নিজস্ব সংবাদদাতা, মেদিনীপুর: নারকেল ভেঙে ওড়ানো হচ্ছে মহাকাশ যান! গণেশ ঠাকুর নাকি প্রাচীন ভারতের প্ল্যাস্টিক সার্জারির নিদর্শন আর স্রেফ গো-মূত্র খেয়েই ব্রেষ্ট ক্যানসার ভালো হয়ে গেছিল একজন গৈরিক সাংসদের। আর গরুর দুধে সোনা তো এখন সর্বত্র আলোচিত। বিজ্ঞানের নাম করে অপবিজ্ঞান চর্চাকে প্রতিষ্ঠার মরিয়া এই চেষ্টার বিরুদ্ধেই বিজ্ঞান চর্চাকে আরও জোরালো করার উদ্দেশ্য নিয়েই রবিবার পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা কমিটির উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হলো তরুণ বিজ্ঞানকর্মী উদ্ধুদ্ধকরণ সভা।
মেদিনীপুর শহরের রবীন্দ্র নগরে অবস্থিত গোলোকপতি ভবনে অনুষ্ঠিত এই শিবিরের উদ্বোধন করেন সংগঠনের রাজ্য কমিটির সহ সভাপতি ড.তপন মিশ্র। কর্মসূচি শুরুর আগে সংগঠনের পতাকা উত্তোলন ও শহীদ বেদীতে মাল্যদান করা হয়। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনের জেলা সম্পাদক নন্দদুলাল ভট্টাচার্য। সভাপতিত্ব করেন জেলা সভাপতি ড. দিলীপ চক্রবর্তী। আলোচ্য বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন কার্তিক চক্রবর্তী, দেবব্রত দুয়ারী ,ড.বাবুলাল শাসমল, সৌমেন মন্ডল, নন্দদুলাল ভট্টাচার্য প্রমুখ।
বিভিন্ন পর্বের আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন ড.সুধাপদ বসু, ড. বিভাষ পাণ্ডা, সুষমা প্রধান,খগেন্দ্রনাথ মাইতি প্রমুখ। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে উঠে আসল খোদ রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে অপবিজ্ঞান চর্চা কিভাবে উৎসাহিত করা হচ্ছে এবং দেশকে মধ্যযুগীয় স্তরে ফেরানোর চেষ্টার কথা।
এদিন বিভিন্নআলোচকরা বলেছেন, এই সময়ের মধ্যে দাঁড়িয়ে এখন আমাদের দেশের তরুণ সমাজকেই এগিয়ে আসতে হবে এবং কুসংস্কারগ্রস্ত অপবিজ্ঞান মানসিকতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। অনুষ্ঠানের শেষ লগ্নে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন সংগঠনের কোষাধ্যক্ষ সন্টু ওঝা। এদিন যে যে শীর্ষকে আলোচনা হয় তা হলো, “বিজ্ঞান আন্দোলনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য”,” জনবিজ্ঞান আন্দোলনের নিরিখে কর্মসূচি”, “আমাদের সংগঠন”, “জনবিজ্ঞান আন্দোলনের প্রাসঙ্গিকতা ও তরুণ বিজ্ঞানকর্মীদের ভূমিকা’, “বর্তমান পরিপ্রেক্ষিত ও করণীয় কাজ” ইত্যাদি।
“এদিনের অনুষ্ঠানে জেলার বিভিন্ন প্রান্তের শতাধিক তরুণ তরুণী বিজ্ঞানকর্মী উপস্থিত ছিলেন যা আমাদের কাছে যথেষ্টই উৎসাহব্যঞ্জক। কারন একদিকে যেমন অপবিজ্ঞানকে বিজ্ঞান বলে চালিয়ে দেওয়ার মরিয়া প্রচেষ্টা চলছে তেমনই তরুণ সমাজের একটি বড় অংশ রুখে দাঁড়াচ্ছেন এই অপচেষ্টার বিরুদ্ধে। দেশজুড়ে বিজ্ঞান আন্দোলনের কর্মীরা সঙ্ঘবদ্ধ হচ্ছেন আর তার বড় একটা অংশই এই তরুণ সমাজ। ফলে হতাশার কোনও জায়গা নেই, কারন যুগে যুগে শেষ অবধি জয়ী হয় বিজ্ঞানই।” জানালেন বিজ্ঞান আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক বাবুলাল শাসমল।