অশ্লেষা চৌধুরী: বুধবার রাতে বাগবাজার অগ্নিকাণ্ডে সর্বস্বান্ত হয়ে যাওয়া পরিবারগুলির দায়িত্ব নেবে রাজ্য সরকার। নিঃস্ব, অসহায় মানুষদের অন্ন, বস্ত্র ও বাসস্থান জোগানোর উদ্যোগ নেবে সরকার এমনই ঘোষণা করলেন রাজ্যের মূখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী। বৃহস্পতিবার বাগবাজারে গিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে ৭০০ মানুষের অন্ন, বস্ত্র ও বাসস্থানের দায়িত্ব নিলেন তিনি। পাশাপাশি তিনি ‘উদ্বোধন’-এর দায়িত্বপ্রাপ্ত মহারাজের সঙ্গেও দেখা করেন এদিন। ঘটনাস্থলের কাছেই ‘উদ্বোধন’ পত্রিকার কার্যালয় থাকায়, সেটিরও যথেষ্ট ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
এদিন বাগবাজারে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের সঙ্গে ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা, কলকাতার পুর প্রশাসক তথা রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, কলকাতা পুরবোর্ডের অন্যতম সদস্য অতীন ঘোষ, পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা সহ আরও অনেকে।মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আজই এই জায়গা পরিষ্কার করে দেওয়া হবে। এরপর যার যেরকম জায়গা ছিল সেই মত কলকাতা কর্পোরেশন আগের পরিস্থিতি তৈরি করে দেবে।” চিন্তার কোনও কারণ নেই বলে আশ্বাস দেন মুখ্যমন্ত্রী।
তিনি এদিন বলেন, আগুনে যে ১৫০ টি বাড়ী পুড়ে গিয়েছে সেই সবগুলি বাড়ী পুনরায় নির্মাণ করে দেবে রাজ্য সরকার। যতদিন না সেই বাড়ী তৈরি হচ্ছে, ততদিনের জন্য ক্ষতিগ্রস্থ প্রত্যেকের থাকা, খাওয়া ও পোশাকের ব্যবস্থা করা হবে বলে জানানো হয়েছে। কলকাতা কর্পোরেশনের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে তিনি নির্দেশ দেন গৃহহীনদের পাঁচ কেজি করে চাল, ডাল, আল ও বাচ্চাদের জন্য দুধ-বিস্কুট দিতে।
মন্ত্রী শশী পাঁজাকে নির্দেশ দেওয়া হয় ক্ষতিগ্রস্থ মহিলাদের প্রত্যেককে চারটি-পাঁচটি করে শাড়ি দিতে। এছাড়াও পুরুষদের জামা কাপড় দেওয়ার কথাও বলেন তিনি। প্রসঙ্গত, বাগবাজারে ব্রিজের কাছে তথা উইম্যানস কলেজের পাশের বস্তিতে বিধ্বংসী আগুনে গতকাল সব লন্ডভন্ড হয়ে যায়। অগ্নিকাণ্ডের পর একের পর রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডারের বিস্ফোরণের আওয়াজ শোনা যায়। আগুন দ্রুততার সাথে ছড়িয়ে পড়ছে। পরিস্থিতি এক্কেবারে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। অগ্নিকাণ্ডের জেরে বন্ধ হয়ে যায় যান চলাচল। গিরিশপার্ক থেকে সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ পর্যন্ত বন্ধ থাকে যান চলাচল।
ঘটনাস্থলে প্রথমে পৌঁছায় দমকলের পাঁচটি ইঞ্জিন। অগ্নিকাণ্ডের ভয়াবহতার পরিপ্রেক্ষিতে পরে দমকলের আরও ইঞ্জিন এসে পৌঁছায়। প্রায় ২৫ টি ইঞ্জিন কাজ করে বলে জানা গিয়েছে। পাশের খাল থেকে জল নিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করতে থাকেন তারা।আগুনের প্রভাব এতটাই বেশি ছিল যে বাসিন্দারা এক কণা জিনিসও ঘর থেকে বাইরে আনতে পারেননি। একদিকে ভয়াবহ আগুন, অন্যদিকে বাসিন্দারের আর্তনাদে এক করুণ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় এদিন।