই বিশেষ বদলির জেরে তাদের সার্ভিস বুকে দেখা দিতে পারে ব্যাপক সমস্যা এবং অবসর পরবর্তী সময়ে পেনশন আটকে যাওয়ার আশঙ্কাও করছেন অভিজ্ঞ মহল।
অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসেস কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে জানা গিয়েছে, রাজ্য বিধানসভা নির্বাচন ঘোষণার পূর্বে রাজ্য সরকার পোষিত ও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকারা অনেকেই ট্রান্সফার নিয়ে অন্যত্র জয়েন করেছেন। অথচ বিভিন্ন কারনে তাঁদের ডি আই অফ স্কুলস দ্বারা অ্যাপ্রুভাল না মেলার কারণে ফেব্রুয়ারি মাসের বেতন পাননি। মার্চ মাসেও একই ভাবে বেতন না পাওয়ার সমস্যা দেখা দিয়েছে প্রকট ভাবে।
ফলে একদিকে বেতন না পাওয়ায় যেমন আর্থিক সঙ্কটে পড়েছেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা, তেমনই অন্যদিকে ইনকাম ট্যাক্স, টিডিএস করার জন্য শিক্ষক-শিক্ষিকারা চরম দুশ্চিন্তাতেও রয়েছেন।অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসেসের পক্ষ থেকে এই বদলির ব্যবস্থার পরিবর্তনের দাবী জানানো হচ্ছে। এই সংগঠনের পক্ষ থেকে রাজ্য সাধারণ সম্পাদক চন্দন কুমার মাইতির দাবী, বর্তমানে iosms পোর্টালের মাধ্যমে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বেতন হয়। তাই কোনো একজন শিক্ষকের যাবতীয় তথ্য ওই পোর্টালে তার স্কুলেই থাকে। ফলে ওই শিক্ষক অন্যত্র বদলি হলে তাঁর প্রোফাইলও নতুন স্কুলে অনলাইনেই পাঠানো হয়। এর পরেও নতুন করে ওই শিক্ষকের অপ্রুভাল নিষ্প্রয়োজন। কেবল ট্রান্সফার অফ স্টাফ প্রোফাইল করে নতুন স্কুল অ্যাড করে নিলেই হয়।
তাই মধ্যশিক্ষা পর্ষদ নিয়োগ কর্তা হওয়ার পরও ডি আই অফ স্কুলস দ্বারা অ্যাপ্রুভাল কতটা যুক্তিসঙ্গত তা ভেবে দেখতে মাননীয় শিক্ষা সচিব ও শিক্ষা কমিশনার মহাশহের কাছে আবেদন জানিয়েছেন তারা। এদিকে, এই ভাবে বিশেষ বদলি নিয়ে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের চলে যাওয়াতে তারা যেমন সমস্যায় পড়ছেন, ঠিক সেইভাবেই সমস্যায় পড়েছে স্কুল পড়ুয়ারাও। শিক্ষকদের বদলি হয়ে যাওয়ার কারণে সেই স্কুলে নির্দিষ্ট বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক বা শিক্ষিকা না থাকায় অসুবিধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে তাদের। আবার অপরদিকে এই বদলি নিয়ে উঠছে দুর্নীতির অভিযোগও।
এমন কি অভিযোগ
উঠেছে কোথাও কোথাও লক্ষ লক্ষ টাকার বিনিময়ে নিজের পছন্দ মত জায়গায় তাড়াহুড়ো করে এই বদলি করিয়ে দেওয়া হচ্ছে। সেখানে প্রয়োজনীয় ভ্যাকেনসি আছে কীনা তাও দেখা হচ্ছেনা। তবে এত কিছুর পরেও মিলছে না স্বস্তি, পছন্দের স্কুলে বদলি নিতে গিয়ে বেতন আটকে যাওয়ার পাশাপাশি শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ভবিষ্যৎও অন্ধকারে চলে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন অভিজ্ঞ মহল।