নিউজ ডেস্ক: একই ঘটনার বারবার পুনরাবৃত্তি। এবারও আগুন আর এবারও সেই ঘটনস্থল শিলিগুড়ি বিধান মার্কেট। যদিও বড়সড় দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে ব্যবসায়ীরা কিন্তু ফের অগ্নিকান্ডের ঘটনা প্রমান করে দিয়েছে যে ইতিহাস থেকে কোনও শিক্ষাই নেননি ব্যবসায়ীরা বা নিতেও চাননি। এদিন বিধানমার্কেটের নেতাজী কেবিনে চায়ের দুধ ফোটানোর সময় স্টোভ ফেটে গিয়ে ঘটনাটি ঘটেছে বলেই জানা গেছে।
ঘটনার সাথে সাথেই স্থানীয় ব্যবসায়ীরা একজোট হয়ে আগুন নেভানোর কাজ প্রাথমিক ভাবে শুরু করে দিয়েছিলেন এবং খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে দমকলের দুটি ইঞ্জিন পৌঁছে যাওয়ায় বড়সড় ক্ষতির হাত থেকে রেহাই পাওয়া গেছে। নচেৎ কি হতে পারত তা ভেবেই আতঙ্কে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। দমকলের ওই দুটি ইঞ্জিন আধ ঘন্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছে বলেই বড় বাঁচা বেঁচে গিয়েছেন সংলগ্ন বেশ কয়েকটি দোকানের ব্যাবসায়ীরা।
স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন স্থান সঙ্কুলানের সীমা পেরিয়ে গিয়ে দোকানের ভীড়ে থিকথিকে জতুগৃহের পরিস্থিতি তৈরি হয়ে রয়েছে শিলিগুড়ি বিধান মার্কেটের পরিসর। ক্ষমতার বাইরে গিয়ে অবৈধ উপায়ে টিন লাগিয়েও দোকানের উপর তৈরী হয়ে যাচ্ছে আরেকটি দোকান। আর বিদ্যুৎ সংযোগের ক্ষেত্রেও কোনোও নিয়ম কানুনের বালাই নেই। তারের ওপরে তার ঝুলিয়ে এক জায়গা থেকে একাধিক সংযোগ নেওয়া হয়েছে যার কোনও বৈধতাই নেই।
যদিও কখনও এসজেডিএ আবার কখনও পুরনিগম মার্কেট পরিদর্শন করে যাচ্ছে। কিন্তু ওই সব সংস্থার আধিকারিকরা আদৌ সদিচ্ছা নিয়ে কাজ করছেন কী এই প্রশ্নটা উঠেছে কারন তাতেও রোখা যায়নি মার্কেটে অবৈধ নির্মাণ। পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব,শিলিগুড়ির বিধায়ক অশোক ভট্টাচার্যদেরকে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেই চলছে একের পর এক অবৈধ নির্মাণ।ব্যবসা বৃদ্ধির লোভে সেসব কথা কর্ণপাত করেননি কেউই। বিধানমার্কেট ব্যবসায়ী সমিতিরও দেখেও না দেখার মত রয়েছে যেন। শিলিগুড়ি শহরের মানুষের অভিযোগ ব্যবসায়ী সমিতি লাভের অঙ্ক দেখে অবৈধ নির্মাণে পরোক্ষভাবে মদত দিয়েই চলেছে। ফলে বেপরোয়া বেআইনি নির্মাণ চলেছে। এক্ষেত্রেও সেই প্রশ্ন উঠেছে যে কতটা নিরাপত্তা বজায় রেখে খোলা আগুনে চা তৈরির কাজ চলেছিল?
শিলিগুড়ি শহরের মানুষ এখনও ভুলে যাননি ২০১৮ সালের ৩ ডিসেম্বরের ঘটনা। ওইদিন ভোররাতের আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায় বিধান মার্কেটের পাঁচটি দোকান। মার্কেটের তুলাপট্টির ঘটনা এটি। দমকলের কয়েক ঘণ্টার চেষ্টায় নিয়ন্ত্রণে আসে আগুন। ব্যবসায়ীদের দাবি, প্রায় দেড় কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছিল তাদের।তুলাপট্টির বেশিরভাগ দোকান টিনের ও কাঠের। দোকানগুলোর উপর দিয়ে মাকড়শার জালের মতো বিদ্যুতের তার চলে গিয়েছে। পোস্ট থেকে বিভিন্ন দোকানে বিদ্যুত সংযোগের তার ঢুকেছে। তারের জটলা দেখে আঁতকে উঠেছিলেন দমকল কর্মীরা।শর্ট সার্কিট থেকেই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছিল সেসময়।
এরপর ২০১৯ সালের ১১ জুলাই ফের ভোররাতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কমপক্ষে সাতটি কসমেটিক্সের দোকান ভস্মীভূত হয়। আগুন লাগার খবর পাওয়ার পরে চারটি দমকলের ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে যায়। যদিও ঠকেও শেখেনি বিধান মার্কেট। একটি ঘটনার পর কিছুদিনের জন্য খুব সতর্কতা তারপর আবার যেই কি সেই। বিধান মার্কেট আছে সেই বিধান মার্কেটেই।