নিজস্ব সংবাদদাতা: নন্দীগ্রামে শুভেন্দু অধিকারীর একটি অরাজনৈতিক তথা ধর্মীয় শোভাযাত্রাকে ঘিরে অশান্তি ছড়ালো মঙ্গলবার। অভিযোগ ওই শোভাযাত্রায় আসা মানুষজনদের পথ আটকে ব্যাপক মারধর করার অভিযোগ উঠল তৃনমূল সমর্থকদের বিরুদ্ধে। ঘটনায় যাত্রীবাহী বাস ভাঙচুর করা হয়েছে। কয়েকজন শিশু সহ প্রায় ১৫জন আহত হয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে সংগঠকদের তরফ থেকে। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে শাসকদল।
বিজেপির তরফে জানানো হয়েছে পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী এদিন নন্দীগ্রামের জানকীনাথ মন্দিরে পুজো দিতে এসেছিলেন নন্দীগ্রামের প্রাক্তন বিধায়ক। কর্মসূচি ছিল পুজো দেওয়ার আগে যোগ দেওয়ার পর প্রথমে নন্দীগ্রামে একটি ধর্মীয় শোভাযাত্রায় অংশ নেবেন। শুভেন্দু অধিকারী। গত কয়েক বছর ধরে এই শোভাযাত্রার আয়োজন করে আসছে স্থানীয় বজরং কমিটির। নন্দীগ্রাম ১ নম্বর ব্লকের টেঙ্গুয়া মোড় থেকে শুভেন্দু অধিকারীর সহ অন্যান্যরা শোভাযাত্রায় হাঁটা শুরু করেন বেলা সাড়ে এগারোটা নাগাদ। উপস্থিত ছিলেন বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলা সভাপতি নবারুন নায়েক সহ বহু বিজেপি কর্মী সমর্থক ও সাধারণ মানুষ। এই শোভাযাত্রাই এগিয়ে আসে নন্দীগ্রামের জানকীনাথ মন্দিরের দিকে।
ওই শোভাযাত্রাতেই অংশ নিতে সোনাচূড়ার দিক থেকে একটি বাস বোঝাই ভক্তের দল যার মধ্যে মহিলা, পুরুষ এবং শিশুরাও ছিলেন তাঁদের ওপর চড়াও হয় দুষ্কৃতিরা। ইট, লাঠি, বাঁশ দিয়ে মারার অভিযোগ ওঠে। ভাঙা হয় বাসের সামনের কাঁচ। ঘটনায় প্রায় ১৫ জনকে নন্দীগ্রাম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতারে ভর্তি করা হয়। পরে ওই ভাঙা গাড়ি টেঙ্গুয়া মোড়ে পৌঁছালে বজরং ভক্তরা এবং বিজেপি সমর্থকা বিক্ষোভ দেখায়। তারা শুরু করেন পথ অবরোধ।
এদিকে প্রায় তিন কিলোমিটার পদযাত্রার পরে বজরং কমিটির পুজোমণ্ডপে পৌঁছে বলেন, ‘এই অনুষ্ঠানে আসার সময় ভুতার মোড়ে গাড়ি ভেঙেছে। প্রায় ১৫ জন আহত হয়েছেন। বিষয়টা আমার উপর ছেড়ে দেন। লোকগুলো অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছে। এই কর্মসূচি রাজনৈতিক নয় এবং এইবার নতুনও নয়। বরাবর এখানে এই কর্মসূচি হয়। যে জেহাদিরা এই কান্ড করেছে তাদের গ্রেপ্তার করতে হবে। না করলে নন্দীগ্রামের মানুষকে নিয়ে আন্দোলন হবে। শুভেন্দু অধিকারী ১১ সালের আগেও মানুষকে নিয়ে আন্দোলন করেছিল, শুভেন্দু অধিকারী মানুষকে নিয়ে আন্দোলন করতে জানে। রাজনৈতিক আমার যে পথ, মত ছিল তা আমি পরিবর্তন করেছি। কিন্তু মানুষের ধর্মাচারনে কেন বাধা দেওয়া হবে?”
শুভেন্দু বলেন, ‘এটা অরাজনৈতিক সভা তবুও বলছি কয়েকদিন আগে দেখেছেন যাদের পেটে এখনো আমার ভাত আছে, তারা আমার ছবিতে কালি দিয়েছে। ওদের অপরাধ নেই, তোলাবাজ ভাইপোর অফিস থেকে বলা হয়েছে, এইগুলো করো। ছবি তুলে পাঠাও। আমি ওদের বলে দিই, ভোটের দিন আমি প্রমাণ করে দেব আমি নন্দীগ্রামের মানুষের কাছে আছি কিনা।
কয়েকজন লোক এখানে ধর্ম করার জন্য এসেছিল, তারা কংগ্রেস, বিজেপি, নাকি তৃণমূল জানি না। তারা ধর্ম করতে এসেছিল। তারা আক্রান্ত হয়েছে, এই আক্রান্ত আমরা মেনে নেব না। আমাদের দুর্বল ভেবে নেওয়ার কোনও কারণ নেই। আমি ৮ জানুয়ারি নন্দীগ্রাম একটি রাজনৈতিক কর্মসূচি ডেকেছি। যদিও এটা রাজনৈতিক মঞ্চ নয় তবু বলি, আমি চাই ওইদিন নন্দীগ্রামের ১৭টি অঞ্চল থেকে ১ লক্ষ লোক হোক।’
ঘোষনার পরেও আগামী ৭ জানুয়ারি নন্দীগ্রামে মুখ্যমন্ত্রীর তৃনমূলের সভায় আসছেননা প্রসঙ্গে হওয়ার কোনও নাম নাম না করেই শুভেন্দু বলেন, ‘অনেকে কর্মসূচি ঘোষণা করে পগারপার। বলছে পরে করব। পরে করলে আমি আবার সভা করব।’ অন্যদিকে তৃনমূলের তরফে দাবি করা হয়েছে, পুরোটাই বিজেপির নিজস্ব গোষ্ঠীদ্বন্দ। কোন নেতা শুভেন্দুর কতকাছে যাবে তাই নিয়ে মারামারি।