নিউজ ডেস্ক: শিলিগুড়ি কী ক্রমশ প্রশাসনের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে! খুন, ছিনতাই, এটিএম ভাঙার কান্ড তো ছিলই এবার তার সঙ্গে যুক্ত হল প্রকাশ্যে দাদাগিরি আর তার মাশুল দিলেন ভারতীয় ক্রিকেটার রিচা ঘোষের বাবা! কী বিষয়? না একদল যুবক বাড়ির সামনে মদের আসর বসাবে, খিস্তি খেউড় করবে কিন্তু কিছুই বলা যাবেনা! এ যেন মগের মুলুক! হ্যাঁ, এমনটাই ঘটেছে শিলিগুড়ি শহরের সুভাষপল্লীতে। বাড়ির সামনে বসে মদ্যপানের মজলিস বসানোর বিরুদ্ধে প্রতিবাদে করতে গিয়ে চূড়ান্ত ভাবে নিগৃহীত হয়েছেন ভারতীয় মহিলা ক্রিকেট দলের সদস্য রিচা ঘোষের বাবা মানবেন্দ্র ঘোষ। তাঁর জামার কলার ধরে হেঁচড়া হেঁচড়ির পাশাপাশি তাঁকে চড় থাপ্পড় মারা হয়েছে বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় শিলিগুড়ির সুভাষপল্লী এলাকা।
ঘটনা শনিবার রাতে যখন রিচার বাড়িতে একটি অনুষ্ঠান চলছিল। সেখানে কয়েকজন নিকট আত্মীয় ও বন্ধুবান্ধব উপস্থিত ছিলেন। অভিযোগ, রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ কয়েকজন মদ্যপ যুবক বাইক নিয়ে রিচার বাড়ির সামনে মদ্যপান করছিল। ওই সময়ে অনুষ্ঠানে আসা রিচার নিকট আত্মীয়দের উদ্দেশ্যে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে মদ্যপ যুবকেরা বলে অভিযোগ। ঘটনাটি নজরে আসায় রিচার বাবা মানবেন্দ্র ঘোষ এগিয়ে আসেন। তিনি জিজ্ঞাসা করেন এই ধরনের ঘটনার অর্থ কী আর কেনই বা একজন গৃহস্থের বাড়ির সামনে মদ খাওয়া হচ্ছে? অভিযোগ এরপরই তাঁকে হেনস্থা করে মদ্যপ যুবকের দল।অভিযোগ, সেই সময় মদ্যপ যুবকরা মানবেন্দ্রবাবুর ওপর চড়াও হয় এবং তাঁকে মারধর করে। ঘটনায় রিচার বাবার মুখে আঘাত লাগে। এরপরই স্থানীয়রা ছুটে এসে মানবেন্দ্রবাবুকে উদ্ধার করেন। অভিযোগ, ওই দুষ্কৃতীরা রিচার দিদির এক বান্ধবীর চারচাকা গাড়িতে ভাঙচুর চালায়। এমনকি, গাড়ির চাকা খুলে নিয়ে চম্পট দেয়।
ঘটনায় হতবাক ও ক্ষুব্ধ শিলিগুড়ির ক্রীড়াপ্রেমী মহলও। দেশের জার্সি ও টুপি পরে মহিলাদের টি টুয়েন্টি বিশ্বকাপেও খেলেছেন রিচা। ফাইনালেও ব্যাট হাতে নেমেছিলেন তিনি। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধেও টি টুয়েন্টি এবং একদিনের সিরিজে জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েছেন শিলিগুড়ির রিচা। তাঁকে ঘিরে যখন প্রত্যাশা বাড়ছে শহরজুড়ে। তখন তাঁর বাবার সঙ্গে এমন ঘটনায় ক্ষোভ বাড়ছে শিলিগুড়িতে।
জানা গেছে এর ওই মদ্যপ যুবকদের বিরুদ্ধে এর আগেও এই ধরনের ঘটনা ঘটানোর অভিযোগ রয়েছে। অবিলম্বে ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে গ্রেফতারের দাবি উঠেছে। পুলিশ এখনও পর্যন্ত তিন যুবককে আটক করেছে। অভিযোগ পাওয়ার পরেই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
ঘটনায় মাটি হয়ে যায় পারিবারিক অনন্দানুষ্ঠান। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে উপস্থিত অতিথি অভ্যাগতদের মধ্যে। রবিবারই বিষয়টি নিয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হন। তিনি বলেন, ‘পরিবারের জন্য চিন্তা হচ্ছে। পুলিশের উচিত পুরো ঘটনার তদন্ত করে দোষীদের গ্রেপ্তার করা।’ গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে দোষীদের চিহ্নিত করার কাজ চলছে।