নিজস্ব সংবাদদাতা: শুভেন্দু বিরোধিতার ঢেউ এবার আছড়ে পড়ল নিজের জেলা পূর্ব মেদিনীপুরেই। বিরোধিতা দেখা গেল নিজের জন্মভূমি কাঁথি শহর, আন্দোলন ভূমি নন্দীগ্রাম এবং কর্মভূমি হলদিয়াতেই। দলত্যাগের আগেই বুধবার রাতে খোদ নন্দীগ্রামেই শুভেন্দু অধিকারীর ব্যানার খুলে তাঁর ছবিতে জুতো পেটা এমনকি লাথি মারতে দেখা গেল একদল যুবককে। শোনা গেল অকথ্য ভাষায় তাঁকে গালাগালি করতে। শোনা গেল বিশ্বাসঘাতক থেকে শুরু করে যাবতীয় কুৎসিত বিশেষন।
২০০৭ সালের পর যে নন্দীগ্রামে এক তরফা হিরো হয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী সেই নন্দীগ্রামের মাটিতেই একশ্রেণীর মানুষের কাছে ভিলেন হয়ে গেলেন তৃনমূল ছাড়ার সঙ্কেতেই। মূলতঃ তৃনমূলেরই অনুগামী এই যুবকের দল শুধু অধিকারীর ছবিতে জুতো মেরেই ক্ষান্ত হয়নি তাঁদের অনেককেই লাথিও মারতে দেখা গিয়েছে নন্দীগ্রামের প্রাক্তন বিধায়কের ছবিতে। ঘটনাটি ঘটেছে নন্দীগ্রামের সাতেঙ্গাবাড়ি এলাকায়।
বিক্ষোভকারীদের মধ্যে দেখা গিয়েছে নন্দীগ্রাম আন্দোলনের সময় নিহত সেক ইয়াসমিনের পরিবারের লোকেরা। তাঁরা জানিয়েছেন, ‘শুভেন্দু বেইমানি করেছেন নন্দীগ্রামের মানুষের সঙ্গে।’ অবশ্য শুধুই সাতেঙ্গাবাড়ি নয়, নন্দীগ্রামের অনেক জায়গাতেই শুভেন্দুর বিরুদ্ধে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে বলে দাবি করেছেন ব্লক সভাপতি স্বদেশ রঞ্জন দাস। দাস জানিয়েছেন, ‘নন্দীগ্রামের মানুষ ওনাকে নেতা বানিয়েছিল কিন্তু উনি তাঁর মর্যাদা দিলেন না।’
বৃহস্পতিবার শুভেন্দু অধিকারী বিরোধী ক্ষোভের বড়সড় বহিঃপ্রকাশ দেখা গেছে হলদিয়াতে। এখানকার বন্দর সংলগ্ন শ্রমিকদের সাংগঠনিক কার্যালয় শ্রমিকভবন থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে শুভেন্দু অধিকারীর ছবি। একটি সাইনবোর্ডে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে অধিকারীর যে ছবি আঁকা ছিল তার মুখমন্ডলে রঙ চাপিয়ে দেওয়া হয়। অধিকারীর ছবির ওপরে সেঁটে দেওয়া হয় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি।
শুভেন্দু বিরোধী ক্ষোভের প্রকাশ দেখা গেছে খোদ কাঁথিতে, অধিকারী বাড়িতে থেকে মাত্র কয়েকশ মিটার দুরত্বেই। দু’দিন আগেই এখানকার ২টি তৃনমূল অফিসের দখল নিয়েছিল শুভেন্দু অনুগামীরা। অফিসের রঙ বদলে গেরুয়া রঙ করে তার একটিতে লিখে দেওয়া হয়েছিল শুভেন্দু বাবুর কার্যালয়। বৃহস্পতিবার সেই অফিস দুটির
পুন:র্দখল নেয় তৃনমূল। যুব সভাপতি সুপ্রকাশ গিরির নেতৃত্বে ফের অফিসের দখল নেয় তৃনমূলের কর্মী সমর্থকরা।
সুপ্রকাশ বলেছেন, ‘রাতের অন্ধকারে কিছু দুষ্কৃতি অফিস দুটিতে লুটপাট চালিয়ে দখল নিয়েছিল। ওরা দিনের বেলায় এই কাজ করতে সাহস পেতনা। আমরা আমাদের অফিস পুনরায় চালু করলাম। ওদের কে বলছি সৎসাহস থাকলে দিনের বেলায় আসুন, দেখে যান কত মানুষ আপনাদের সাথে রয়েছে আর কত মমতা ব্যানার্জীর সঙ্গে।”