ভবানী গিরি: এ যেন জলে কুমির আর ডাঙায় বাঘের মতই অবস্থা। ঝাড়গ্রাম জেলার সাঁকরাইল থানার অন্তর্গত দুর্গাপুর গ্রামের এক গৃহস্থের দুয়ারের সামনে থেকে উদ্ধার হয়েছে একটি হরিণ শাবকের মৃতদেহ যার সারা শরীরের বিভিন্ন অংশে খুবলে নেওয়ার ক্ষত রয়েছে। মনে করা হচ্ছে কুকুরের পালের তাড়ায় এবং কামড়ে আতঙ্ক ও যন্ত্রনায় মৃত্যু হয়েছে ওই হরিণ শাবকটির। দুর্গাপুর গ্রামের বাসিন্দারা জানিয়েছেন ক্ষত বিক্ষত ওই শাবকটির দেহ মিলেছে বুধবার সকালে দুর্গাপুর গ্রামের গৃহবধূ সুমিত্রা সিংয়ের বাড়ির সামনে থেকে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন গত কয়েকদিন ধরে স্থানীয় কয়েকটি গ্রামের আশেপাশে হরিণের দলকে দেখা গিয়েছে। এলাকাটি রগড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত। ওই পালেরই একটি হরিণ শাবক কুকড়াখুপি, দুর্গাপুর গ্রামে ছুটে বেড়িয়েছে গত দেড় দিন ধরে। , স্থানীয় বাসিন্দারা হরিণ শাবকটিকে ধরে বনদপ্তরের হাতে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করলেও সফল হয়নি। এরপর বুধবার তার ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার হয়।
গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, স্থানীয় জঙ্গলে হরিণের পাল নেই তবে বেশ কয়েক কিলোমিটার দূরে নয়াগ্রাম থানার অন্তর্গত তপবনের জঙ্গলে প্রচুর হরিণের পাল রয়েছে। ইদানিং কেউ বা কারা জঙ্গলে আগুন লাগিয়ে দিচ্ছে আর তাতেই ভীত সন্ত্রস্ত হরিণের পাল প্রাণভয়ে এদিক ওদিক ছুটে বেড়াচ্ছে। এমনই কোনও পাল থেকে দলছুট হয়ে হরিণ শাবকটি চলে আসে কুকড়াখুপি, দুর্গাপুর অঞ্চলে আর তারপরই গ্রামের নজরে কুকুরের পাল্লায় পড়ে যায় সেটি।
দুর্গাপুরের বাসিন্দারা জানিয়েছেন দিনের বেলায় লোকজন যতবারই শাবকটিকে ধরার চেষ্টা করেছে সেটি পালিয়েছে আশেপাশের জঙ্গলে। রাতে জঙ্গলে থাকলেও ভোরে হয়ত তেষ্টা পাওয়ায় জলাশয়ের খোঁজে লোকালয়ে ঢুকতেই কুকরের দলের পাল্লায় পড়ে যায়।
শাবকটির মারা গেছে খবর পেয়ে দলে দলে মানুষ আসে দেখতে। আশেপাশের গ্রাম থেকেও স্থানীয় বাসিন্দারা ছুটে আসেন মৃত শাবকটি দেখার জন্য। তাঁদের আফশোষ একদল মানুষের অবিবেচনার জন্যই জঙ্গলে আগুন ধরছে যার মাশুল দিচ্ছে জঙ্গলের অবোধ পশুরা। তাঁদের আরও আফশোষ, দুদিন ধরে হরিণ শাবকটি এলাকায় ছুটে বেড়াচ্ছে জানার পরও বনকর্মীরা তাকে উদ্ধার করার কোনও চেষ্টাই করেনি। খবর পেয়ে মৃতদেহটি উদ্ধার করে নিয়ে যান বনকর্মীরা।