নিজস্ব সংবাদদাতা: ক্ষোভের আগুন জ্বলছে বিজেপিতে। পার্টি উইথ ডিফারেন্স এখন পার্টি উইথ নো ডিফারেন্স। যাঁরা অন্যদল থেকে আজ কিংবা কাল এসেছে তাঁদের হাতে ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে টিকিট আর দীর্ঘদিন ধরে দল করে যাওয়া নেতা কর্মীরা কার্যত বুড়ো আঙুল চোষার মত অবস্থায়। প্রার্থী পছন্দ না হওয়ায় কোথাও জেলা সভাপতি রাজনীতি থেকে সন্ন্যাস নেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন তো কোথাও দল ছাড়ার হুমকি। কিন্তু সিঙ্গুর নিয়ে খোদ বিজেপির দপ্তর হেস্টিংসে যা হয়ে গেল তাতে বোঝা গেল আগুনের উত্তাপ থামার লক্ষণ নেই। সোমবার হেস্টিংসে বিজেপি কার্যালয়ের সামনে তুমুল বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন বিজেপি কর্মী সমর্থকরা। রাজীবের বিরুদ্ধে চলছে তুমুল স্লোগান।
সিঙ্গুরের এবার তৃণমূল কংগ্রেস টিকিট দেয়নি মাস্টারমশাই রবীন্দ্রনাথ ঘোষকে। তাঁর অপর গোষ্ঠী বেচারাম মান্না এবং স্ত্রীকে প্রার্থী করেছে তৃণমূল। আর তাতেই চটেন মাস্টারমশাই। এরপরেই দলের বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ উগরে দেন তিনি। দল ছাড়ার কথাও বলেন। গত কয়েকদিনের মধ্যেই তৃণমূল ছাড়েন মাস্টারমশাই। যোগ দেন বিজেপিতে। তাঁর যোগদানের পর থেকেই তাঁর ফের প্রার্থী হওয়া নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়। শেষমেশ তাঁকে সিঙ্গুর থেকেই প্রার্থী করে বিজেপি। আর তাতেই বিপত্তি!
রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যকে প্রার্থী করার পর থেকেই শুরু হয় কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ-বিক্ষোভ। সোমবার সকাল থেকেই ফের সেই বিক্ষোভ শুরু হয়। রবিবার দফায় দফায় উত্তেজনা ছড়ায় সিঙ্গুরে। খোদ রবীন্দ্রনাথ ঘোষের বাড়িতে চলে বিক্ষোভ। সেই রেশ সোমবারও এসে পড়ে। সোমবার সকালেই চুঁচুড়ায় বিজেপির জেলা অফিসে এসে তালাবন্ধ করে দেন কর্মীরা। শুধু তাই নয়, প্রার্থী মানব না বিক্ষোভ দেখাতে থাকে বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা। শুধু তাই নয়, কর্মীদের হুঁশিয়ারি, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে না সরালে নির্দল প্রার্থী ঘোষণা করা হবে। জেলা নেতৃত্বকে হুঁশিয়ারি সিঙ্গুর বিজেপির একাংশের
এতোদিন যাঁরা শাসক দলের প্রার্থী অসন্তোষ নিয়ে কটাক্ষ করছিলেন এবার বিক্ষোভের আঁচ গিয়ে পড়েছে তাঁদের ঘরেই। তৃতীয় ও চতুর্থ দফার প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পরে জেলায় জেলায় বিজেপির প্রার্থী তালিকা নিয়ে বিক্ষোভ শুরু হয়ে গিয়েছে। সোমবার তার আঁচ এসে পড়েছে হেস্টিংসে। বিজেপির নির্বাচনী কার্যালয়ে। হওড়ার উদয়বারায়ণ পুর, পাঁচলা, উলুবেড়িয়ার বিজেপি কর্মী সমর্থকরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেছেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমসিম খাচ্ছেন তৃণমূল কংগ্রেস নেতা কর্মীরা।
সকালে কপ্টার বিভ্রাটে ঝাড়গ্রামের সভায় যেতে পারেননি৷ ভার্চুয়াল বক্তৃতার মাধ্যমেই কাজ সারতে হয়েছে৷ সেখান থেকে বাঁকুড়ার রানিবাঁধের সভা করে উড়ে গিয়েছিলেন অসমে৷ কিন্তু সোমবার রাতেই ফের গুয়াহাটি থেকে কলকাতায় ফিরে রাজ্য বিজেপি-র কোর কমিটির বৈঠকে যোগ দিলেন অমিত শাহ৷ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পাশাপাশি রাতেই কলকাতায় চলে আসেন বিজেপি সভাপতি জে পি নাড্ডাও৷ রাজারহাটের একটি হোটেলে ওই বৈঠকে ছিলেন বিজেপি সভাপতিও৷ নিউ টাউনের একটি পাঁচতাঁরা হোটেলে শুরু হয়েছে বৈঠক। সেখানে শাহের উপস্থিতিতে শুরু হয়েছে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক। রয়েছেন বঙ্গ বিজেপির নেতারা। কীভাবে কর্মীদের ক্ষোভ বিক্ষোভ সামাল দেওয়া যায় তা নিয়েই মূলত আলোচনা চলছে বলে জানা গিয়েছে। পরিস্থিতি বিচার করে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় সেটাই এখন দেখার।