নিউজ ডেস্ক: নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও আজও রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় ট্রেনিং-এর সময় ভোট কর্মীদের জন্য বরাদ্দ হল না নির্ধারিত ১৭০ টাকার লাঞ্চ। ভোট কর্মীগণ প্রশ্ন তোলায় বিভিন্ন জায়গায় বাদানুবাদ হয়। উত্তরের বিভিন্ন জেলা থেকে এমনই অভিযোগ সামনে এসেছে।
শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী-শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের রাজ্য সম্পাদক কিংকর অধিকারী অভিযোগ করে বলেন, আমরা জেলায় আধিকারিকদের এই আচরণের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এই অস্বচ্ছতা কোনওভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। সেইসাথেই তিনি অবিলম্বে প্রতিটি ভোট কর্মীর অ্যাকাউন্টে বরাদ্দ অর্থ দেওয়ার দাবীও করেন।
সামনেই বিধানসভা নির্বাচন। আর সেজন্যই বিভিন্ন বুথ সামলানর কাজের জন্য ভোটকর্মীদের নিয়োগ করা হয় অন্যান্য বারের মতই। সেই ট্রেনিং সকাল ১১ টা থেকে ৫ টা পর্যন্ত চলবে। নির্দিষ্ট কোনও স্কুলে ট্রেনিংয়ের জন্য নিয়োগপত্র দেওয়া হয় ভোট কর্মীদের। সেখানে তাদের খাওয়া বাবদ বরাদ্দ করা হয় অর্থ। কিন্তু খাবারের প্যাকেট হাতে পেতেই চক্ষু চড়ক গাছ তাদের। নির্দিষ্ট বরাদ্দ অর্থের সিকিভাগ খরচ করে সেই টিফিন দেওয়া হয়েছে বলেই অভিযোগ উঠতে থাকে। শুরু হয় বিক্ষোভ।
কিংকর বাবুর কথায় জানা গিয়েছে, আলিপুরদুয়ার জেলার ম্যাক্ উইলিয়াম স্কুলে ইলেকশন ট্রেনিংয়ে ৫০/-টাকার টিফিন প্যাকেট নিয়ে ভোটকর্মীরা বিক্ষোভ দেখান। শেষমেষ উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ বিক্ষোভ সামাল দিতে এসে টিফিন প্যাকেটে কারচুপির কথা কার্যত মেনে নিয়ে (১৭০-৪০=) বকেয়া ১৩০টাকা ভোটকর্মীদের নিজ নিজ ব্যাঙ্ক অ্যকাউন্টে দিয়ে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন।
মালদা জেলাতেও একই চিত্র দেখা যায়। ১৭০ টাকা বরাদ্দ হলেও মাত্র ১৮ টাকার টিফিন দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। ভোট কর্মীদের একাংশ সেই নিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে থাকেন। জেলায় প্রশ্ন তোলায় আধিকারিকদের ভোট কর্মীদের অসম্মানজনক উক্তি করেন। ফলে সেখানেও বাদানুবাদ সৃষ্টি হয়। যদিও মালদার জেলা শাসক রাজর্ষি মিত্র জানিয়েছেন, গতকাল রাতে অর্ডার এসে পৌঁছেছে এত তাড়াতাড়ি সবকিছু অ্যারেঞ্জ করা সম্ভব হয়নি। পরের ফেজ থেকে সমস্ত কিছু ঠিকঠাক থাকবে।
কিংকর বাবু আরও জানান, কোচবিহার জেলাতেও মাত্র কুড়ি টাকার টিফিনবাক্স তুলে দেওয়া হয় ভোট কর্মীদের হাতে। ফলে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। একইভাবে মুর্শিদাবাদ সহ বিভিন্ন জেলায় বিক্ষোভের চিত্র উঠে আসছে। অনেক জেলায় চা বিস্কুট ছাড়া অন্য কিছু ছিল না।
এছাড়াও পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরা থানার বাসিন্দা যিনি কর্মসূত্রে ঝাড়গ্রাম জেলায় শিক্ষকতা করেন সেই দুরন্ত কুমার দাস জানিয়েছেন, ‘ঝাড়গ্রামে তিনদিন ধরে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। সেখানেও চা বিস্কুট ছাড়া আর কিছুই দেওয়া হয়নি। অথচ কমিশনের স্পষ্ট নির্দেশ লাঞ্চ দেওয়ার। এর জন্য নির্দিষ্ট টাকাও বরাদ্দ করেছেন কমিশন। তাহলে ওই টাকা যাচ্ছে কোথায়?”
এদিকে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে তৃণমূল-বিজেপি চাপানউতোর। মালদায় বিজেপির পক্ষ থেকে অভিযোগ করে বলা হয়, ‘এখানেও রয়েছে কাটমানির খেলা।’ যদিও তৃণমূলের দাবী সরকারি কর্মচারীদের সাথেই রয়েছে সরকার ও প্রশাসন। অন্য কিছু না পেয়ে এখন এই ধরনের অভিযোগ করছে বিরোধীরা।