ভেঙে পড়ল সেতু |
নিজস্ব সংবাদদাতা : পশ্চিমমেদিনীপুরের দাসপুরে এবার পুরোপুরি ভেঙে পড়ল কন্যাশ্রী সেতু। গত আগষ্ট মাসেই হুড়মুড়িয়ে হেলে পড়েছিল সেতুটি। সোমবার সেই হেলে থাকা সেতুটি পুরোপুরি ভেঙে পড়ল খালের গর্ভে ।সেতুর সংগে সেতু সংলগ্ন নদীর পাড়ে দুটি পাকাঘরও হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে। বাড়ী দুটির সামনের দেওয়াল ও তার ছাদ নদী গর্ভে আর কিছুটা অংশ সেই ভেঙে পড়া সেতুর উপর। এলাকায় মানুষের ক্ষোভ। সেতুটির বয়স মাত্র এক বছর এক মাস। ২২ লক্ষ টাকার হিসাব দেখানো খরচে কাঠের সেতুটি তৈরী হয়ে উদ্বোধন হয়েছিল ২০১৮ সালের ১৭ ই সেপ্টেম্বর।
সেতু ভেঙে খালে |
উদ্বোধনের মাত্র ১১ মাসের মধ্যে গত ২৪ শে আগষ্ট হুড়মুড়িয়ে হেলে পড়ে। এই নিয়ে এলাকায় প্রতিবাদ সহ বিক্ষোভ হয়। দাবী ওঠে অবিলম্বে এমন হেলে পড়া বিপদ জনক সেতুটি মেরামত করে যাতায়াতের উপযুক্ত করার। যতদিন সেই ব্যাবস্থা করা না হচ্ছে, সেখানে বিকল্প হিসাবে নৌকার ব্যাবস্থা করা হোক এমন দাবী বিডিও মেনে নিয়েছিলেন।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
দোষী ঠিকাদারের বিরুদ্ধে গত চারমাসে কোনো ব্যাবস্থা যেমন নেওয়া হয়নি, তেমনি পারাপারে বিকল্প কোনো ব্যাবস্থা বা নজর দারীও করা হয়নি। এমন বিপদ জনক হেলে পড়া সেতুটি দিয়ে মানুষ ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করতেন। আজও সেই অবস্থায় বেলা আড়াইটা নাগাদ সেতুটিতে কড়মড় করে দুলে ওঠে। তখন সেতুর উপর আট দশজন। একদিকের সেতুটি নীচের দিকে নামতে থাকে দোল দিতে দিতে। সেতুর উপর মানুষরা ছুটে অপরদিকে প্রান্তে চলে আসেন। সেই সময় ভেঙে পড়া সেতুর দিকের অংশে দুটি পাকাঘরও হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
দুটি বাড়ীর ছাদ সহ সামনের দেওয়াল পুরোটাই ভেঙে নদী গর্ভে এবং কিছু অংশ ঐ ভেঙে পড়া সেতুর উপর।
সোমবার দাসপুর থানার পলশপাই খালের উপর চকসুলতান মৌজার চকসুলতান বটতলা চকে এই সেতুটি গত বছর ৯ই সেপ্টেম্বর সেতুটির উদ্বোধন করেন তখনকার সেচ মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র। এখনো ঝাঁ চকচকে নীল সাদা রং সেতুটিতে।নামও সাধ করে দেওয়া হয়েছিল কন্যাশ্রী। স্থানীয়,এক যুবক শুভঙ্কর ব্যানার্জী বলেন, ” কি নিদারুন করুন ঘটনা কন্যাশ্রীদের মতো অবস্থা।”
ভেঙে পড়ল সেতু সংলগ্ন বাড়িও |
স্থানীয় মানুষরা বলেন, ” মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন ‘কাটমানি’ নেওয়া হয় বলে তাঁর কাছে খবর আছে। এটাই তার প্রকৃষ্ট উদাহরন। সেতু নির্মানে কাঠের আড়ালে ব্যবহার করা হয়েছিল বাঁশ। বাকি টাকা গেছে নেতাদের পকেটে। সেতু তৈরীর ২২ লক্ষ টাকা খরচ দেখানো হলেও কাটমানি বাবদ লুঠ হওয়ায় সেতুটির এমন করুন দশা হলো।”
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
স্থানীয়,একটি হাইস্কুল সহ প্রাথমিক এবং শিশুশিক্ষা কেন্দ্রের পড়ুয়ারা এই সেতুর উপরদিয়েই পারাপার হয় বাধ্য হয়ে অন্য উপায় না থাকায়। ঘটনাটি ভাগ্যিস দুপুরে হয়েছে,এই সময় কম মানুষ যাতায়াত করেন। অফিস টাইম বা স্কুল ছুটির পর এমন ঘটনা ঘটলে বিপদ হতো ভয়ংকর।
(adsbygoogle = window.adsbygoogle || []).push({});
এই সেতুটি প্রায় দশটি গ্রাম গৌরার মুখ্য সড়কের সঙ্গে যুক্ত করে। এই সেতুটির উপর দিয়ে ঘাটাল, পাঁশকুড়া কলেজের প্রচুর ছাত্রছাত্রী রোজের যাতায়াত করে। এছাড়াও অনেক মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা যায়। এই সেতুটি ভেঙে যাওয়ার ফলে সমস্ত মানুষকে প্রায় ১০ কিলোমিটার পথ ঘুরে যাতায়াত করতে হবে। কারন এই সেতুটি ছাড়া গৌরা ও জ্যোতঘনশ্যাম এর মাঝে কোনো সরকারি সেতু নেই।