অশ্লেষা চৌধুরী: ভোটের আগে যেন ফের এক চমক। এক টেবিলে কুণাল-শুভেন্দু-বাবুল। বারুইপুরের একটি হোটেলে একান্তে বৈঠক তিন নেতার। বেশ কিছুক্ষণ ধরে চলে বৈঠক। ঘটনা ঘিরে ব্যাপক শোরগোল রাজ্য রাজনীতিতে। তবে ব্যাপারটি নিছকই কাকতালীয় বলে দাবী তৃণমূলের পক্ষ থেকে।
অন্যদিকে বুজেপি নেতা বাবুল সুপ্রিয়রও দাবী কুনালের সঙ্গে সাক্ষাৎ নিছকই কাকতালীয়। তিনি বলেন, ‘জয়নগর থেকে ফেরার সময় হঠাৎ কুণালের সঙ্গে দেখা। একটি হোটেলে খাওয়ার সময় কুণালের সঙ্গে হঠাৎ দেখা। রাজনৈতিক নয়, সৌজন্যমূলক কথা হয়েছে।‘ একই সুর শোনা যায় শুভেন্দুর গলাতেই। বলেন, ‘চা খেতে গিয়ে হঠাৎ দেখা।’ কুলতুলি থেকে সভা সেরে ফিরছিলেন বাবুল-শুভেন্দু। ক্যানিংয়ে সভা সেরে ফিরছিলেন কুণাল ঘোষ।
এদিন দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিংয়ে রোড শো ও জনসভা করেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ, অপরদিকে কুলতলিতে শুভেন্দু-বাবুলের জনসভা ও কর্মসূচি ছিল। রথে জয়নগর থেকে কুলতলি ও এরপর সভা শেষে বারুইপুরে রাস্তার ধারে এক রেস্তোরাঁয় খেতে ঢোকেন বাবুলকে সঙ্গে নিয়ে। অপরদিকে সেখানেই ক্যানিং থেকে ফেরার পথে তৃণমূল নেতা কুনাল ঘোষও সেখানেই হাজির হন। সেখানেই সৌজন্য মূলক আলাপচারীতায় হয় তিন নেতার বলে দাবী উভয়পক্ষের।
কিন্তু প্রশ্ন উঠছে সময়ের মেলবন্ধন নিয়ে। সূত্রে জানা গিয়েছে, শুভেন্দু সভায় ঢোকার আগেই কুলতলিতে ভাষণ দিয়ে মঞ্চ ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন বিজেপি নেতা বাবুল সুপ্রিয়। কয়েক ঘণ্টা পরে তিনি আবার শুভেন্দুর সঙ্গে বারুইপুরের হোটেলে! যেখানে অনেক আগে তিনি বেরিয়ে গিয়েছিলেন সেখানে আবার কীভাবে উপস্থিত হলেন এবং ঘটনাচক্রে সেখানেই আবার উপস্থিত তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। আর এই সময়ের মেলবন্ধনই যেন জল্পনাকে কয়েকগুণ উসকে দিয়েছে।
একেই দরজায় কড়া নাড়ছে বিধানসভা নির্বাচন। তার ওপর দলবদলের একটা হাওয়া বইছে বং জুড়ে। শাসক শিবিরে একের পর এক নেতা মন্ত্রী বেসুরো বাজতে শুরু করেছেন। সেই সূত্রপাত অবশ্য শিশির পুত্রের হাত ধরেই হয়েছিল। তারপর ধীরে ধীরে লম্বা হতে থাকে সেই তালিকা। তাই এহেন এক পরিস্থিতিতে পদ্ম শিবিরের দুই নেতার সাথে শাসক দলের কুণালের সাক্ষাৎকে নিছক সৌজন্য মূলক সাক্ষাৎ বলে মানতে নারাজ রাজনৈতিক মহলের একাংশ। যদিও সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ সামাজিক মাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে খোলামেলা পোস্ট দিয়েছেন, যাতে স্পষ্ট লেখা রয়েছে, ‘আলাদা দলে থাকলেও এইসব ক্ষেত্রে সৌজন্য ছাড়া নিশ্চয়ই প্রকাশ্য ঝগড়া হতে পারে না। এর মধ্যে কোনও পরিকল্পিত বৈঠকের গল্প বা রাজনৈতিক তাৎপর্য নেই। তাঁরা বিজেপি। আমি তৃণমূল। গোপন বৈঠক করার থাকলে সে নিশ্চয় দলীয় সভা থেকে ফেরার সময় সর্বসমক্ষে প্রকাশ্য রেস্তোরায় সেটা করবে না!’ শুধু তাই নয়, এসব নিয়ে যারা ভাবছেন, তাদের নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে পড়ার পরামর্শও দেন তৃণমূল নেতা।