নিজস্ব সংবাদদাতা: শৈশবের নিষ্পাপ বিশ্বাসের বলি হল সাড়ে পাঁচ কন্যা। পাশের বাড়ির কাকু ডেকেছিল বিস্কুট দেবে বলে আর তাতেই শিশুমন নেচে উঠেছিল। আনন্দে আত্মহারা কচি দুটো হাত বাড়িয়ে ছুটে গেছিল বিস্কুট নিতে। সেই সরলতার সুযোগে নির্জনে নিয়ে গিয়ে শিশুটিকে ধর্ষণের পর পুকরের পাঁকে পুঁতে দেওয়ার অভিযোগ উঠল পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পটাশপুর থানার অমরপুর গ্রামে। বর্বরোচিত এই পাশবিক ঘটনা জানাজানি হওয়ার পরই অভিযুক্ত যুবককে ধরে উত্তেজিত জনতা গনধোলাই শুরু করে। খবর পেয়ে পুলিশ এসে ক্ষুব্ধ জনতার হাত থেকে উদ্ধার করে গ্রেপ্তার করেছে যুবককে। আটক করা হয়েছে যুবকের বাবা এবং মাকেও।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে অভিযুক্ত ওই যুবকের নাম শুভেন্দু ঘটম। শনিবার বেলার দিকে প্রতিবেশী ওই শিশুকন্যাকে বিস্কুট খাওয়ানোর প্রলোভন দেখিয়ে অপেক্ষাকৃত ফাঁকা জায়গায় অবস্থিত একটি পুকুরের পাড়ের দিকে নিয়ে যায় সে। এরপর সে ওই কন্যাকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। অভিযোগ আরও যে ধর্ষণের পর প্রমাণ লোপাটের জন্য শিশুকন্যার গলা টিপে সে হত্যা করে এবং পুকুরের নরম মাটিতে পুঁতে দেয় সে।
বেলা গড়িয়ে যাওয়ার পরও ওই শিশু কন্যা বাড়ি না ফিরলে, এলাকায় খোঁজ শুরু করে পরিবারের সদস্যরা। বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ করার পরেও তার সন্ধান না মেলায় উদ্বিগ্ন পরিবারের সদস্যরা আশেপাশের পুকুর গুলিতে জাল ফেলার কথাও ভাবছিলেন কিন্তু এরই মধ্যে কিছু গ্রামবাসী জানায় ওই শিশুকন্যাকে অভিযুক্ত যুবক ফাঁকা জায়গার দিকে নিয়ে যেতে দেখা গিয়েছিল। তারপরে ওই এলাকায় খোঁজাখুঁজি করতে পুকুরের পাশে শিশুকন্যার মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখেন পরিবারের সদস্যরা। দেহটি ঠিকঠাক পুঁতে উঠতে পারেনি ত্রস্ত যুবক। পাছে কেউ দেখে ফেলে তাই কোনও রকমে মাটি চাপা দিয়ে পালিয়েছিল সে।
এরপরই ক্ষুব্ধ জনতা শুভেন্দুকে ধরে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। জনতার দাবি, মানুষের চাপের মুখে যুবক তার কুকর্মের কথা স্বীকার করে নেয়।
এরপরই শুভেন্দুকে ধরে স্থানীয় জনতা ব্যাপক মারধর শুরু করে। ইতোমধ্যেই খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় পটাশপুর থানার পুলিশ।
ক্ষুব্ধ জনতা পুলিশকে ঘিরে দফায় দফায় বিক্ষোভ দেখায় শুরু করে। জনতার দাবি পুলিশ কিছুই করতে পারবেনা। পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার অল্পদিনের মধ্যেই ছাড়া পেয়ে যায় দুস্কৃতিরা।পুলিশ গ্রামবাসীদের বুঝিয়ে অভিযুক্ত যুবক শুভেন্দু ঘটম, তার বাবা কমল ঘটম ও মা কৃষ্ণ ঘটমকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।
শিশু কন্যার মা দাবি করেছেন, ‘ধর্ষণের পর গলা টিপে হত্যা করা হয়েছে আমার এক রত্তি মেয়েকে। আমি অভিযুক্ত ও তাঁর বাবা মার ফাঁসি চাই।” পটাশপুর থানার তদন্তকারি আধিকারিক জানিয়েছেন, ‘আমরা যুবককে আটক করেছি। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট, জিজ্ঞাসাবাদ ইত্যাদি তথ্যের ভিত্তিতে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যদি যুবকের অপরাধ প্রমান হয় তবে তাঁকে আইনি শাস্তি দিতে পুলিশ চেষ্টার কোনও ত্রুটিই রাখবেনা।”