নিউজ ডেস্ক: নির্বাচনের মুখে ক্রমশ উত্তপ্ত হচ্ছে বাংলার রাজনৈতিক পরিবেশ। উত্তরকণ্যা অভিযানে বিজেপি কর্মী উলেন রায়ের অস্বাভাবিক মৃত্যুর রেশ কাটতে না কাটতেই এবার খুন হলেন বিজেপির এক বুথ সভাপতি। উত্তর ২৪পরগনার হালি শহরে রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘের (RSS) এক সক্রিয় কর্মী তথা স্থানীয় একটি বুথের দলীয় সভাপতিকে শনিবার পিটিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠল তৃনমূল আশ্রিত দুষ্কৃতিদের বিরুদ্ধে। ঘটনায় আরো কয়েকজন বিজেপি কর্মী আহত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। শিলিগুড়ির উলেন রায়ের মৃতদেহ এখনও হাসপাতালের মর্গে। দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্তের দাবিতে সোমবার হাইকোর্টের জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চে মামলা দায়ের করতে চলেছে মৃত বিজেপি কর্মীর পরিবার। সিবিআই তদন্তের দাবি সহ পুলিশের বিরুদ্ধে মামলার দাবি বিজেপির লিগাল সেলের তারই মধ্যে আরও এক মৃত্যু সরগরম করে তুলল বঙ্গীয় রাজনীতির মঞ্চকে। শনিবার বিজেপির গৃহ সম্পর্ক অভিযান চলাকালীন এই প্রাণঘাতী হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে। জানা গেছে হালিশহরের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের রবীন্দ্রপল্লীর বাসিন্দা ৪০ বছর সৈকত ভাওয়ালের ছবি সহ একটি ট্যুইট করে বিজেপির সর্বভারতীয় সহসভাপতি মুকুল রায় বলেছেন, “বাংলায় গণতন্ত্র মৃত।”
একটি সূত্র মারফৎ জানা গেছে শনিবার বিকেলে তিনি বিজেপি–র গৃহসম্পর্ক অভিযান কর্মসূচিতে এলাকার বিভিন্ন বাড়িতে যান। এই প্রচার কর্মসূচিতে তাঁর সঙ্গে বেশ কয়েকজন দলীয় কর্মীও ছিলেন। অভিযোগ, সেই সময়ে কয়েকজন দুষ্কৃতী তাঁদের ঘিরে ধরে। বিজেপি কর্মীদের বেশ কয়েকজন পালিয়ে গেলেও সেখানে আটকে যান সৈকত। তখনই বাঁশ, লাঠি ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয় তাকে।
রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তাতেই লুটিয়ে পড়েন সৈকত।এরপরই তাঁকে এলাকাবাসীরা উদ্ধার করে নিয়ে যান কল্যাণীর জেএনএম হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসকরা বিজেপি নেতা সৈকতকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় আরও বেশ কয়েকজন বিজেপি কর্মী আহত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। বিজেপি–র অভিযোগ, তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই এ ঘটনার পিছনে রয়েছে। স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, তৃণমূল আশ্রিত ওই দুষ্কৃতীরা এলাকারই বাসিন্দা।
খবর পেয়ে কল্যাণী জেএনএম হাসপাতালে পৌঁছন ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং। তিনি এ ঘটনার ব্যাপারে বলেন, সৈকত–সহ আরও কয়েকজন মিলে এদিন হালিশহরে গৃহসম্পর্কে অভিযান করছিলেন। সে সময়ই তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতি সুবোধ অধিকারী ও তার ভাইয়ের নেতৃত্বে প্রায় ১০০ জন দুষ্কৃতী তাদের ওপর হামলা চালায়। সৈকতকে পিটিয়ে খুন করা হয়েছে।
দলের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূল নেতা তথা নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিক জানিয়েছেন, অর্জুন সিংয়ের থেকে বড় ক্রিমিনাল আর কেউ নেই। এতে তৃণমূলের কেউ জড়িত নয়। এটা আসলে পারিবারিক গণ্ডগোল। সেই থেকেই মারধর এবং মৃত্যু। যে কোনও মৃত্যুই দুঃখজনক। যারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের অবিলম্বে গ্রেফতার করার দাবি জানান তিনি।
কয়েকটি ছবি টুইট করে এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিজেপি–র সর্বভারতীয় সহ সভাপতি মুকুল রায়। তিনি টুইটে শুধুমাত্র এই ছবিগুলির মাধ্যমে বোঝাতে চেয়েছেন তৃণমূল পশ্চিমবঙ্গে কী ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। এ রাজ্যে গণতন্ত্রের মৃত্যু হয়েছে। এদিন হাসপাতালে গিয়ে পরিস্থিতি দেখে এসেছেন মুকুল রায়ের ছেলে তথা বিজেপি নেতা ও বিধায়ক শুভ্রাংশু রায়ও।