নিজস্ব সংবাদদাতা: একদল অজ্ঞাত পরিচয় সশস্ত্র ব্যক্তির তান্ডবে রাতভর সন্ত্রস্ত হয়ে রইল পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পটাশপুর ২ ব্লকের আড়গোয়াল পঞ্চায়েত এলাকা। রাজনৈতিক এই দুষ্কৃতীদের তান্ডবে আতঙ্কিত স্থানীয় সিঁয়ারি ও ইছাবাড়ির মহিলারা প্রশ্ন তুলেছেন, আর কতদিন এই আতঙ্ক নিয়ে বাস করতে হবে তাঁদের। পুলিশের কাছে ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে কোনও কোনও মহিলার চোখে যেমন আতঙ্কের ছায়া ফুটে উঠতে দেখা গেছে তেমনই ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন অনেকেই। মহিলারা প্রশ্ন তুলেছেন দুটো দলের রাজনৈতিক লড়াইয়ে কেন সাধারন মানুষের নিরাপত্তার বিঘ্নিত হবে? সকালে ঘটনাস্থলে পুলিশ গেলে পুলিশের সামনে হাউমাউ করে কেঁদে ভেঙে পড়তে দেখা যায় অনেক মহিলাকে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার রাত ১০ টার পর থেকেই কার্যত এলাকার দখল নেয় ওই রাজনৈতিক দুষ্কৃতীদের দল।এলাকার জুড়ে ব্যাপক বোমাবাজি শুরু হয়। ভাঙচুর করা হয় বেশ কয়েকটি বাড়ি। মারধরে আহত হয়েছেন উভয়দলের ১০ জন। যারমধ্যে বিজেপির ৭ জন এবং তৃনমূলের ৩জন সমর্থক রয়েছেন। বিজেপির পক্ষে দাবি করা হয়েছে ঘটনার পেছনে রয়েছে তৃনমূলের দুস্কৃতিরাই। অন্যদিকে তৃনমূলের দাবি আদি বনাম নব্য বিজেপি সমর্থকদের এলাকা দখলের লড়াই এটা। যদিও মহিলাদের একটিই প্রশ্ন কোন দল জানার দরকার নেই, পুলিশ দুস্কৃতিদের গ্রেপ্তার করুক, কঠোর ব্যবস্থা নিক। কেউ কেউ এই অভিযোগও এনেছেন যে রাতভর দুষ্কৃতিদের তান্ডব চললেও পুলিশের দেখা মেলেনি।
পুলিশের একটি সূত্র অবশ্য জানিয়েছে, ঘটনার খবর পেয়ে রাতেই পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছিল। সাময়িকভাবে দুস্কৃতিরা পিছু হটে কিন্তু পুলিশ চলে আসতেই আবার গন্ডগোল করে। তাছাড়া দুটি জায়গাতে গন্ডগোল চলায় পুলিশের একটু সমস্যাও হয়েছে। পটাশপুর থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক দীপক চক্রবর্তী জানিয়েছেন, আপাতত এলাকা শান্তই রয়েছে। দুস্কৃতিদের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।
বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অনুপ চক্রবর্তীর জানিয়েছেন, ” এলাকায় জনসমর্থন হারিয়ে তৃণমূল নির্বাচনের প্রাক্কালে পরিকল্পিত ভাবে অশান্তি তৈরি করেছে। এলাকায় আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করতে বোমাবাজি করেছে। এই পরিবেশ কায়েম রাখলে ভোটের সময় সন্ত্রাস করতে সুবিধা হবে। রাতে ওদের তান্ডবের বিরোধিতা করতে গিয়ে ৭জন আহত হয়েছেন।”
অন্যদিকে জেলা তৃণমূলের কো-অর্ডিনেটর মামুদ হোসেন বলেন,’ বিজেপি-র আদি-নব্যের দ্বন্দ্বের জেরেই এই অশান্তি। ওরা নিজেদের মধ্যে মারামারি করার পাশাপাশি আমাদের কর্মী-সমর্থকদের বাড়িতেও হামলা চালিয়েছে। ওদের মারে আমাদের ৩ জন আহত হয়েছেন। সিঁয়ারি বাজারে আমাদের দলীয় কার্যালয়ও ভাঙচুর করেছে ওরা। ইছাবাড়িতে কয়েকজন তৃণমূল কর্মীর বাইকও ভাঙচুর করা হয়েছে।’
সাধারণ মানুষের অভিযোগ পুলিশ জানে কারা কারা এলাকায় সন্ত্রাস করে থাকে। পুলিশ আগে তাদের গ্রেপ্তার করুক। পুলিশ যদি দলমত নির্বিশেষে প্রকৃত দুস্কৃতিদের গ্রেপ্তার করে তাহলেই একমাত্র এই সন্ত্রসের আবহ থেকে মুক্তি পেতে পারে মানুষ।