অশ্লেষা চৌধুরী: কিছুদিন আগেই বিনা প্রশিক্ষণেই প্লেন উড়িয়ে সকলকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেলিন তিতলি, তবে সেটা ছিল টিভির পর্দায়। আজ বাস্তবেই সেই কামাল করে দেখালেন চারজন তিতলি, যদিও তারা তিতলির মতন আনারি নয়, তারা হলেন এয়ার ইন্ডিয়ার চারজন মহিলা পাইলট। আমেরিকার সান ফ্রান্সিসকো থেকে একটি বিমান সরাসরি বেঙ্গালুরুতে উড়িয়ে নিয়ে এলেন চার মহিলা পাইলট। উত্তর মেরু পেরিয়ে ১৬ হাজার কিলোমিটার পেরিয়ে সাফল্যের সঙ্গে বিমান উড়িয়ে নিয়ে এলেন চার জন মহিলা পাইলট। এই পথ পাড়ি দিতে ১৭ ঘণ্টা সময় লেগেছে তাঁদের। আর এটাই এয়ার ইন্ডিয়ার যে কোনও বিমানের ক্ষেত্রে দীর্ঘতম রুট। তাঁদের এই নজিবিহীন কৃতিত্বে গর্বিত সকলেই।
এয়ার ইন্ডিয়া জানিয়েছে, এটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক বিমানরুট। উত্তর মেরু অতিক্রম করা যে কোনও বিমান সংস্থার কাছে চ্যালেঞ্জিং। তাই সব সময় সেরা এবং অভিজ্ঞ বিমান চালকদের এই দায়িত্ব দিয়ে থাকে সবাই। এবার মহিলা ক্যাপ্টেনদের এই দায়িত্ব দিয়েছে এয়ার ইন্ডিয়া।
গোটা আকাশ পথ বিমানের নেতৃত্ব দেন এয়ার ইন্ডিয়ার ক্যাপ্টেন জোয়া আগারওয়াল। এছাড়াও তার সঙ্গে ছিলেন ক্যাপ্টেন থান্নাই পাপাগারি, আকাঙ্খা সোনাওয়ানে, শিবানি মানহাস। শনিবার ২৩৮ জন যাত্রী নিয়ে এয়ার ইন্ডিয়ার এআই ১৭৬ বিমানটি রওনা হয় বলে জানা গিয়েছে।
কেন্দ্রীয় অ্যাভিয়েশন মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরি ট্যুইট করে লিখেছেন, “মেয়েরা, তোমরা বহুদূর যাবে! দক্ষ, আত্মবিশ্বাসী ও পেশাদার মহিলারা রয়েছেন ককপিটে। সানফ্রান্সিসকো থেকে বেঙ্গালুরু আসছেন তাঁরা উত্তর মেরুর উপর দিয়ে। আমাদের নারীশক্তি ইতিহাস ছুঁতে চলেছে।”
উড়ানের আগে জোয়া বলেন, এই প্রথম শুধু মহিলারা উত্তর মেরুর উপর দিয়ে পৃথিবীর অন্যতম দীর্ঘ আকাশ পথ অতিক্রম করতে চলেছে, যা ইতিহাসে এই প্রথম। এটা যে কোনও পাইলটের কাছে স্বপ্ন সত্যি হওয়ার মতো। ক্যাপ্টেন জোয়া আরও বলেন, উত্তর মেরু অতিক্রম করার ক্ষেত্রে সবথেকে বেশি রোমাঞ্চকর বিষয় হল, ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে যায় কম্পাস।
উল্লেখ্য, এর আগে ২০১৩ সালে বোয়িং ৭৭৭ উড়িয়েছিলেন জোয়া। সেই সময় সবথেকে কনিষ্ঠ কম্যান্ডার ছিলেন তিনি। তিনি বলেন, বোয়িং ৭৭৭-এ আমি ছিলাম বিশ্বের সবথেকে কনিষ্ঠ কম্যান্ডার। প্রতিটি মহিলার আত্মবিশ্বাস থাকা উচিৎ। বোঝা উচিত কোনও কিছুই অসম্ভব নয়।
আর এবারে সান ফ্রান্সিসকো থেকে বেঙ্গালুরুর দীর্ঘতম পথ প্লেনটি উড়িয়ে আনএন তাঁরা। ঘুরে আসেন উত্তর মেরু ছুঁয়ে, আটলান্টিক সাগরের উপর দিয়ে। উড়ানের ইতিহাসে এই যাত্রাকে ঐতিহাসিক বলেই বর্ণনা করছেন সকলে।